বরিশালের বানারীপাড়া ও পাশের উপজেলা স্বরূপকাঠির কুড়িয়ানায় জমে উঠেছে পেয়ারার হাট। স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে পেয়ারা যাচ্ছে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে। চাষীরা জানান, মৌসুমী এই ফল সংরক্ষণ করা গেলে এ থেকে কোটি টাকা আয় করা সম্ভব।
সরেজমিনে, বানারীপাড়ার ও স্বরূপকাঠি উপজেলার নরেরকাঠি, আলতা, বঙ্কুরা, কাঁচাবালিয়া, গাভা, বাস্তুকাঠি, সৈয়দকাঠি, ইন্দ্রের হাওলাসহ পাশের আটঘর-কুড়িয়ানা, কুঠারকাঠী, ধলহার, আন্দাকুল, আদম কাঠী, আতা, মাদ্রা, পূর্ব জলাবাড়ী, জৌসার থেকে বাগানের মালিকরা নৌকায় করে আনছেন কাঁচাপাকা পেয়ারা।
সকাল ৭টায় বসা হাটটি বেলা ১২টার মধ্যে পেয়ার শূন্য হয়ে যাচ্ছে। বাজার জাত করতে পেয়ারা ট্রলার, লঞ্চ, ট্রাকে করে দেশের বিভিন্ন এলাকায় পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে।
হাটের পাইকাররা জানান, মৌসুমের শুরুর দিকে প্রতি মণ পেয়ার পাঁচশ থেকে সাতশ টাকা দরে বিক্রি হয়েছে। কৃষক নির্মল হাওলাদার জানান, তিন একর জমিতে পেয়ারা চাষ করেছেন। খরচ হয়েছে প্রায় দেড় লাখ টাকা। পেয়ারার দাম স্বাভাবিক থাকলে এক লাখ টাকা লাভ হবে। বিঘা প্রতি পেয়ারার বাগান করতে খরচ হয় প্রায় ৬০ হাজার টাকা।
পেয়ারা চাষী দীপঙ্কর রায় বলেন, গত কয়েক বছর পেয়ারা কালোছিটা (এনথ্রাক্স) রোগে আক্রান্ত ছিল। এ বছর তেমন আক্রান্ত হয়নি। অনেকেই এনথ্রাক্স বালাই থেকে রক্ষা পেতে কৃষি বিভাগের পরামর্শ নিয়েছেন।
বছরের আষাঢ়-ভাদ্র মাস পেয়ারার মৌসুম। জেলি বা এ জাতীয় খাবার তৈরির প্রধান কাঁচামাল পেয়ারা দ্রুত পচনশীল। দীর্ঘ দিন সংরক্ষণ করা যায়না। ফলন ভালো হলেও সরকারী, বেসরকারী কোনো আর্থিক পৃষ্ঠপোষকতা না থাকায় পেয়ারা সংরক্ষণ করা যাচ্ছে না।
চাষীরা বলেন, রাজশাহীর আম সংরক্ষণের মত পেয়ারার সংরক্ষণ ও উন্নত প্রযুক্তির মাধ্যমে বিদেশে রপ্তানি করতে পারলে এটি হতে পারে লাভজনক ব্যবসা। পেয়ার থেকে কোটি টাকা আয় করা সম্ভব। যদি উন্নত মানের সংরক্ষণ ও বাজারজাত করণের ব্যবস্থা থাকে তাহলে বানারীপাড়া কিংবা কুড়িয়ানায় পেয়ারা ভিত্তিক শিল্প কারখানা গড়ে উঠতে পারে।