রাজধানীর ভাসানটেকের মাটিকাটা এলাকায় \’বন্দুকযুদ্ধে\’ নরসিংদীর শীর্ষ সন্ত্রাসী শফিকুল ইসলাম শফিক (২৮) নিহত হয়েছেন। এ সময় প্রদীপ চন্দ্র (৩৫) ও ফারুক হোসেন (৩২) নামে শফিকের দুই সহযোগীকে গ্রেফতার করা হয়।
র্যাব বলছে, নরসিংদী পুলিশের তালিকাভুক্ত শীর্ষ সন্ত্রাসী শফিকের বিরুদ্ধে হত্যার তিনটি, অস্ত্র আইনে চারটিসহ বিভিন্ন অভিযোগে দুই ডজন মামলা রয়েছে থানায়। দীর্ঘদিন ধরে তিনি পলাতক ছিলেন।
র্যাব-১১ এর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আলেপ উদ্দিন জানান, শফিকের অবস্থান শনাক্ত করে মঙ্গলবার রাত ১টার দিকে মাটিকাটা এলাকার একটি ভবনে অভিযান চালানো হয়। র্যাবের উপস্থিতি টের পেয়ে শফিক ও তার সহযোগীরা গুলি ছোড়ে। তখন র্যাবও পাল্টা গুলি চালায়। এক পর্যায়ে শফিক গুলিবিদ্ধ হয়। গুলিবিদ্ধ শফিককে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
তিনি বলেন, ওই বাড়ি থেকে প্রদীপ চন্দ্র (৩৫) ও ফারুক হোসেন (৩২) নামে শফিকের দুই সহযোগীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ঘটনাস্থল থেকে তিনটি আগ্নেয়াস্ত্র ও ছয় রাউন্ড গুলি উদ্ধার করা হয়েছে। র্যাবের একজন সদস্যও এই অভিযানে আহত হয়েছেন বলে আলেপ উদ্দিন জানান।
নরসিংদী শহরের সাঁটিরপাড় এলাকার বাসিন্দা মমতাজ উদ্দিন সুবেদারের ছেলে শফিকুল ইসলাম শফিক পুলিশের তালিকাভুক্ত শীর্ষ সন্ত্রাসী। নরসিংদী মডেল থানা সন্ত্রাসীদের যে তালিকা করে, তাতে প্রথমেই আছে শফিকের নাম।
এলাকায় আধিপত্য বিস্তার, বালু ব্যবসার নিয়ন্ত্রণ ও মাদকের টাকার ভাগবাটোয়ারাকে কেন্দ্র করে ২০১৪ সালের ২৯ অক্টোবর নরসিংদী পৌর শহরের বকুলতলায় সন্ত্রাসী শফিক গ্রুপ ও সোহেল গ্রুপের মধ্যে গোলাগুলি হয়। গোলাগুলির সময় স্বপন মিয়া (১২) নামে এক শিশু মারা যায়। পুলিশের একটি সূত্র জানিয়েছে, শফিকুল ইসলাম ২০১৪ সালে জেলা যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ছিলেন। আগে তিনি যুবদলের রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলেন। ২০১১ সালে শহরের সুরভী সিনেমা হলের সামনে জেলা মৎসজীবী দলের সভাপতি স্বপন ওরফে মধু স্বপন হত্যা মামলার প্রধান আসামি তিনি। এ ঘটনার পর তিনি দীর্ঘদিন দেশের বাইরে গাঢাকা দেন। নরসিংদী পৌর মেয়র লোকমান হত্যার পর দেশে ফেরেন। ওই সময় তিনি আওয়ামী লীগে যোগদান করেন। এরপর আবার অপরাধ কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে পড়ার অভিযোগ ওঠে তার বিরুদ্ধে।
আমাদের নরসিংদী প্রতিনিধি জানান, \’বন্দুকযুদ্ধে\’ শফিকুল ইসলাম শফিকের মৃত্যুর খবরে নরসিংদী শহরসহ বিভিন্ন এলাকায় জনমনে স্বস্তি ফিরে এসেছে।