করোনা পরিস্থিতিতে দেশে এসে আটকেপড়া ৩০ হাজার সৌদি প্রবাসীর কর্মস্থলে প্রত্যাবর্তন এবং ভিসার মেয়াদ ফুরিয়ে যাওয়া নিয়ে যে অনিশ্চয়তা বা জটিলতা সৃষ্টি হয়েছিল অবশেষে তা অনেকটাই নিরসনের পথে। সৌদি আরব কর্তৃপক্ষ বাংলাদেশি প্রবাসীদের ভিসার মেয়াদ আরও ২৪ দিন বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. আব্দুল মোমেন গতকাল বুধবার সন্ধ্যায় এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। ইতিমধ্যে সীমিত আকারে প্রবাসীকর্মীরা সৌদি আরবে ফিরতে শুরু করেছেন। গত মঙ্গলবার সৌদি এয়ারলাইন্সের নিয়মিত ফ্লাইটে ২৫২জন প্রবাসী সৌদি আরব ফিরে গেছেন। আজ বৃহস্পতিবারও সৌদি এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইট প্রবাসীদের নিয়ে সৌদি আরব যাওয়ার কথা রয়েছে।
গতকাল বুধবার পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. একে আবদুল মোমেনের বরাত দিয়ে বিষয়টি নিশ্চিত করেন সৌদি আরবে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ জাভেদ পাটোয়ারি। তিনি বলেন সৌদি কর্তৃপক্ষ বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের বিশেষ ফ্লাইট পরিচালনারও অনুমতি দিয়েছে। পাশাপাশি সৌদিতে কর্মরত যেসব বাংলাদেশি ছুটিতে দেশে এসে বৈশ্বিক মহামারীর কারণে আটকে পড়েছেন এবং এখন কর্মস্থলে ফিরে যেতে চান, তাদের ভিসার মেয়াদ আরও ২৪ দিন বাড়ানো হয়েছে। এছাড়া আগামী রবিবার থেকে যাদের ভিসার মেয়াদ ইতোমধ্যেই ফুরিয়ে গেছে, তারা নতুন ভিসার জন্য আবেদন করতে পারবেন। একাধিক কূটনৈতিক সূত্র থেকে জানা গেছে ফ্লাইট নিয়ে জটিলতা নিরসন এবং ভিসার মেয়াদ বৃদ্ধির পর দ্বিপক্ষীয় অন্যান্য ইস্যু নিয়েও বৈঠকে বসতে যাচ্ছে দুদেশ। সৌদি পররাষ্ট্রমন্ত্রী প্রিন্স ফায়সাল বিন ফারহান আল-সৌদ এবং পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. একে আবদুল মোমেন আগামী রবিবার এ ভার্চুয়াল বৈঠকে বসবেন।
প্রসঙ্গত, সৌদি ফিরতে আগ্রহীরা টিকিট না পেয়ে গত কয়েক দিন ধরেই মতিঝিলে বিমান অফিসের সামনে এবং কারওয়ান বাজারে সৌদি এরাবিয়ান এয়ারলাইন্সের অফিসের সামনে বিক্ষোভ করে আসছেন। গতকাল বুধবার দিনভর বিক্ষোভ করেন তারা। এর আগে প্রবাসীরা রাজধানীর কারওয়ান বাজারে হোটেল সোনারগাঁওয়ে অবস্থিত সৌদি এয়ারলাইন্সের সামনে বিমানের টিকিটের দাবিতে জড়ো হন। এ সময় তারা টিকিট না পেয়ে দুই দফা সড়ক অবরোধ করেন।
এর আগে গত মঙ্গলবারও সৌদি প্রবাসীরা বিক্ষোভ করেন। এদিন তিন ঘণ্টা বিক্ষোভের পর সড়ক অবরোধ তুলে নিয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে স্মারকলিপি দেন তারা। পরে পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেনে দেশে আটকেপড়া প্রবাসীদের ভিসার মেয়াদ তিন মাস বাড়াতে সৌদি আরব সরকারকে চিঠি দেওয়ার কথা জানান। ২০ লাখেরও বেশি বাংলাদেশি মধ্যপ্রাচ্যের তেলসমৃদ্ধ দেশ সৌদি আরবে বিভিন্ন পেশায় কাজ করেন। ২০১৯-২০ অর্থবছরে যে এক হাজার ৮২০ কোটি ৫০ লাখ ডলারের রেমিট্যান্স এর মধ্যে ৪০১ কোটি ৫১ লাখ ডলারই সৌদি প্রবাসীরা পাঠিয়েছেন।