কমেছে ডিম-মাছের দাম, চড়া আদার বাজার

প্রতি ডজন ডিমের দাম পাঁচ থেকে ২০ টাকা পর্যন্ত কমেছে বাজারে। আর কেজিতে ১০ থেকে ৫০ টাকা পর্যন্ত কমেছে মাছের দাম। আগের চড়া দামেই বিক্রি হচ্ছে চাল, ডাল ও খোলা সয়াবিন।

এদিকে পণ্যের দাম নিয়ে ক্রেতা-বিক্রেতার মধ্যে রয়েছে ভিন্নমত। ক্রেতা-বিক্রেতার উপস্থিতি বিবেচনায় দাম সন্তোষজনক নয় এমন দাবি ক্রেতাদের। আর ক্রেতার উপস্থিতি কমায় দাম কমছে দাবি বিক্রেতার।

শুক্রবার (১০ এপ্রিল) রাজধানীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে এসব চিত্র উঠে এসেছে।

রাজধানীর সেগুনবাগিচা, শান্তিনগর, মালিবাগ, রামপুরা, খিলগাঁও বাজারে শাক-সবজির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। প্রকারভেদে প্রতিকেজি আলু বিক্রি হচ্ছে ২৫ থেকে ৩৫ টাকা, সিম ৩০ থেকে ৪০ টাকা, কাঁচা মরিচ ৬০ থেকে ৮০ টাকা, টমেটো ৩০ থেকে ৪০ টাকা, করলা ৪০ থেকে ৫০ টাকা, উস্তা ৫০ থেকে ৬০ টাকা, বেগুন (প্রকারভেদে) ৪০ থেকে ৮০ টাকা, গাজর ৩০ থেকে ৪০ টাকা, পেঁপে ২৫ থেকে ৩০ টাকা, কচুর লতি ৫০ থেকে ৬০ টাকা, বড় কচু ৫০ থেকে ৬০ টাকা, শসা ৩০ থেকে ৫০ টাকা, সিমের বিচি ১০০ থেকে ১২০ টাকা।

এসব বাজারে প্রতি পিস লাউ বিক্রি হচ্ছে ৪০ থেকে ৬০ টাকা, প্রতি পিস বাঁধাকপি-ফুলকপি বিক্রি হচ্ছে ৩০ থেকে ৫০ টাকা, বাঁধা কপি (গ্রিন) ৫০ থেকে ৮০ টাকা। আর প্রতি আঁটি (মোড়া) কচু শাক ৮ থেকে ১০ টাকা, লাল শাক ১০ টাকা, মূলা ১৫ টাকা, পালং শাক ১০ টাকা থেকে ১২, লাউ ও কুমড়া শাক ৩০ থেকে ৪০ টাকা বিক্রি করতে দেখা গেছে।

চড়া দাম রয়েছে কাঁচা কলা ও লেবুর। বাজারে প্রতি হালি কাঁচা কলা বিক্রি হচ্ছে ৩৫ থেকে ৪০ টাকা, লেবু বিক্রি হচ্ছে ৫০ থেকে ৭০ টাকায়।

আগের বাড়তি দামেই বিক্রি হচ্ছে গরু ও খাসির মাংসের দাম। গরুর মাংস প্রতিকেজি বিক্রি হচ্ছে ৬০০ টাকা, মহিষের মাংস ৬০০ টাকা, খাসির মাংস ৮০০ টাকা, বকরি ৭৫০ টাকা।

অপরিবর্তিত রয়েছে মুরগির বাজার। বর্তমানে প্রতিকেজি বয়লার ১২০ টাকা, বাজারভেদে লেয়ার ১৮০ থেকে ২০০ টাকা, সাদা লেয়ার ১৭০ থেকে ১৮০ টাকা, সোনালী মুরগি ২৫০ থেকে ২৬০ টাকা।

এসব বাজারে প্রতি ডজন লাল ডিম বিক্রি হচ্ছে ৯০ থেকে ৯৫ টাকা। ১০ টাকা কমে দেশি মুরগির ডিম প্রতি ডজন বিক্রি হচ্ছে ১৪০ টাকা, ২০ টাকা কমে সোনালী মুরগির ডিম প্রতি ডজন বিক্রি হচ্ছে ১১০ টাকা, হাঁসের ডিম প্রতি ডজন ১২০ টাকা।

কেজিতে ১০ থেকে ৫০ টাকা পর্যন্ত কমেছে বিভিন্ন প্রকার মাছের দাম। এসব বাজারে দাম কমে বর্তমানে প্রতি এক কেজি ওজনের ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ১ হাজার থেকে ১ হাজার ৫০ টাকা, ৭৫০ গ্রাম ওজনের ইলিশ ৬৫০ টাকা থেকে ৭০০, ছোট ইলিশ আকারভেদে ৩৫০ থেকে ৪০০ টাকা কেজি দরে।

এছাড়া প্রতিকেজি কাঁচকি ৩০০ টাকা কেজি, মলা ৩০ টাকা, ছোট পুঁটি (তাজা) ৫০০ টাকা, শিং (আকারভেদে) ৩০০ থেকে ৫৫০ টাকা, পাবদা ৪০০ থেকে ৫৫০ টাকা, চিংড়ি (গলদা) ৪০০ থেকে ৮০০ টাকা, বাগদা ৪৫০ থেকে ১০০০ টাকা, হরিণা ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা, দেশি চিংড়ি ৩৫০ থেকে ৫০০ টাকা, রুই (আকারভেদে) ২২০ থেকে ৩৫০ টাকা, মৃগেল ২০০ থেকে ৩০০ টাকা, পাঙাস ১৩০ থেকে ১৮০ টাকা, তেলাপিয়া ১৪০ থেকে ১৮০ টাকা, কৈ ১৮০ থেকে ২০০ টাকা, কাতল ২০০ থেকে ৩০০ টাকা কেজিদরে বিক্রি হতে দেখা গেছে।

বাজারে আদার দাম বাড়লেও অপরিবর্তিত রয়েছে পেঁয়াজ ও রসুনের দাম। সপ্তাহের ব্যবধানে এসব বাজারে কেজিতে ১০০ থেকে ১২০ টাকা বাড়তি রয়েছে আদার দাম। বর্তমানে মিয়ানমার, চায়না ও দেশি প্রতিকেজি আদা বিক্রি হচ্ছে ২৬০ টাকা। যা এক সপ্তাহ আগে বিক্রি হয়েছে ১৪০ থেকে ১৫০ টাকা।

এসব বাজারে প্রতিকেজি দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে (মানভেদে) ৪৫ থেকে ৫০ টাকা। প্রতিকেজি রসুন দেশি (মানভেদে) ৭০ থেকে ১০০ টাকা, চায়না ও মিয়ানমারে রসুন ১৩০ থেকে ১৫০, তিন কোয়া রসুন ১৮০ টাকা।

আগের বাড়তি দামেই বিক্রি হচ্ছে খোলা সয়াবিন। খোলা সয়াবিন (লাল) বর্তমানে বিক্রি হচ্ছে ১০০ থেকে ১০৫ টাকা প্রতি লিটার, খোলা সাদা সয়াবিন প্রতি লিটার বিক্রি হচ্ছে ৯৫ থেকে ১০০ টাকা। অপরিবর্তিত রয়েছে সরিষার তেল। খোলা সরিষার প্রতি লিটার তেল বিক্রি হচ্ছে ২০০ টাকা।

আগের চড়া দাম রয়েছে চালের বাজারে। এসব বাজারে প্রতিকেজি মিনিকেট (নতুন) চাল বিক্রি হচ্ছে ৫৬ থেকে ৫৮ টাকা, মিনিকেট পুরান ৬২ টাকা, বাসমতী ৬৫ থেকে ৬৬ টাকা, প্রতিকেজি আটাশ চাল বিক্রি হচ্ছে ৪৬ টাকা, এক সিদ্ধ চাল বিক্রি হচ্ছে ৪২ টাকা, পাইজাম ৪২ টাকা, পোলাও চাল ৯৫ থেকে ১০০ টাকা।

বাজারে প্রতিকেজি ডাবলী ডাল বিক্রি হচ্ছে ৪৬ টাকা, অ্যাঙ্কার ৪৬ টাকা, দেশি মসুর ডাল বিক্রি হচ্ছে ১২০ টাকা, মসুর (মোটা) ৮০ টাকা।

প্রতিকেজি এলাচ বিক্রি হচ্ছে ৪ হাজার ৬০০ থেকে ৫ হাজার ৫০০ টাকা। জয়ত্রী প্রতিকেজি বিক্রি হচ্ছে ৩ হাজার ৫০০ থেকে ৩ হাজার ৬০০ টাকা। জায়ফল প্রতিকেজি ৮০০ টাকা।

আনোয়ারা নামে শান্তিনগর বাজার এক ক্রেতা বলেন, ক্রেতার উপস্থিতি বিবেচনায় পণ্যের দাম আরও কম হওয়া উচিত। বাজারে ক্রেতা কম এরপরও দাম কমছে না। এক সপ্তাহ আগে আদা কিনেছি প্রতিকেজি ১৪০ টাকা। আর বর্তমানে প্রতিকেজি আদা বিক্রি হচ্ছে ২৬০ টাকা। দেশের বর্তমান পরিস্থিতিতে বাড়তি দামে পণ্য কেনা কষ্টকর।

এদিকে বিক্রেতার দাবি দাম বেশি বেড়েছে পাইকারিতে। বাজারে নতুন করে আদার আমদানি না থাকায় পাইকারি বাজারে বাড়তি দাম তাই বেশি দামেই বিক্রি করতে হচ্ছে।

Scroll to Top