প্রথমে বাবার মৃত্যু, পরে একই দিনে স্ত্রী ও জামাইয়ের। অবশিষ্ট দুই ভাইয়ের মধ্যে এক ভাই রোববার সকালে মারা যায়। অপর ভাই রংপুর মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে মারা যান রাত সাড়ে ৯টায়।
মাত্র ২০ দিনের ব্যবধানে ঠাকুরগাঁওয়ের বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার ধনতলা ইউনিয়নে ভান্ডারদহ মরিচপাড়া গ্রামে একই পরিবারের ৫ জনের মৃত্যু হয়েছে।
গত ৯ ফেব্রুয়ারি প্রথমে বাবা আবু তাহের (৫৫) মারা যান। আবু তাহেরের বয়ষ বেশি হওয়ার কারণে বিষয়টি তেমন গুরুত্বের সঙ্গে নেয়নি তার পরিবার।
এরপর গত বুধবার আবু তাহেরের জামাই সদর উপজেলার রুহিয়া থানার কুজিশহর গ্রামের কহিম উদ্দীনের ছেলে হাবিবুর রহমান বাবলু (৩৫) একইভাবে আক্রান্ত হয়। পরে বৃহস্পতিবার সকালে ৯টার দিকে রংপুর মেডিকেলে বাবলু মারা যায়। জামাইয়ের এই মৃত্যুর সংবাদ শোনার কিছুক্ষণ পরই আবু তাহেরের স্ত্রী হোসনেয়ারা বেগম (৪৫) একই রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান।
এরপর রবিবার সকালে একই রোগে আক্রান্ত হয় আবু তাহেরের দুই ছেলে ইউসুফ আলী (২৭) ও মেহেদী হাসান (২৪)। তাদের দুজনকে রংপুর মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে নেয়ার পথে ইউসুফ মারা যায় এবং মেহেদী রাত সাড়ে ৯ টায় রংপুর মেডিকেলে মারা যায়।
এর আগে রংপুর হাসপাতালে রোগীর সঙ্গে থাকা জাহির উদ্দীন ও দুলাল হোসেন জানায়, ডাক্তার রোগীর মুখে মার্কস পড়িয়ে দিয়ে হাসপাতালে ভর্তি নিয়েছে। তবে কি রোগে আক্রান্ত মেহেদি সেটা এখনও কোন চিকিৎসক বলতে পারছেন না।
দুলাল জানায়, রাতে রংপুর হাসপাতালের সব চিকিৎসক এবং ঢাকার চিকিৎসকসহ আলোচনায় বসবে। তারপর এ রোগের আসল রহস্য সম্পর্কে জানা যাবে।
অন্যদিকে সকালে মৃত্যুবরণ করা ইউসুফের স্ত্রী কোহিনুর বেগম ও তার একমাত্র কন্যা সন্তান বালিয়াডাঙ্গী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
বালিয়াডাঙ্গী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ডা. মোর্শেদ মাসুম বিল্লাহ বলেন, ‘কোহিনুর ও তার কন্যা সন্তান বর্তমানে সুস্থ রয়েছে। আমরা নিবীড় পরিচর্যায় তাদের রেখেছি। আশা করছি কোন ভয় নেই। তবে কোন প্রকার সমস্যা হলে আমার পূর্ব প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছি।’
বালিয়াডাঙ্গী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাসুদুর রহমান বলেন, ‘উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. ফিরোজ জামান জুয়েলকে বিষয়টি দেখার জন্য বলা হয়েছে। তিনি সকালে মৃত্যুবরণ করা ইউসুফ আলীর প্রেসক্রিপশন সংগ্রহ করেছেন। কি কারণে এমন ঘটনা ঘটছে, বিশেষজ্ঞ ছাড়া আপাতত বলা যাচ্ছে না।’
ঠাকুরগাঁও জেলা প্রশাসক ড. কে এম কামরুজ্জামান সেলিম বলেন, ‘ঘটনার কথা শুনে উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও ঠাকুরগাঁও আধুনিক সদর হাসপাতালে সিভিল সার্জনকে অবগত করা হয়েছে। তার ধারণা, তারা সকলে অজ্ঞাত রোগে আক্রান্ত হয়েছিলেন।’