সাড়ে ছয় বছর আগে রেহেনা পারভীনকে বিয়ে করে ঘরে আনেন গ্রামের বাসিন্দা মজিবর রহমান। তাদের দুটি সন্তান আছে। কিন্তু পরিবারে সুখ নেই। কারণ, স্বামীর যৌতুকের দাবি। ফরিদপুরের বোয়ালমারী উপজেলার ধরনিধরদী গ্রামের গৃহবধূ রেহেনা পারভীন।
বড় ছেলের জন্মের ছয় মাস পর থেকে মজিবর রহমান তার স্ত্রীর কাছে যৌতুকের দাবি করে আসছেন। কিন্তু টাকা দিতে ব্যর্থ হওয়ায় নির্যতন শুরু হয় রেহেনা পারভীনের ওপর। মজিবরকে সমর্থন দিয়ে রেহেনার উপর নির্যাতন শুরু করেন তার শাশুড়ি ও তিন ভাসুর। এর মধ্যে জন্ম হয় তাদের দ্বিতীয় সন্তানের।
গতকাল মঙ্গলবার সকালেও রেহেনাকে নির্যাতন করে তার স্বামীর পরিবার। তাকে মারধর করে একটি ঘরে অবরুদ্ধ করে রাখা হয়। হুমকি দেওয়া হয়, এ ব্যাপারে কোনো আওয়াজ তুললে তাকে মেরে ফেলা হবে।
এ ব্যাপারে জানতে পারেন উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা ইলা রানি কুন্ডু। ঘটনা যাচাই বাছাই করে তিনি বিষয়টি জানান উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ জাকির হোসেনকে।
তাদের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় সোমবার সন্ধ্যায় রেহেনাকে উদ্ধার করা হয়। পরে তাকে ভর্তি করা হয় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গিয়ে ঘটনার ব্যাপারে কথা হয় রেহেনা পারভীনের সঙ্গে। তিনি জানান, প্রথম সন্তান জন্মের পর থেকেই যৌতুকের দাবিতে তার স্বামী মজিবর রহমান,শাশুড়ি শবজান বেগম ও তিন ভাসুর- ফরিদ শেখ, আফসার শেখ, আজিজার শেখ তার উপর নির্যাতন শুরু করেন। যৌতুক দিতে অপরাগ হওয়ায় তাকে মারধোর করা হতো। গতকাল সকালেও তাকে মারধর করে একটি ঘরে বন্দি করে রাখেন তারা।
ইউএনও মোহাম্মদ জাকির হোসেন সংবাদমাধ্যমকে বলেন, ‘উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা ইলা রানি কুন্ডুর কাছে বিষয়টি জানতে পেরে ধরনিধরদী গ্রামের একটি ঘর থেকে আহত অবস্থায় রেহেনা পারভীনকে আমরা উদ্ধার করি। পরে তাকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়।’
তিনি জানান, নির্যাতিত রেহেনা আইনানুগ সহায়তা চাইলে তাকে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সব ধরনের সহযোগিতা প্রদান করা হবে।