ঝালকাঠিতে বাস দুর্ঘটনার কারণ অনুসন্ধানে প্রাথমিকভাবে জানা গেছে, বাসটির চালক যাত্রীদের সঙ্গে তর্ক করতে গিয়ে নিয়ন্ত্রণ হারিয়েছিলেন।
দুর্ঘটনায় নিহত শাহীন মোল্লা নামে এক যাত্রীর ছোট ভাই ও ওই বাসের যাত্রী সালাম মোল্লা জানান, বাসে অতিরিক্ত যাত্রী নিতে নিষেধ করা হয়। এ নিয়ে চালক কিছু যাত্রীদের সঙ্গে বাকবিতণ্ডা শুরু করেন। এক পর্যায়ে গাড়ির নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে পুকুরে নামিয়ে দেন।
সালাম বলেন, ওই বাসে করে বাবাকে চিকিৎসা করাতে দুই ভাই বরিশাল যাচ্ছিলাম। কিন্তু ওই সড়ক দুর্ঘটনায় বড় ভাই ও বাবাকে হারালাম।
দুর্ঘটনার কারণ আরও খতিয়ে দেখতে প্রতিবেদকের কথা হয় দুর্ঘটনায় পড়া বাসটির আরও কয়েকজন যাত্রীর সঙ্গে।
তারা বলেন, স্থানীয়ভাবে ছড়ানো হচ্ছে- ইজিবাইককে সাইড দিতে গিয়ে বাসটি দুর্ঘটনার কবলে পড়ে। বিষয়টি সত্য নয়। তাদের দাবি, দুর্ঘটনার সময় বাসের সামনে বা পেছনে কোনো ইজিবাইক ছিল না। স্থানীয় বাস মালিক সমিতি এই সড়কে ইজিবাইকগুলো ইতিমধ্যেই নিয়ন্ত্রণে রেখেছেন। ইজিবাইক নিয়ে যারা ভুল তথ্য ছড়াচ্ছেন তাদের অন্য উদ্দেশ্য থাকতে পারে।
সালামের মতো তারাও বলেন, দুর্ঘটনার আগে চালকের সঙ্গে বাসে অতিরিক্ত যাত্রী তোলা নিয়ে তর্ক চলছিল। ওই বাসের ছাদেও যাত্রী ছিল।
তারা জানান, শনিবার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে পিরোজপুরের ভান্ডারিয়া থেকে ৪২ জনসহ বিভিন্ন স্টপেজ থেকে ৬০ জনের বেশি যাত্রী নিয়ে বরিশালের উদ্দেশে ছেড়ে যায় বাসটি। পথে দুর্ঘটনার কবলে পড়ে।
ঝালকাঠি সদর থানার অফিসার ইনচার্জ নাসির উদ্দিন সরকার বলেন, শনিবার সকালে ঝালকাঠি সদর উপজেলার ছত্রকান্দা এলাকায় এ সড়ক দুর্ঘটনা ঘটে। এতে তিন শিশু, আট নারী ও ছয় জন পুরুষসহ ১৭ জন নিহত হন। আহত হন অন্তত ৩০ জন। তাদের মধ্যে ২৩ জনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
তিনি জানান, দুপুর ১২টার দিকে বাসটি উদ্ধার করে পরিবারের কাছে লাশ হস্তান্তর করা হচ্ছে। দুর্ঘটনার পর তাৎক্ষণিক স্থানীয়রা উদ্ধারের চেষ্টা চালায়। পরে ফায়ার সার্ভিস ও পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে উদ্ধার অভিযান শুরু করে। প্রথমে ১৩ জন ও পরে আরও চারজনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। জীবিত ২৩ জনকে হাসপাতালে পাঠানো হয়। ঝালকাঠি সদর হাসপাতালের চিকিৎসক বৈশাখী বড়াল নিহত ও আহতদের সংখ্যা নিশ্চিত করেছেন।
এদিকে ওই সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত পিরোজপুরের ভান্ডারিয়ার আট জনের পরিবারকে স্থানীয় মিরাজুল ইসলাম ফাউন্ডেশনের পক্ষ থেকে ৫০ হাজার টাকা অনুদান দেওয়া হয়েছে।