দেশে মহামারি করোনার সংক্রমণ বৃদ্ধি পাওয়ায় এবং তা নিয়ন্ত্রণে আনতে সরকারঘোষিত ‘সর্বাত্মক লকডাউন’ আরও এক সপ্তাহ বাড়িয়ে আগামী ২৮ এপ্রিল পর্যন্ত করা হয়েছে। সে জন্য এ সময়ে ব্যাংকে লেনদেন চলবে সকাল ১০টা থেকে বেলা ১টা পর্যন্ত। বাংলাদেশ ব্যাংক গতকাল মঙ্গলবার নতুন করে এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে। সরকারের লকডাউনের কারণে বর্তমানেও ব্যাংকে লেনদেন হচ্ছে ১০টা থেকে ১টা পর্যন্ত। লেনদেনের এ সময়সীমা আরও এক সপ্তাহ একই থাকবে। নতুন করে নির্দেশনা দিয়ে সেটিই জানিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। কারণ, এর আগে কেন্দ্রীয় ব্যাংক ১৪ থেকে ২১ এপ্রিল পর্যন্ত লেনদেনের সময় ১০টা থেকে বেলা ১টা পর্যন্ত নির্ধারণ করেছিল।
রাজধানীর ব্যাংক শাখাগুলোয় খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ব্যাংকে এখন খুব বেশি গ্রাহকের ভিড় নেই। সব ব্যাংকই অনলাইন ও অ্যাপভিত্তিক লেনদেন সেবা চালু করেছে। এ ছাড়া মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমেও লেনদেন করা যাচ্ছে।
সচল হলো ইএফটি সেবা
এদিকে প্রায় এক সপ্তাহ পর সচল হয়েছে অনলাইনে এক ব্যাংক থেকে অন্য ব্যাংকে অর্থ স্থানান্তর বা ইলেকট্রিক ফান্ড ট্রান্সফার (ইএফটি) ব্যবস্থা। গত সোমবার রাত থেকে লেনদেনের এ ব্যবস্থাটি সচল হয়। কেন্দ্রীয় ব্যাংক এক দিনে দুই দফায় এই লেনদেন আবেদন নিষ্পত্তি করে থাকে। ফলে, নির্ধারিত সময়ের মধ্যে কেউ লেনদেন করলে দিনে দিনেই তা নিষ্পত্তি হয়।
বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র সিরাজুল ইসলাম গতকাল বলেন, সোমবার রাত থেকে ইএফটি ব্যবস্থা পুরোপুরি কাজ করছে। ফলে, গ্রাহকেরা আগের মতোই অন্য ব্যাংকে অর্থ স্থানান্তর করতে পারছেন।
জানা যায়, বিটিসিএলের অপটিক্যাল ফাইবার লাইনে সমস্যা হওয়ায় গত সপ্তাহে বন্ধ হয়ে যায় স্বয়ংক্রিয় চেক নিষ্পত্তি ও ইএফটি। পরে চেক নিষ্পত্তি চালু হলেও ইএফটি সেবা বন্ধ ছিল। এ কারণে গ্রাহকেরা চরম ভোগান্তিতে পড়েন। বিশেষ করে সর্বাত্মক লকডাউন চলায় গ্রাহকেরা এই সেবার ওপর নির্ভরশীল ছিলেন। এখন চালু হওয়ায় অর্থ স্থানান্তরে চাপ বেড়ে গেছে।
এক সপ্তাহ ইএফটি বন্ধ থাকায় অনেক গ্রাহকের অনলাইনে এক ব্যাংক থেকে অন্য ব্যাংকে অর্থ স্থানান্তরের আদেশ আটকে যায়। অথচ ব্যাংক হিসাব থেকে ঠিকই টাকা কেটে রাখা হয়। কিন্তু সেই টাকা প্রাপকের কাছে পৌঁছায়নি।
এ বিষয়ে নাম প্রকাশ না করার শর্তে বেসরকারি এক ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এ প্রতিবেদককে নিজের অভিজ্ঞতা থেকে বলেন, যাঁরা এক সপ্তাহে ইএফটিতে লেনদেনের চেষ্টা করেছেন, তাঁরা একরকম ‘নো ম্যানস ল্যান্ডে’ পড়ে গেছেন। এ সময়ে ডিজিটাল সেবায় ভোগান্তি হওয়াটা খুবই বিব্রতকর।