জামালপুরের সরিষাবাড়ী উপজেলায় খাল খনন প্রকল্পে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে সাবেক প্রতিমন্ত্রী ডা. মুরাদ হাসান এমপি ও ইউপি চেয়ারম্যান বেল্লাল হোসেনের সমর্থকদের সংঘর্ষে বন্ধ হয়ে গেছে জাইকার পানি নিষ্কাশন প্রকল্প। এ সময় ফাঁকা গুলির ঘটনা ঘটে।
গতকাল মঙ্গলবার (৫ এপ্রিল) দুপুরে উপজেলার আওনা ইউনিয়নের বাটিকামারী এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। ঘটনার পর থেকে বন্ধ হয়ে গেছে জাইকার অর্থায়নে সরকারি এ প্রকল্প।
সূত্র জানায়, চলতি অর্থ বছরে জাইকার অর্থায়নে আওনা ইউনিয়নের কাবারিয়াবাড়ি খাল-বড়বাইদ বিল পানি নিষ্কাশন প্রকল্প হাতে নেয় এলজিইডি। প্রায় ৬৬ লাখ টাকা ব্যয়ে ৫.২০০ কি.মি. দৈর্ঘ্যের এ প্রকল্প গত ১৪ মার্চ থেকে শুরু হয়। প্রকল্পটি কাবারিয়াবাড়ি-বড়বাইদ উন্নয়ন সমবায় সমিতি লিমিটেড বাস্তবায়নের দায়িত্ব পেলেও সার্বিক নিয়ন্ত্রণ করছেন আওনা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান বেল্লাল হোসেন।
স্থানীয়রা জানান, প্রকল্পে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে শুরু থেকেই চেয়ারম্যান বেল্লাল হোসেন ও সাবেক প্রতিমন্ত্রী মুরাদ হাসান এমপির লোকদের মধ্যে বিরোধ চলে আসছে। এর জের ধরে মঙ্গলবার (৫ এপ্রিল) দুপুরে স্থানীয় রিপন বেপারির নেতৃত্বে এমপির লোকজন প্রকল্প নিয়ন্ত্রণ নিতে যান। এ সময় ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি আবু বক্কর সিদ্দিকের নেতৃত্বে চেয়ারম্যানের লোকজন তাদের বাধা দেয়। এতে উভয়পক্ষের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টাধাওয়া চলে। এ সময় গুলিবর্ষণের ঘটনা ঘটে।
এমপি সমর্থিত রিপন বেপারি জানান, খাল খনন প্রকল্পে অনিয়ম হচ্ছে। জমির মালিকদের সঙ্গে কোনো সমন্বয় না করে প্রকল্পের লোকজন নিজেদের মতো করে কাজ করছে। বিষয়টি নিয়ে আমরা কথা বলতে গেলে আবু বক্কর সিদ্দিক দুই রাউন্ড ফাঁকা গুলি বর্ষণ করে।
এ বিষয়ে কাবারিয়াবাড়ি-বড়বাইদ উন্নয়ন সমবায় সমিতি লিমিটেডের সাধারণ সম্পাদক নুরুল ইসলাম অভিযোগ করেন, প্রকল্পের শুরু থেকেই রিপন বেপারির নেতৃত্বে কয়েকজন লোক তাদের কাছে চাঁদা দাবি করে আসছে। চাঁদা না দেওয়ায় তারা দলবল নিয়ে প্রকল্প এলাকায় হামলা চালায় এবং খাল খনন বন্ধ করে দেয়।
এদিকে অভিযোগ অস্বীকার করে সাবেক ছাত্রলীগ নেতা আবু বক্কর সিদ্দিক বলেন, কোনো গুলি বর্ষণের ঘটনা ঘটেনি। বরং এমপির লোকজন চাঁদার জন্য এসে সরকারি কাজ বন্ধ করে দিয়েছে।
আওনা ইউপি চেয়ারম্যান বেল্লাল হোসেন জানান, জাইকা প্রকল্পটি নির্ধারিত কমিটির মাধ্যমে প্রায় তিন কিলোমিটার সম্পন্ন হয়েছে। বাকি কাজ ব্যাহত করতে রিপন বেপারি, নজরুল, বাবুলসহ কতিপয় লোক প্রকল্প কমিটির সাধারণ সম্পাদকের কাছে চাঁদা দাবি করে এবং প্রাণনাশের হুমকি দেয়। ফলে বর্তমানে কাজ বন্ধ রয়েছে।
তারাকান্দি পুলিশ তদন্ত-কেন্দ্রের ইনচার্জ পরিদর্শক আব্দুল লতিফ বলেন, খাল খনন প্রকল্পে একপক্ষ অনিয়মের অভিযোগে কাজ বন্ধ করে দেয়। এতে দু\’পক্ষের মধ্যে উত্তেজনার সৃষ্টি হয়। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। এ ব্যাপারে লিখিত অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।