রূপালী ব্যাংক থেকে চাকরিচ্যুত কর্মচারী ইউনিয়ন নেতাদের সঙ্গে কর্তৃপক্ষকে সমঝোতা করার আহ্বান জানিয়েছেন নৌপরিবহন মন্ত্রী শাজাহান খান। তাদের চাকরি পুনর্বহালসহ বিভিন্ন শাস্তি প্রত্যাহারের জন্য সরাসরি হুমকি দিয়েছেন তিনি।
গতকাল রোববার চাকরিচ্যুতদের সঙ্গে নিয়ে হঠাৎ তিনি ব্যাংকের চারতলায় সিবিএ কার্যালয়ে আসার পর এ ঘটনা ঘটে।
দুপুর আড়াইটার দিকে ব্যাংকে এসে নৌমন্ত্রী শাজাহান খান বের হন বিকেল ৪টার দিকে। নৌমন্ত্রী যখন ব্যাংকের চারতলায় মাইকে বক্তব্য দিচ্ছিলেন, তখন নিচতলায় ব্যাংকের প্রিন্সিপাল শাখায় লেনদেন চলছিল। সংশ্নিষ্ট অনেকেই জানান, লেনদেন চলার সময় এ ধরনের অনুষ্ঠানের আয়োজন ব্যাংক খাতে বিরল। এ সময় ব্যাংকের এমডি তার কার্যালয়ে ছিলেন না। অন্যদের মধ্যে কিশোরগঞ্জ-২ আসনের সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট মো. সোহরাব উদ্দিন গতকালের বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন।
আলোচনায় শাজাহান খান বলেন, \’গোড়ায় হাত দিলে অনেকেরই অনেক কিছু বের হয়ে যাবে। প্রধান বিচারপতির ঘটনা সবার জানা আছে। এ প্রতিষ্ঠানেরও অনেক কিছু বের হবে। সিবিএ নেতাদের সঙ্গে যে সমস্যা হয়েছে, তার সম্মানজনক সমাধান করুন।\’ তিনি বলেন, \’প্রতিষ্ঠানের শীর্ষ পর্যায়ে যারা আছেন, তাদের অনেক কিছু বেরিয়ে পড়ূক, তা কাগ্ধিক্ষত নয়। সে ক্ষেত্রে কী করতে হবে, সেটা বলুন। এ বিষয়ে এত দিন কথা বলি নাই। ম্যানেজমেন্টের আচরণ পর্যবেক্ষণ করেছি।\’
গত বছরের ৫ ডিসেম্বর রূপালী ব্যাংকের স্থানীয় কার্যালয়ের মহাব্যবস্থাপক মো. নূরুজ্জামানসহ কয়েকজন কর্মকর্তাকে মারধর ও অসদাচরণের দায়ে গত ১৯ জুলাই তৎকালীন সিবিএ সভাপতি খন্দকার মোস্তাক আহাম্মেদ, সাধারণ সম্পাদক মো. কাবিল হোসেন কাজী ও কেয়ারটেকার মো. আরমান মোল্লাকে স্থায়ীভাবে বরখাস্ত করা হয়। বাকি পাঁচজনের বিরুদ্ধে বিভিন্ন ধরনের শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়। এর আগে গত বছরের ২৩ ডিসেম্বর তাদের সাময়িক বরখাস্ত করে কর্তৃপক্ষ। বিস্তারিত তদন্ত শেষে শাস্তি দেওয়া হয়।
এর আগে বরখাস্ত হওয়া নেতারা কোনো অনুমোদন ছাড়াই গত ২৩ আগস্ট রূপালী ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ের সামনে শোক দিবসের আলোচনা সভার আয়োজন করেন। এ উপলক্ষে ছাপানো পোস্টারে ব্যাংকের চেয়ারম্যান ও এমডির নাম ব্যবহার করা হয়। তখন ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ সতর্কতামূলক একটি সার্কুলার জারি করে। ওই অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে নাম ছিল শাজাহান খানের। অতিথি হিসেবে আরও অনেকের নাম থাকলেও তাদের কেউ ওই অনুষ্ঠানে যাননি।
গতকালের সভায় শাজাহান খান বলেন, শ্রমিক নেতাদের বাদ দিয়ে প্রশাসন এই প্রতিষ্ঠানের নিয়মশৃঙ্খলা বাস্তবায়ন করতে চাইলেই যে তা হয়ে যাবে, তেমনটি না। মোস্তাকসহ যাদের চাকরিচ্যুত করা হয়েছে, তারা জানে এই প্রতিষ্ঠান তাদের। এটা দেশের মানুষের প্রতিষ্ঠান। দেশের ট্রেড ইউনিয়ন নেতাদের ভূমিকার প্রশংসা করে শাজাহান খান বলেন, ২০১৩ সালে জ্বালাও-পোড়াওয়ের সময় কোনো শ্রমিক নেতা কোনো প্রতিষ্ঠানে ভাংচুর করেনি। তা হলে তো তাদের প্রশংসা করতেই হয়।
অনুষ্ঠান শেষে সিবিএর সাবেক সভাপতি মো. কাবিল হোসেন কাজী বলেন, \’এটা আনুষ্ঠানিক কোনো বৈঠক ছিল না। হঠাৎ করে তিনি (শাজাহান খান) এসেছেন। তবে তার আসার খবরে ব্যাংকের এমডি বের হয়ে যাওয়ায় তিনি অনেক রাগ করেছেন।\’
বাংলাদেশ সময় : ১৬১৭ ঘণ্টা, ১৯ অক্টোবর, ২০১৭,
লেটেস্টবিডিনিউজ.কম/এ