নিখোঁজ দ্বিতীয় শ্রেণির ছাত্রীর নগ্ন বস্তবান্দি মরদেহ উদ্ধার

নিখোঁজ হওয়ার ২৪ ঘণ্টা পর যশোরে কথা আফরিন তিশা (৮) নামে এক শিশুর বস্তাবিন্দ নগ্ন মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। সে শহরের ধর্মতলা দি স্যালভেশন আর্মির অফিসের পাশের গাজীপাড়ার ইজিবাইক চালক তরিকুল ইসলামের মেয়ে।

তরিকুল ইসলাম ওই এলকার ওমর আলীর বাড়িতে ভাড়া থাকেন। তিশা কারবালা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দ্বিতীয় শ্রেণির ছাত্রী। 

সংবাদ পেয়ে কোতয়ালি থানা পুলিশ সেখানে গিয়ে মরদেহ উদ্ধার করে যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালের পাঠিয়েছে। তিশাকে ধর্ষণের পর হত্যা করা হয়েছে বলে এলাকাবাসী ধারণা করছে। 

নিহতের পিতা তরিকুল ইসলাম জানিয়েছেন, স্ত্রী ও দুই মেয়েকে নিয়ে তিনি দি সালভেশন আর্মির অফিসের পাশের গাজীপাড়ায় ওমর আলীর বাড়িতে ভাড়া থাকেন। বড় মেয়ে তিশা রবিবার বিকেলে বাড়িতে আরবি পড়ে খেলতে বের হয়। প্রতিদিন সন্ধ্যার আগেই সে বাড়িতে ফিরে আসে। কিন্তু রবিবার সে ফেরেনি। তার বাড়ির লোকজন এমনকি ওই এলাকার মানুষ তার খোঁজ খবর করতে থাকে। তিনি কোতয়ালি থানা এবং ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্সের অফিসেও অভিযোগ করেন। এলাকার লোকজন, পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা এলাকায় তল্লাশি করেন। কিন্তু কোথাও তার খোঁজ মেলেনি।

তরিকুল ইসলাম আরও জানিয়েছেন, সকালে তিশার খোঁজে বিভিন্ন কবিরাজের বাড়িতে যাওয়া হয়। তিশার মা অভয়নগরের নওয়াপাড়ায় গিয়েছেন কবিরাজের কাছে তিশার খোঁজ নিতে। সোমবার বিকেলে তিনিসহ বেশ কয়েকজন বাড়ির পাশের হরসিতের ঘরের পেছনে দাঁড়িয়ে ছিলেন। তিনি সে সময় মন্তব্য করেন ঘরের পেছনে একটি গর্ত ছিল। কিন্ত এ দিন সেটি মাটি দিয়ে ভরাট করা। তিনি পা দিয়ে চেপেও ধরেন। কিন্তু নরম পান। পরে চলে যান মাঠের দিকে। কিছুক্ষণ পর লোকমুখে জানতে পারেন তার মেয়ের লাশ পাওয়া গেছে। তিনি ছুটে যান ওই গর্তের কাছে। সেখানে গিয়ে দেখেন এলাকার নারীরা বস্তাবন্দি অবস্থায় মরদেহটি উদ্ধার করা। 

ধর্মতলার এলাকার বাসিন্দা সাবেক ছাত্রলীগ নেতা সাইদ সরদার জানিয়েছেন, মরদেহের মুখে একটি কাপড় গুজে দেয়া ছিল। দুই হাত পুরানো লুঙ্গির টুকরো দিয়ে বাঁধা। উলঙ্গ অবস্থায় ছিল মরদেহটি। পাশে তার কলো রং এর একটি প্যান্ট পড়ে ছিল। বস্তার পাশে পড়ে ছিল নীল রং এর একটি কলম। তিশার একজোড়া স্যান্ডেলও রয়েছে পাশে। ধারণা করা হচ্ছে তাকে ধর্ষণের পর হত্যা করা হয়েছে। 

নিহতের বাড়ির মালিক ওমর আলীর স্ত্রী মাজেদা বেগম জানিয়েছেন, রবিবার সন্ধ্যার আগে থেকে তিশাকে পাওয়া যাচ্ছিল না। সোমবার সন্ধ্যার আগে তার লাশ উদ্ধার করা হয়। তিশার মা বাড়িতে নেই। মেয়ের সন্ধান জানতে নওয়াপাড়ায় কবিরাজ বাড়িতে গিয়েছেন। 

তিশার পিতা তরিকুল ইসলাম অভিযোগ করেছেন, হরসিতের বাড়িতে ভাড়া থাকে শামীম নামে এক ব্যক্তি। তার কথাবর্তা, চলাফেরা সন্দেহজনক ছিল। সোমবার দুপুর থেকে তাকে ও তার স্ত্রীকে পাওয়া যাচ্ছে না। সম্ভাবত তার মেয়ের হত্যার পেছনে শামীম দায়ী। 

এ বিষয়ে কোতয়ালি থানার পরিদর্শক (অপারশেনস) সামসুদ্দোহা জানিয়েছেন, এলাকার লোকজন তিশা নামে এক শিশুর লাশ উদ্ধার করেছে। হাত হাত বাঁধা ছিল। লাশ উদ্ধার করে হাসপতালের নেয়া হয়েছে। সে ধর্ষণ হয়েছিল কি-না তা ময়নাতদন্ত রিপোর্ট ছাড়া জানা যাবে না। 

Scroll to Top