ইতালি, যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র, জার্মানি, ফ্রান্স ও স্পেন করোনার কারণে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত। লকডাউন ও মানুষের চলাচলে বিধিনিষেধের কারণে ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় এসব দেশে বেকারত্ব বেড়েই চলেছে। এসবসহ বিভিন্ন দেশের সরকার চাকরিচ্যুতি ঠেকাতে যথাসাধ্য চেষ্টা করছে। পিছিয়ে নেই বাংলাদেশ সরকারও।
এজন্য দেশের সাতটি জেলায় সাতটি যুব প্রশিক্ষণ কেন্দ্র অবকাঠামো নির্মাণ করা হবে আগামী তিন বছরে। প্রকল্পের প্রস্তাবিত ব্যয় ধরা হয়েছে ৪৩৬ কোটি ৬৮ লাখ টাকা। বরিশালের বাকেরগঞ্জে, ফেনীর ফুলগাজী, যশোর সদরে, ময়মনসিংহের সদর, বগুড়া সদর, রংপুর সদর এবং রাজশাহীর গোদাগাড়ীতে এসব কেন্দ্র নির্মাণ করা হবে। যুবসমাজের উন্নয়ন কার্যক্রম সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার জন্য আধুনিক সুবিধাসংবলিত পরিকল্পিত অবকাঠামো নির্মাণ করাই এ প্রকল্পের উদ্দেশ্য।
সোমবার (০৮ জুন) নগরীর পরিকল্পনা কমিশনে যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের প্রস্তাবনায় প্রকল্পটি নিয়ে প্রকল্প মূল্যায়ন কমিটি (পিইসি) সভা অনুষ্ঠিত হয়।
সভায় পরিকল্পনা কমিশনের আর্থসামাজিক অবকাঠামো বিভাগের সদস্য (সচিব) আবুল কালাম আজাদ সভাপতিত্ব করেন। সেখানে প্রকল্পের কিছু অযৌক্তিক ব্যয় কমানোর প্রস্তাব করা হয়েছে। ফলে ৪৩৬ কোটি ৬৮ লাখ টাকার প্রকল্প কমে ৩০০ কোটি টাকায় নেমে আসছে বলে জানায় যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়। একটি সভায় প্রকল্পের প্রস্তাবিত ব্যয় থেকে কমছে ১৩৬ কোটি ৬৮ লাখ টাকা।
যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের উপপ্রধান সুব্রত শিকদার বলেন, দেশের সাতটি জেলায় সাতটি যুব প্রশিক্ষণ কেন্দ্র অবকাঠামো নির্মাণ করা হবে। প্রকল্পের প্রস্তাব পরিকল্পনা কমিশনে পাঠিয়েছি। প্রকল্পটি নিয়ে পিইসি সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। প্রস্তাবিত ব্যয় কমে হবে ৩০০ কোটি টাকা।
যুব উন্নয়ন অধিদফতরের আওতায় দেশের ৫৩টি জেলায় ৫৩টি আবাসিক যুব প্রশিক্ষণ কেন্দ্র রয়েছে। এসব কেন্দ্রের মধ্যে ৪৭টির বহুতল একাডেমি কাম অফিস ভবন, প্রশিক্ষণার্থীদের জন্য পুরুষ ও মহিলা হোস্টেল, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের বাসস্থানসহ বিভিন্ন অবকাঠামো রয়েছে। নতুন এই প্রকল্প এলাকার সাতটি কেন্দ্রে আধাপাকা অবকাঠামো রয়েছে, যা বর্তমানে অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ। এতে দাফতরিকসহ প্রশিক্ষণ কার্যক্রম বাস্তবায়নে সমস্যা হচ্ছে। এজন্য নতুন করে প্রকল্পটি গ্রহণ করা হবে।
অন্য দিকে এই প্রকল্পে বিভিন্ন কেন্দ্রের জন্য প্রতিটি লিফট ৬৫ লাখ টাকা ও ৫২ লাখ টাকা দরে ৫০ টনের এসি কেনা হবে। সিকিউরিটি ও গেট লাইট প্রতিটির দাম ধরা হয়েছে সাড়ে ১২ লাখ টাকা। পিএবিএক্স ব্যবস্থার দাম প্রতিটি ধরা হয়েছে ১৫ লাখ টাকা, লাইটনিং এরেস্টার বা আর্থিং প্রতিটি সাড়ে ১৭ লাখ টাকা, প্রতিটি কম্পিউটার নেটওয়ার্ক খরচ ১০ লাখ টাকা ধরা হয়েছে। এছাড়া সিসি ক্যামেরা ৩০ হাজার টাকা, আইপিএস ৬০ হাজার টাকা, ইনকিউবেটর ৮০ হাজার টাকা, খাঁচা ৪০ হাজার টাকা, ফুল সাচিবিক টেবিল প্রতিটি ৮০ হাজার টাকা, হাফ সাচিবিক টেবিল প্রতিটি ৫০ হাজার টাকা, রিভলভিং চেয়ার প্রতিটি ২০ হাজার টাকা, হাতলসহ কুশন চেয়ার ১২ হাজার টাকা, ঘাসকাটার মেশিন ৩০ হাজার টাকা মূল্য ধরা হয়ছে। এছাড়া একটি গাড়ির রক্ষণাবেক্ষণেই খরচ ধরা হয়েছে ছয় লাখ টাকা। আর নির্মিত ভবন উদ্বোধনে ব্যয় হবে ২১ লাখ টাকা।
এ ব্যাপারে পরিকল্পনা কমিশনের আর্থসামাজিক অবকাঠামো বিভাগের সদস্য (সচিব) আবুল কালাম আজাদ বলেন, প্রকল্পটি অনেক গুরুত্বপূর্ণ। প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে যুব সমাজে অনেক ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে। কোভিড-১৯ এর কারণে অনেকে চাকরি হারাচ্ছে। তবে সাতটি কেন্দ্রে অবকাঠামোগত উন্নয়ন যুবকদের উন্নয়নে নানা ধরনের প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। প্রশিক্ষণ নিয়ে যুবকরা প্রত্যাশিত চাকরি পাবেন। প্রকল্পটি নিয়ে একটা সভা করেছি। ব্যয় কমানোর জন্য সভায় সংশ্লিষ্টদের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।