বছরে ১০ লাখ মোটরসাইকেল তৈরি করবে বাংলাদেশ

২০২৭ সাল নাগাদ দেশে মোটরসাইকেলের বার্ষিক উৎপাদন ক্ষমতা ১০ লাখে উন্নীত করার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। পাশাপাশি একই সময়ের মধ্যে এ শিল্পখাতে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে কর্মসংস্থানের পরিমাণ ১৫ লাখ উন্নীত করা হবে। এসব লক্ষ্য অর্জনে প্রয়োজনীয় পৃষ্ঠপোষকতা ও নীতিসহায়তা প্রদান অব্যাহত রাখবে শিল্প মন্ত্রণালয়।

রোববার (২৩ জুন) শিল্প মন্ত্রণালয়ে মোটরসাইকেল শিল্প উন্নয়ন নীতিমালা ২০১৮ বাস্তবায়নের জন্য গঠিত সমন্বয় পরিষদের সভায় এসব তথ্য জানানো হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন। অনুষ্ঠানে এ সময় শিল্প প্রতিমন্ত্রী কামাল আহমেদ মজুমদার উপস্থিত ছিলেন।

এছাড়া, সভায় অন্যদের মধ্যে শিল্প সচিব মো. আবদুল হালিম, শিল্প মন্ত্রণালয়, অর্থ বিভাগ, বাংলাদেশ ট্যারিফ কমিশন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বিডা, বাংলাদেশ ব্যাংক ও বিআরটিএর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, বিএসটিআই, বিটাক, বিএসইসি ও বিসিকের প্রধান, বাংলাদেশ মোটরসাইকেল ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতিসহ মোটরসাইকেল উৎপাদনকারী শিল্প প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।

সভায় মোটরসাইকেল শিল্প উন্নয়ন নীতিমালা বাস্তবায়নের কৌশল নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়। এ সময় মোটরসাইকেল উৎপাদনকারী শিল্প উদ্যোক্তারা এ শিল্প বিকাশের পেছনে প্রতিবন্ধকতা ও সমস্যা তুলে ধরেন। তারা বলেন, ইতোমধ্যে মোটরসাইকেল শিল্পখাতে উদ্যোক্তারা প্রায় ৭ হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগ করেছেন। মোটরসাইকেলের আমদানিকৃত যন্ত্রাংশের শুল্ক হার তুলনামূলক কম হওয়ায় দেশীয় খুচরা যন্ত্রাংশ উৎপাদনকারী ভেন্ডররা কঠিন প্রতিযোগিতার মুখোমুখি হচ্ছেন।

তাছাড়া, পণ্যের গুণগত মান যাচাইয়ে প্রতিষ্ঠানিক সুযোগের সীমাবদ্ধতা, প্রতিবেশী দেশগুলোর তুলনায় অধিক রেজিস্ট্রেশন ব্যয়, ঘন ঘন এসআরও জারি ও শুল্ক নীতির পরিবর্তন, সিকেডি ও সিবিইউ মোটরসাইকেল আমদানিতে ক্রমান্বয়ে শুল্ক ব্যবধান হ্রাস পাওয়ায় উদীয়মান এ শিল্পের বিকাশ ব্যাহত হচ্ছে বলে জানানো হয়।

সভায় মোটরসাইকেল শিল্প উদ্যোক্তারা দেশে দক্ষ ভেন্ডর ব্যবস্থা গড়ে তুলতে খুচরা যন্ত্রাংশ আমদানিতে শুল্কহার বৃদ্ধি, তৈরি মোটরসাইকেল রফতানিতে প্রণোদনা দান এবং এসএমই অর্থায়নের আওতায় এ শিল্পখাতে ব্যাংক ঋণের সুযোগ তৈরির দাবি জানান। তারা দেশে উৎপাদিত মোটরসাইকেলের গুণগতমান নিশ্চিতকল্পে একটি মান নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠান স্থাপনের পরামর্শ দেন।

পাশাপাশি এ খাতে দক্ষ জনবল গড়ে তোলার জন্য প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠান স্থাপনের পরামর্শ দেন এবং প্রতিবেশি দেশগুলোর সাথে সামঞ্জস্য রেখে মোটরসাইকেলের রেজিস্ট্রেশন খরচ নির্ধারণের জন্য তারা মন্ত্রণালয়ের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।

অনুষ্ঠানে শিল্পমন্ত্রী বলেন, শিল্পোন্নত বাংলাদেশ গড়ে তোলার অভীষ্ট লক্ষ্য অর্জনে সরকার মোটরসাইকেল উৎপাদনকারী শিল্পকে সম্ভব সব ধরনের নীতি সহায়তা দেবে। এ শিল্পে উৎপাদিত যন্ত্রাংশের গুণগত মান নিয়ন্ত্রণে বিএসটিআই এবং বিটাক উদ্যোক্তাদেরকে প্রয়োজনীয় সহায়তা দেবে।

নতুন কারখানা স্থাপনে বর্জ্য ব্যবস্থাপনা ও রিসাইক্লিংয়ের ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে উদ্যোক্তাদের নির্দেশনা দেন মন্ত্রী। জনকল্যাণে রাজস্ব আয় বৃদ্ধির প্রয়োজন হলেও অযৌক্তিক রেজিস্ট্রেশন ব্যয় বাড়িয়ে জনগণকে কষ্ট দেয়া সরকারের লক্ষ্য নয় বলেও জানান তিনি।

শিল্প প্রতিমন্ত্রী বলেন, দেশীয় শিল্পের স্বার্থ রক্ষায় আমদানিকৃত পণ্যে অধিকহারে কর আরোপের পাশাপাশি দেশীয় উৎপাদকদের কর রেয়াতের ব্যবস্থা করতে হবে।

এ সময় মোটরসাইকেল রেজিস্ট্রেশনখাতে কর ফাঁকি বন্ধ করতে বিক্রিত মোটরসাইকেলের তালিকা স্থানীয় জেলা প্রশাসক, বিআরটিএ এবং শিল্প মন্ত্রণালয়ের কাছে প্রেরণের জন্য উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানগুলোকে নির্দেশ দেন তিনি।

লেটেস্টবিডিনিউজ/এসকেবি

Scroll to Top