ঈদুল ফিতর উপলক্ষে প্রায় দেড় কোটি মানুষ ঢাকা উত্তর, ঢাকা দক্ষিণ, গাজীপুর ও নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনসহ ঢাকা বিভাগের বিভিন্ন জেলা থেকে স্বজনদের কাছে যাচ্ছে; যার মধ্যে সড়কপথে যাবে ৬০ শতাংশ। এছাড়া ২০ শতাংশ করে যাবে যথাক্রমে নৌ ও রেলপথে। এ হিসাবে সড়কপথের যাত্রীসংখ্যা প্রায় ৯০ লাখ।
বৃহস্পতিবার ঢাকার গণমাধ্যমকর্মীদের সংগঠন শিপিং অ্যান্ড কমিউনিকেশন রিপোর্টার্স ফোরাম (এসসিআরএফ) ঈদ-পূর্ব এক প্রতিবেদনে এ তথ্য প্রকাশ করেছে। তবে সংশ্লিষ্ট সরকারি-বেসরকারি কোনো দপ্তরে এ সংক্রান্ত ‘পূর্ণাঙ্গ ডেটাবেজ’ না থাকায় প্রতিবেদনটি ‘শতভাগ তথ্যনির্ভর’ না-ও হতে পারে বলে জানিয়েছে সংগঠনটি।
প্রতিবেদনে বলা হয়, ১৩-২১ এপ্রিল পর্যন্ত ঈদপূর্ব ৯ দিনে বিপুলসংখ্যক মানুষকে সুশৃঙ্খলভাবে গন্তব্যে পৌঁছে দেওয়ার সক্ষমতা সড়ক পরিবহনখাতে নেই। জাতীয় মহাসড়কসহ বিভিন্ন সড়কের অনেক স্থানে ম্যানুয়াল পদ্ধতিতে টোল আদায় করা হয়। দূরপাল্লার কয়েকটি সড়কের বিভিন্ন স্থানের বেহাল দশা। সারা দেশে উল্লেখযোগ্যসংখ্যক ঝুঁকিপূর্ণ বাঁক রয়েছে। এ ছাড়া এবার ঈদে মহাসড়কে মোটরসাইকেল চলবে। সব মিলিয়ে বাসের সময়সূচি বিপর্যয়, বিভিন্ন স্থানে দীর্ঘ যানজট ও অপ্রত্যাশিত দুর্ঘটনার ঝুঁকিও রয়েছে।
তবে ঈদযাত্রা নির্বিঘ্ন করতে সড়ক পরিবহনমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের নির্দেশনাসহ সরকারের বিভিন্ন সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন হলে সড়কে জনদুর্ভোগ কমবে বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়।
সর্বশেষ জনশুমারির বরাত দিয়ে প্রতিবেদনে বলা হয়, ঢাকা বিভাগে ৪ কোটি ৪০ লাখ মানুষ বাস করে। এর মধ্যে ঢাকা উত্তর ও ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন এলাকার জনসংখ্যা যথাক্রমে ৫৯ লাখ ৭৯ হাজার ৫৩৭ ও ৪২ লাখ ৯৯ হাজার ৩৪৫। দেশের প্রায় ৭৫ শতাংশ গার্মেন্টস শিল্প গাজীপুর অঞ্চলে হওয়ায় গাজীপুর মহানগরের জনসংখ্যা এখন প্রায় ৭০ লাখ। নারায়ণগঞ্জ মহানগরে বাস করে ২৫ লাখ মানুষ। এসব শহরের বাইরে তিন জেলায় আরও প্রায় ৫০ লাখ মানুষ বাস করে। এছাড়া নরসিংদী ও মানিকগঞ্জ জেলার জনসংখ্যা যথাক্রমে ২৬ ও ২০ লাখ।
এসসিআরএফ জানায়, ঈদুল ফিতর উপলক্ষে জনবহুল বড় শহরসহ শিল্প ও বাণিজ্যিক এলাকাগুলোর অন্তত ৫০ শতাংশ মানুষ বর্তমান আবাসস্থল ছেড়ে যায়। গবেষক, স্বেচ্ছাসেবী প্রতিষ্ঠান এবং পরিবহন বিষয়ক বিভিন্ন সংগঠনের তথ্য মতে, সব মিলিয়ে ঢাকা অঞ্চল ছেড়ে যায় প্রায় দেড় কোটি মানুষ।