গেল এক মাসে আলুর দাম বেড়ে দ্বিগুণ আলু এখন আকাশছোঁয়া। আলুকে হাত ছোঁয়ানো দায় হয়ে উঠেছে নিম্ন আয়ের মানুষের। সপ্তাহ দুয়েক আগেও খুচরা বাজারে প্রতি কেজি আলু বিক্রি হয়েছে ৩০ থেকে ৩৫ টাকায়। সেই আলুর দাম অতীতের সব রেকর্ড ভেঙে হু-হু করে বেড়ে ৫০ টাকা ছাড়িয়েছে। মাত্র এক মাসের ব্যবধানে আলুর দাম দুই গুণ বেশি হওয়ায় ক্রেতা সাধারণ ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।
এ প্রসঙ্গে আলু ব্যবসায়ীরা করোনাভাইরাসের মহামারীর ও বন্যার মধ্যে ত্রাণ বিতরণে আলুর ব্যাপক ব্যবহার, জমিতে আলুর উৎপাদন কম হওয়া, চলমান বন্যায় নতুন আলুক্ষেত ক্ষতিগ্রস্ত হওয়াকে দূষছেন। তাছাড়া অন্যান্য সবজির দামের সঙ্গেও আলুর দাম জড়িত আছে। অন্যদিকে ভোক্তারা বলেন, সবজির দাম অস্বাভাবিক বেড়ে যাওয়ার কারণে আলুর ওপর চাহিদার চাপ বেড়েছে। তাছাড়া বাজারে মনিটরিং না থাকায় ব্যবসায়ীরা সিন্ডিকেটসহ নানা অজুহাতে আলুর দাম বাড়িয়েছে।
কারওয়ান বাজারের আড়তদাররা জানান, উৎপাদন মৌসুমের শেষদিকে নরসিংদী, মুন্সীগঞ্জ, কিশোরগঞ্জ, ঠাকুরগাঁওসহ রংপুরের বিভিন্ন আড়তে ব্যবসায়ীরা আলু মজুত করেন। ব্যাপারীরা রবি বা শীত মৌসুম শেষ হয়ে গেলে কোল্ডস্টোরেজ থেকে সারাদেশের পাইকারি বাজারের চাহিদা অনুযায়ী আলু সরবরাহ করেন। গত বছর যে পরিমাণ আলুর মজুত হয়েছিল, এবার চাহিদা তার চেয়ে বেড়ে গেছে। উত্তরবঙ্গের বন্যার কারণেও এবার আলুর ক্ষেত্রে নানা জটিলতা তৈরি হয়েছে, যে কারণে লাগামহীন হয়ে পড়েছে পণ্যটির দাম। ক্রেতারা বলেন, বাজারে একটি পণ্যের দাম বেড়ে গেলে অন্য পণ্যটির দাম বাড়াতে মরিয়া হয়ে ওঠেন ব্যবসায়ীরা।
গতকাল রাজধানীর কাঁচা বাজারগুলোতে বিক্রমপুরের আলু খুচরায় বিক্রি হচ্ছে ৫০ টাকা কেজি আর রংপুর ও রাজশাহী অঞ্চলের আলু বিক্রি হচ্ছে ৫২ থেকে ৫৪ টাকা কেজি। ছোট আলু বিক্রি হচ্ছে ৬০ টাকা কেজি। অন্যদিকে কারওয়ান বাজারের পাইকারি আড়তে রাজশাহীর প্রতি কেজি আলু বিক্রি হচ্ছে ৫৫ টাকা দরে।
জানা যায়, দেশে প্রতি বছর আলুর চাহিদা ৮০ লাখ টন। গত বছর দেশে আলু উৎপাদিত হয়েছে এক কোটি ২৩ লাখ টন। দেশের ৩৮০টি কোল্ড স্টোরেজে আলু মজুত থাকার কথা অন্তত ১৫ লাখ টন। তারপরও আলুর দাম বাড়ায় ক্রেতাদের মধ্যে সৃষ্টি হয়েছে মিশ্র-প্রতিক্রিয়া।