ভারত বাঁধ খুলে দিয়ে বাংলাদেশের মানুষকে সংকটে মধ্যে ফেলেছে বলে মন্তব্য করেছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক হাসনাত আবদুল্লাহ। তিনি বলেছেন, রাষ্ট্র ‘সংস্কারের’ সময় বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ভারত আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হচ্ছে।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কর্মসূচি চলাকালে আহত ছাত্র-জনতাকে দেখতে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে গিয়ে বুধবার দুপুরে এ কথা বলেন হাসনাত আবদুল্লাহ। এ সময় তিনি দেশের বিভিন্ন জেলায় বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন।
ভারতের উদ্দেশে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের এই সমন্বয়ক বলেন, ‘আমাদের যখন পানির প্রয়োজন আপনারা পানি দিচ্ছেন না। আবার যখন পানির প্রয়োজন নেই আপনারা বাঁধ খুলে দিয়ে বন্যায় বাংলাদেশের মানুষকে সংকটের মধ্যে ফেলছেন।’
হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, ‘আমরা রাষ্ট্র সংস্কারের কাজে রয়েছি। যেখানে পার্শ্ববর্তী দেশ আমাদের সহায়তা করার কথা, সেখানে তারা বিভিন্ন আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হচ্ছে। যারা আন্তর্জাতিকভাবে বাংলাদেশের সংস্কারকে এবং পুনর্গঠনে বাধা দিতে চায়, তাদের আমরা ফ্যাসিবাদের দোসর হিসেবে চিহ্নিত করতে চাই।’
বন্যাদুর্গতদের সহায়তার আহ্বান জানিয়ে হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, ‘লক্ষ্মীপুর, ফেনী ও নোয়াখালীতে আমরা দেখেছি, বন্যার প্রকোপ বৃদ্ধি পাচ্ছে। আপনারা বন্যা আক্রান্ত মানুষের পাশে দাঁড়ান। ব্যক্তি ও গোষ্ঠী পর্যায় থেকে সংগঠিত হয়ে তাঁদের পাশে দাঁড়ান। কারণ, রাষ্ট্র পুনর্গঠন শুধু অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সিদ্ধান্তে সম্ভব নয়, আমাদের সমন্বিত উদ্যোগ দৃশ্যমান হলে সেটি সম্ভব হবে।’
শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর দ্রব্যমূল্য কমেছিল দাবি করে ছাত্র আন্দোলনের এই সমন্বয়ক বলেন, ‘শেখ হাসিনার যখন পতন হলো, তখন বাজার তদারকি করে দেখা যায়, দ্রব্যমূল্য ক্রমে কমেছে। এখন দেখা যাচ্ছে, নতুন কয়েকটি রাজনৈতিক দলের নিয়ন্ত্রণে আবার সেই সিন্ডিকেট গড়ে উঠছে।’
বাজার সিন্ডিকেটকে সতর্ক করে হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, ‘আমরা সেই সিন্ডিকেটকে সতর্ক করে দিতে চাই, আপনারা যদি জনমুখী কোনো সিদ্ধান্তের বাইরে গিয়ে সিন্ডিকেট কিংবা মাফিয়াতন্ত্র তৈরি করে বাজার ব্যবস্থাপনার মধ্যে কোনো ধরনের অসন্তুষ্টি তৈরি করেন, তাহলে ছাত্র-নাগরিক যেভাবে স্বৈরচারী শেখ হাসিনাকে গদি থেকে নামিয়েছিল, ঠিক একইভাবে এই মাফিয়াতান্ত্রিক সিন্ডিকেট রয়েছে, সেই সিন্ডিকেটগুলোকে ধ্বংস করবে।’
অন্তর্বর্তী সরকারকে সময় দেওয়ার আহ্বান করে এই সমন্বয়ক বলেন, ‘স্বাধীনতার ৫৩ বছর পরে বাংলাদেশের দ্বিতীয় জন্মে এসে আপনারা যদি আমাদের যথাযথ রাষ্ট্র পুনর্গঠনের সময় না দিয়ে গত ১৬ বছরের ব্যর্থতার দায়ভার আমাদের ওপর চাপিয়ে দিয়ে ব্ল্যাকমেইল করেন, তাহলে আমরা মনে করব, আপনারা আমাদের রাষ্ট্র গঠনে সহায়তা না করে ষড়যন্ত্র করছেন। সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের সবাইকে আহ্বান করব এই অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে পর্যাপ্ত সময় দিন।’
এ সময় অন্তর্বর্তী সরকারে ধর্ম উপদেষ্টা আ ফ ম খালিদ হোসেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক সারজিস আলম, মোহাম্মদ রাসেল আহমেদ, আস সুন্নাহ ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান আহমাদুল্লাহ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।