আনুষ্ঠানিকভাবে দেশে সোনা আমদানি শুরু হয়েছে। প্রথম চালানে মঙ্গলবার রাতে ১১ কেজির সোনা আমদানি করেছে ডায়মন্ড ওয়ার্ল্ড। এর আগে আমদানি নীতিমালা হলেও সোনার আমদানি হয়নি।
জানা যায়, ২০১৮ সালের আগে বাংলাদেশে বৈধভাবে সোনা আমদানির সুযোগ ছিল না। ওই বছর সরকার দেশের জুয়েলারি শিল্পের জন্য একটি পূর্ণাঙ্গ স্বর্ণ নীতিমালা প্রণয়ন করে। তাতে সোনা আমদানির সুযোগ দেওয়া হলেও ভ্যাট বেশি হওয়ার কারণে কেউ আমদানি করতে আগ্রহ দেখায়নি বলে জানান বাংলাদেশ জুয়েলার্স সমিতির (বাজুস) সাধারণ সম্পাদক দিলীপ কুমার আগরওয়ালা। তবে এবারের বাজেটে ভ্যাট কমানোয় অনেকেই আমদানির উদ্যোগ নিয়েছেন বলে জানান তিনি।
আগরওয়ালা এ বিষয়ে বলেন, বাজেটে অর্থমন্ত্রী সোনা আমদানির ওপর ১৫ শতাংশ ভ্যাট প্রত্যাহারের ঘোষণা দেওয়ার পর পরই ডায়মন্ড ওয়ার্ল্ডের পক্ষ থেকে দুবাই থেকে ১১ কেজি সোনা আমদানির এলসি খোলা হয়েছিল। সেই সোনা মঙ্গলবার রাতে দেশে এসেছে। এটাই ৪৯ বছরের ইতিহাসে বাংলাদেশে বৈধপথে প্রথম সোনা আমদানি। এর মধ্য দিয়ে দেশের জুয়েলারি শিল্পের ইতিহাসে একটি সোনালী অধ্যায়ের সূচনা হলে। এতদিন যে গোল্ড আসত, তা অবৈধ পথে আসত। আর কিছু আসত ব্যাগেজ রুলসের আওতায়।
এখন দেশে ‘গোল্ডনির্ভর’ শিল্প গড়ে ওঠার প্রত্যাশা জানিয়ে আগরওয়ালা বলেন, কাঁচামাল আসা শুরু হল, এখন এ খাত বিকশিত হবে। একটার পর একটা শিল্প প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠবে। সুতা আমদানি করে পোশাক তৈরি করে বিভিন্ন দেশে রপ্তানি করে যেমন বিদেশি মুদ্রা দেশে আসছে; ঠিক তেমনি গোল্ড দিয়ে তৈরি নানান ধরনের গহনা রপ্তানি করেও বিদেশি মুদ্রা আসবে।
জানা যায়, গোল্ড ডিলার নিয়োগের জন্য বাংলাদেশ ব্যাংক ২০১৯ সালের মার্চ মাসে সার্কুলার দেয়। ওই সার্কুলারে ৫০টি প্রতিষ্ঠান ও কয়েকটি ব্যাংক আবেদন করলেও সব শর্ত পূরণ না হওয়ায় মাত্র ১টি ব্যাংক ও ১৮টি প্রতিষ্ঠানকে নবায়নযোগ্য দুই বছর মেয়াদী লাইসেন্স দেয়। গত ১০ জুন ডায়মন্ড ওয়ার্ল্ড তাদের গোল্ড ডিলারশিপের অনুকূলে ১১ কেজি (১১০০০ গ্রাম) পাকা সোনা আমদানির জন্য আবেদন করে।
আবেদনটি যাচাই বাচাই করে বাংলাদেশ ব্যাংক অনাপত্তি দেয়। এবারের বাজেটে সোনা আমদানির ওপর ১৫ শতাংশ ভ্যাট প্রত্যাহার করায় অনেকেই আমদানি করার উদ্যোগ নিয়েছেন বলে জুয়েলারি ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন।