করোনার প্রভাবে পোলট্রি শিল্পে ১১৫০ কোটি টাকার ক্ষতির আশঙ্কা

করোনার প্রভাবে পোলট্রি শিল্পে ১ হাজার ১৫০ কোটি টাকা লোকসান হয়েছে। পোলট্রি পণ্য বাজারজাত করতে না পারায় এমন ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে এ শিল্প খাত। পাশাপাশি দেশের একমাত্র পিআরটিসি ল্যাব বন্ধ থাকায় বন্দর থেকে ছাড় করানো যাচ্ছে না পোলট্রি শিল্পে ব্যবহৃত কাঁচামাল। এ অবস্থা চলতে থাকলে থমকে যেতে পারে দেশীয় পোলট্রি শিল্প। এমন আশঙ্কার কথা তুলে ধরেছে পোলট্রি শিল্পের কেন্দ্রীয় সংগঠন ‘বাংলাদেশ পোলট্রি ইন্ডাস্ট্রিজ সেন্ট্রাল কাউন্সিল (বিপিআইসিসি)’।

বিপিআইসিসির সভাপতি মসিউর রহমান বলেন, করোনা সতর্কতায় জনসমাগম ঠেকাতে সরকারের গৃহীত পদক্ষেপের কারণে পাইকারি বাজার থেকে শুরু করে খুচরা বাজার-হাটে ক্রেতাদের উপস্থিতি ব্যাপক হারে কমেছে। ব্রয়লার মুরগি, একদিন বয়সী বাচ্চা ও ডিমের দাম ব্যাপক পরিমাণে কমেছে। পোলট্রি ও ফিশ ফিডের উৎপাদন প্রায় ৭০-৭৫ শতাংশ কমেছে। একদিন বয়সী মুরগির বাচ্চার উৎপাদন খরচ ৩৫ টাকা হলেও দাম নেমে এসেছে মাত্র ১ টাকায়। এ ছাড়া পোলট্রি প্রসেসড পণ্যের বিক্রি ৯৫ শতাংশ পর্যন্ত কমেছে।

মসিউর রহমান বলেন, আমাদের প্রাথমিক হিসাব মতে আগামী ৪ এপ্রিল পর্যন্ত ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ ১ হাজার ১৫০ কোটি টাকা ছাড়িয়ে যাবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। যদি আরো এক সপ্তাহ এ অবস্থা চলতে থাকে তবে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ ১ হাজার ৬৫০ কোটি টাকা ছাড়াবে। এরপরও যদি অবস্থার উন্নতি না হয় তবে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ দাঁড়াবে দৈনিক প্রায় ১০০ কোটি টাকা। তাছাড়া পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলেও মার্কেট স্বাভাবিক হতে সময় লাগবে আরো অন্তত এক মাস।

বিপিআইসিসি সূত্র জানায়, এ পর্যন্ত ব্রির্ডাস ইন্ডাস্ট্রি খাতে ৪৫৮ কোটি টাকা, ফিড ইন্ডাস্ট্রিতে ৭৫ কোটি টাকা, বাণিজ্যিক পোলট্রি (ডিম ও মাংস) খাতে ৫০৩ কোটি টাকা, প্রসেসড ইন্ডাস্ট্রি খাতে ৩১ কোটি টাকা ও ওষুধ মিনারেল প্রিমিক্সসহ অন্যান্য খাতে ক্ষতির পরিমাণ হচ্ছে ৮৩ কোটি টাকা।

এ পরিস্থিতিতে পোলট্রিশিল্পকে ফের স্বাভাবিক অবস্থায় নিয়ে আসার জন্য সরকারের কাছ থেকে ছয়টি সহায়তা চাওয়া হয়েছে পোলট্রিশিল্পের প্রতিটি শাখার সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলোর জন্য আগামী ছয় মাসের ব্যাংক সুদ মওকুফ; বন্দরে আটকে পড়া কাঁচামালের কারণে জমা হওয়া পোর্ট ডেমারেজ মওকুফ; সাধারণ মানুষের জন্য সরকার ঘোষিত খাদ্য সহায়তার অংশ হিসেবে ডিম ও মুরগির মাংস বিতরণ; পোলট্রির সবগুলো খাতের জন্য ৩০ শতাংশ আর্থিক প্রণোদনা প্রদান এবং ‘কোভিড-১৯’ বিষয়ক সচেতনতার অংশ হিসেবে সরকারি ও বেসরকারি গণমাধ্যমে ডিম, দুধ, মাছ, মাংসের পক্ষে ইতিবাচক প্রচার চালানো।

Scroll to Top