কেনো ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠেছে ঢাকা-মাওয়া এক্সপ্রেসওয়ে?

বেপরোয়া গতি আর ওভারটেকিং-এ ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠেছে ঢাকা-মাওয়া এক্সপ্রেসওয়ে। প্রায়ই দুর্ঘটনা ঘটছে। হাইওয়ে পুলিশের হিসাবে গত এক সপ্তাহে মুন্সিগঞ্জ অংশে সড়ক দুর্ঘটনায় মারা গেছে ৮ জন। আর এক বছরে এই সংখ্যা অর্ধশতাধিকেরও বেশি। কিন্তু কেনো দুর্ঘটনাপ্রবণ ও ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠেছে এই ঢাকা-মাওয়া এক্সপ্রেসওয়ে?

ঢাকা-মাওয়া মহাসড়ক দিয়ে দ্রুত গতিতে যান চলাচলের দেশের প্রথম এক্সপ্রেসওয়ে। ৪ লেনের মূল এক্সপ্রেসওয়ের পাশে আরও ৪ লেনের সার্ভিস সড়ক। এছাড়াও আছে ফ্লাইওভার, আন্ডারপাস, ইন্টারচেঞ্জ, ওভার ব্রিজ। এরমধ্যেও প্রায়ই ঘটছে ছোট-বড় দুর্ঘটনা।

গত এক সপ্তাহেই মারা গেছে ৮ জন। হাইওয়ে পুলিশের হিসাবে, বছরজুড়ে মুন্সিগঞ্জ অংশে মোট ৪৬টি দুর্ঘটনা ঘটেছে, নিহত অর্ধশতাধিক ও আহত ১শরও বেশি মানুষ। অবশ্য ফায়ার সার্ভিসের দাবি দুর্ঘটনার সংখ্যা ৬৪। প্রতিনিয়ত এমন দুর্ঘটনায় শঙ্কিত যাত্রীরা।

স্থানীয়রা বলছেন, বেপরোয়া গাড়ির গতি ও ওভারটেকিংয়ের কারণে সড়ক দুর্ঘটনা বাড়ছে। চালকদের নিয়ন্ত্রণহীন গাড়ি চালালে তো এমন ঘটনা ঘটবে।

এক যাত্রী বলেন, দুর্ঘটনা ঘটার পরে দেখতে পায়, গাড়ির ফিটনেস–ড্রাইভিং লাইসেন্স থাকে না। এগুলো যদি আগে থেকে নোটিশ করা হয় তাহলে দুর্ঘটনা রোধ করা সম্ভব।

এদিকে নিষেধাজ্ঞা থাকলেও দেখা যায় যত্রতত্র পারাপার, পার্কিং, যাত্রী উঠানামাসহ ট্রাফিক আইন অমান্যের হিড়িক। নির্ধারিত গতিসীমা মানেন না বেশিরভাগ চালকেরা।

ঘণ্টায় সবোর্চ্চ ৮০ কি.মি গতিতে গাড়ি চলার কথা থাকলেও সরেজমিনে হাইওয়ে পুলিশের গতিমিটারে দেখা যায়, অধিকাংশ গাড়ি মানছে না এসব নির্দেশনা। একজন ট্রাফিক পুলিশ বলেন, কখনোই গাড়ির গতি ৮০ কি.মি. থাকে না। বাস, প্রাইভেটকার সবোর্চ্চ গতিতে চলে।

তবে চালকরা বলছেন ভিন্ন কথা, ঘন কুয়াশায় পথ দেখতে সমস্যা হয় তাই এসব দুর্ঘটনা ঘটছে। একজন বাসচালক বলেন, ঘন কুয়াশায় রাস্তায় গাড়ি পাকিং থাকে, তখন বিপরীর দিক থেকে আসা গাড়ি কুয়াশার জন্য খেয়াল করতে পারে না। যার ফলে দুর্ঘটনা ঘটছে।

মুন্সিগঞ্জ ফায়ার সার্ভিসের উপ-সহকারী পরিচালক মো: শফিকুল ইসলাম বলেন, দুর্ঘটনার পরে উদ্ধারে গিয়ে দেখতে পায় গাড়ি দুমড়ে-মুচয়ে গেছে। অতিরিক্ত গতি ছাড়া এভাবে দুমড়ে-মুচয়ে যাওয়া সম্ভব না।

হাসাড়া হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আব্দুল কাদের জিলানী বলেন, এক্সপ্রেসওয়েতে বেপরোয়া গতির কারণে আমরা প্রতি মাসে প্রায় ৩০০-৪০০ গাড়ির মালিককে মামলা দিয়ে থাকি। এছাড়াও ফিটনেস–ড্রাইভিং লাইসেন্সের দিকেও গুরুত্ব দেয়া হয় দুর্ঘটনারোধে।

উল্লেখ্য, ২০২০ সালে চালু হয় ঢাকা-মাওয়া এক্সপ্রেসওয়ে। এ বছর মুন্সিগঞ্জ অংশে শৃঙ্খলা ভঙ্গে সড়ক পরিবহণ আইনে মামলা করা হয়েছে ২ হাজার ৪শ’ ৬৯টি।

Scroll to Top