রমজানের আগেই দেশের বাজারে ভোজ্য তেলের দাম বাড়িয়েছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। কারণ দেখিয়েছে আন্তর্জাতিক বাজারে ভোজ্য তেলের দাম বৃদ্ধির। এতে করে ভোক্তা পর্যায়ে লিটার প্রতি খোলা সয়াবিন তেলের দাম দুই টাকা এবং বোতলজাত তেলে চার টাকা বেড়েছে।
মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, গতকাল সোমবার বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অত্যাবশ্যকীয় পণ্য বিপণন ও পরিবেশক বিষয়ে জাতীয় কমিটির সভায় তেলের দাম পুনর্নির্ধারণের সিদ্ধান্ত হয়।
সিদ্ধান্ত অনুযায়ী মিলগেটে প্রতি লিটার খোলা সয়াবিন তেলের দাম নির্ধারণ করা হয়েছে ১১৩ টাকা আর খুচরা বাজারে তা বিক্রি হবে ১১৭ টাকা দরে। আগে এই তেলের দাম মিলগেটে ১০৭ টাকা এবং খুচরায় ১১৫ টাকা নির্ধারণ করা ছিল। দাম পুনর্নির্ধারণে এক লিটার সয়াবিন তেলের বোতলের দাম মিলগেটে ১২৭ টাকা, ডিলার পর্যায়ে ১৩১ টাকা এবং খুচরায় ১৩৯ টাকা ঠিক করা হয়েছে। আর পাঁচ লিটারের বোতল মিলগেটে ৬২০ টাকা, ডিলার পর্যায়ে ৬৪০ টাকা এবং খুচরা পর্যায়ে ৬৬০ টাকা নির্ধারণ করেছে সরকার। এ ছাড়া প্রতি লিটার খোলা পাম তেলের দাম নির্ধারণ করা হয়েছে মিলগেটে ১০৪ টাকা, ডিলার পর্যায়ে ১০৬ টাকা এবং খুচরা পর্যায়ে ১০৯ টাকা।
তবে বাজারে নতুন করে দাম বেঁধে দেওয়ার পরও লিটারে দুই থেকে তিন টাকা বেশিতে বিক্রি হচ্ছে। এর আগে গত ১৭ ফেব্রুয়ারি বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অত্যাবশ্যকীয় পণ্য বিপণন ও পরিবেশক বিষয়ক জাতীয় কমিটির সভায় প্রতি লিটার বোতলজাত সয়াবিন তেলের দাম মিলগেটে ১২৩ টাকা, পরিবেশক পর্যায়ে ১২৭ টাকা এবং খুচরা পর্যায়ে ১৩৫ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছিল। পাঁচ লিটার বোতলজাত সয়াবিন তেলের দাম মিলগেটে ৫৮৫ টাকা, পরিবেশক পর্যায়ে ৬০০ টাকা এবং খুচরা পর্যায়ে ৬২৫ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছিল।
দেশে যে তেল ব্যবহার করা হয় তার ৭০ শতাংশই পাম সুপার। আগে এর প্রতি লিটারের দাম ছিল মিলগেটে (খোলা) ৯৫ টাকা, পরিবেশক পর্যায়ে ৯৮ টাকা এবং খুচরা বাজারে ১০৪ টাকা। মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে জানানো হয়, গত জুলাই মাস থেকে বিশ্ববাজারে অপরিশোধিত সয়াবিন তেল ও অপরিশোধিত পাম তেলের দাম বাড়ছে।
বর্তমানে আন্তর্জাতিক বাজারে প্রতি টন অপরিশোধিত সয়াবিন তেলের দাম (এফওবি) এক হাজার ২৭৫ ডলার এবং পাম তেলের দাম (এফওবি) এক হাজার ৩৭ ডলার। পাশাপাশি পরিবহন খরচ ৮০ থেকে ৮৫ শতাংশ এবং বোতলের কাঁচামাল রেজিনের দাম ৫০ থেকে ৬০ শতাংশ বেড়েছে। ভোজ্য তেলের দাম বাড়ানোর ক্ষেত্রে এসব বিষয়ও বিবেচনায় আনা হয়েছে বলে মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।
এর আগে গত ১৭ ফেব্রুয়ারি ব্যবসায়ীদের সঙ্গে বৈঠক করে মিল, পাইকারি ও খুচরা তিন পর্যায়ে ভোজ্য তেলের সর্বোচ্চ দাম বেঁধে দেয় বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। তখন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল প্রতি ১৫ দিন পর পর বাজার পর্যবেক্ষণের ভিত্তিতে এই দাম পুনর্মূল্যায়ন করা হবে। নির্ধারিত পর্যবেক্ষণ বৈঠকটি চলতি মাসের শুরুতে অনুষ্ঠিত হয়। ওই সময় আগের বেঁধে দেওয়া দামের সঙ্গে লিটারে আরো ৫ টাকা বাড়ানোর প্রস্তাব দিয়েছিলেন মিল মালিকরা। এ বিষয়ে বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশনের বৈঠকে তখন কোনো সিদ্ধান্ত দেওয়া হয়নি।