‘চিড়া-মুড়ি কত খাওয়া যায়?’

বন্যার পানি কমে আসায় ফেনীর ছাগলনাইয়া উপজেলার গোপাল ইউনিয়নের বাসিন্দা হোসনে আরা বেগম সাতদিন পর নিজের বসতঘরে ঢুকতে পেরেছেন। বন্যা আসার পর ছেলের বউকে নাতিসহ বাপের বাড়ি পাঠিয়ে এতদিন ধরে তিনি বাড়ির আঙিনার মাচায় বসবাস করছিলেন।

আজ বুধবার বাড়ির উঠানে জমে থাকা হাঁটুপানিতে দাঁড়িয়ে ষাটোর্ধ্ব এই নারী বলেন, ‘চিড়া-মুড়ি আর কত খাওয়া যায়? ঘরে চাল-ডাল আছে, কিন্তু চুলা নাই। সাতদিন পর ঘর থেকে পানি নেমেছে। কিন্তু চুলা এখনো পানি নিচে।’

কাছেই হোসনে আরার প্রতিবেশী আহমদ হোসেন ঘর থেকে ভিজে যাওয়া লেপ-তোষক বাসা থেকে বের করছিলেন। তিনি বলেন, ‘অধিকাংশ জিনিসপত্র নষ্ট হয়ে গেছে। যা আছে সেগুলো রক্ষার চেষ্টা করতেছি।’

একই ইউনিয়নের গৃহিনী নাসরিন সুলতানা ৮ দিন পর নিজের ঘরে ফিরেছেন। তিনি জানালেন, তাদের একতলা ভবনের প্রায় আট ফুট পর্যন্ত ডুবে গিয়েছিল। বেশিরভাগ জিনিসপত্র পানিতে ডুবে থাকার কারণে নষ্ট হয়ে গেছে। স্টিল ও লোহার তৈরি জিনিসপত্রগুলো টিকে আছে।

বন্যায় ছাগলনাইয়া উপজেলার ৮০-৮৫ শতাংশ এলাকা প্লাবিত হয়েছে। এর ভেতর সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন গোপাল ইউনিয়নের বাসিন্দারা।

ছাগলনাইয়ার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেল, ত্রাণবাহী গাড়ি দেখলেই দৌঁড়ে আসছেন স্থানীয়রা।

উপজেলার দুর্গাপুর মোড়ে একটি এমন একটি গাড়ির কাছে গিয়ে স্বেচ্ছাসেবকদের ত্রাণের প্যাকেট দেওয়ার জন্য কাকুতি-মিনতি করছিলেন বৃদ্ধ আহমদ মিয়া। বললেন, ‘ঘরে খাবার নেই। বাড়ি ভেতরের দিকে হওয়াতে সেখান পর্যন্ত ত্রাণ তেমন পৌঁছায় না। তাই রাস্তায় এসেছি।’

সকাল ১০টার দিকে ফেনী শহরে গিয়ে দেখা গেল, পানি নেমে গেছে। উদ্ধারের জন্য নিয়ে আসা নৌকাগুলো পড়ে আছে সড়কে।

Scroll to Top