করোনা মহামারিতে বড় বিপর্যয়ে পড়েছে বিশ্ব অর্থনীতি। নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে বাংলাদেশেও। চলতি অর্থবছরে বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধি কমে হবে মাত্র ১ দশমিক ৬ শতাংশ। বিশ্বব্যাংকের সর্বশেষ অর্থনৈতিক পূর্বাভাষে এমন তথ্য উঠে এসেছে।
গতকাল সোমবার প্রকাশিত ‘গ্লোবাল ইকোনোমিক প্রসপেক্টস ২০২০’ শীর্ষক প্রতিবেদনে সংস্থা জানায়, বাংলাদেশের শিল্প খাতের সাফল্য ম্লান করে দিয়েছে করোনা মহামারি। এতে রপ্তানি ও রেমিট্যান্স প্রবাহও কমেছে। এর ফলে চলতি ২০১৯-২০ অর্থবছরে বাংলাদেশের জিডিপি প্রবৃদ্ধি কমে হবে ১ দশমিক ৬ শতাংশ। আগামী অর্থবছরে তা আরো কমে হবে ১.০ শতাংশ।
গত অর্থবছরে বাংলাদেশে ৮ দশমিক ১৩ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হয়েছিল। এই অর্থবছরে তা ৮ দশমিক ২ শতাংশে নেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা ছিল সরকারের। কিন্তু করোনাভাইরাসের প্রকোপ বাড়তে থাকায় ২৬ মার্চ থেকে দুই মাসের বেশি সময় চলা লকডাউনে অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড স্থবির হয়ে পড়ে। যার প্রভাবে এবার বাংলাদেশ ৩.৮ শতাংশ জিডিপি প্রবৃদ্ধি পেতে পারে বলে আভাস দিয়েছে আইএমএফ।
বিশ্ব ব্যাংক বলছে, মহামারির কারণে বিশ্বজুড়ে তৈরি পোশাকের চাহিদা দুর্বল হয়ে পড়ায় বাংলাদেশের অর্থনীতি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। কমেছে মানুষের ব্যয়ও। তবে এই পরিস্থিতির মধ্যে ব্যবসা-বাণিজ্য টিকিয়ে রাখতে অর্থনৈতিক অভিঘাত মোকাবিলায় বাংলাদেশ ব্যাংক নীতি সুদের হার কমানোর যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিশ্ববাজারে তেলের ব্যাপক দরপতন থেকে সৃষ্ট মূল্যস্ফীতি হ্রাস তার জন্য সহায়ক হবে বলে মনে করছে বিশ্ব ব্যাংক।
সংস্থার প্রতিবেদনে আরো বলা হয়, এ বছর গভীর মন্দায় তলাবে বিশ্ব অর্থনীতি। যা হবে ৮০ বছরের মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ। বিশ্বজুড়ে ৭০ লাখের বেশি আক্রান্ত এ মহামারিতে ব্যবসা বাণিজ্য অনেকটাই স্থবির হয়ে পড়েছে কয়েকমাস যাবত। এতে বিশ্বে জিডিপি প্রবৃদ্ধি ২০২০ সালে ৫.২ শতাংশ সংকোচিত হবে। অভ্যন্তরীণ চাহিদা ও সরবরাহ, বাণিজ্য এবং অর্থনীতির সব খাত মারাত্মকভাবে ব্যাহত হয়েছে। এমনকি এবারের সংকটের কারণে যে বিপুল সংখ্যক দেশ আর্থিক মন্দায় পড়েছে তাতে এ সংকটকে ১৫০ বছরের মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ বলা যায়।
বিশ্বব্যাংকের হিসাবে এ বছর ভারতের প্রবৃদ্ধি আসবে ৪ দশমিক ২ শতাংশ, নেপালের আসবে ১ দশমিক ৮ শতাংশ, ভূটানের আসবে ১ দশমিক ৫ শতাংশ। তবে পাকিস্তানের জিডিপি প্রবৃদ্ধি ২ দশমিক ৬ শতাংশ সংকোচিত হবে।