হিরো আলমকে কেন্দ্র করে বগুড়ার নন্দীগ্রামে আওয়ামী লীগের দুই পক্ষের মধ্যে ঘটেছে মারামারির ঘটনা। বগুড়া জেলা পরিষদের সদস্য ও উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মুকুল মিঞা এবং বুড়ইল ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি কালিপদ প্রামানিক নিজ দলের কর্মীদের হাতে লাঞ্ছিত হয়েছেন বলে জানা গেছে।
গতকাল শুক্রবার (১০ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যায় নন্দীগ্রাম উপজেলার বুড়ইল ইউনিয়নের ধুন্দার বাজারে এ ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে থানা পুলিশ অভিযান চালিয়ে মেহের আলী ও রুবেল নামের দুইজনকে আটক করেছে। তাদের হেফাজতে থাকা একটি ধারালো চাকু উদ্ধার করা হয়েছে।
বগুড়া-৪ আসনে সদ্য সমাপ্ত উপনির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী আশরাফুল হোসেন ওরফে হিরো আলম বুড়ইল আওয়ামী লীগের সভাপতি কালিপদ প্রামানিকের এলাকার ভোট কেন্দ্রে পাস করার তর্কে এ ঘটনা ঘটেছে বলে জানিয়েছেন প্রত্যক্ষদর্শীরা।
স্থানীয় সুত্রে জানা গেছে, আওয়ামী লীগের শান্তি সমাবেশের প্রস্তুতির জন্য মাইক ভাড়া করতে ডেকোরেটর দোকানে যান ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি কালিপদ প্রামানিক। তাকে ডেকোরেটর দোকানে দেখে স্থানীয় আরেক আওয়ামী লীগ নেতা আমজাদ হোসেন হাসাহাসি করে বলতে থাকেন, \’আমার ধুন্দার ভোট কেন্দ্রে মশাল মার্কা পাস করালাম! তুমি কালিপদ কেমন আওয়ামী লীগ, তোমার বীরপলী ভোট কেন্দ্রে হিরো আলম পাস করলো\’। এসময় দুই আওয়ামী লীগ নেতা বাকবিতন্ডার একপর্যায়ে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে।
এ খবর ছড়িয়ে পড়লে কালিপদ ও আমজাদ অনুসারীদের মধ্যে উত্তেজনার পরই দুইপক্ষের মারামারি হয়। খবর পেয়ে জেলা পরিষদের সদস্য ও উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মুকুল মিঞা ঘটনাস্থলে গেলে তিনি নিজ দলের কর্মীদের হাতে লাঞ্ছিত হন।
তথ্যমতে, বগুড়া-৪ আসনের উপনির্বাচনে নন্দীগ্রামের ধুন্দার হাইস্কুল ভোট কেন্দ্রে আওয়ামী লীগের ১৪ দল মনোনীত রেজাউল করিম তানসেন (মশাল) ৩২০ ভোট পেয়ে ওই কেন্দ্রে পাস করেন এবং স্বতন্ত্র প্রার্থী হিরো আলম (একতারা) পেয়েছেন ৮৭ ভোট। ধুন্দার কেন্দ্রের ভোটার আমজাদ। তিনি বুড়ইল ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের গত সম্মেলনে ওয়ার্ড সভাপতি প্রার্থী ছিলেন। নির্বাচনে মশাল প্রতীকের পক্ষে কাজ করেছেন। একই ইউনিয়নের বীরপলী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে হিরো আলম (একতারা) ২৯৪ ভোট পেয়ে কেন্দ্রে পাস করেন এবং তানসেন (মশাল) ১১৬ ভোট পেয়েছেন। ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি কালিপদ প্রামানিক বীরপলী কেন্দ্রের ভোটার।
স্থানীয় কয়েকজন আওয়ামী লীগ ও যুবলীগ নেতারা জানান, উপনির্বাচনে মশাল ও কুড়াল প্রতীকের পক্ষে বিপক্ষে থাকা এবং হিরো আলমকে কেন্দ্র করে দুইজনের বাকবিতন্ডার পর মারামারি হয়েছে।
এ ব্যাপারে বগুড়া-৪ আসনের নবনির্বাচিত সংসদ সদস্য রেজাউল করিম তানসেন বলেন, আমজাদসহ তার লোকজন আমার (মশাল) জন্য অনেক পরিশ্রম করেছে। কালিপদ, আমজাদরা সবাই আওয়ামী লীগ ও ১৪ দলের লোক। বিষয়টি নিজেরা বসেই সমাধান করা ভালো।
এ প্রসঙ্গে নন্দীগ্রাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আনোয়ার হোসেন বলেন, সদ্য সমাপ্ত নির্বাচনের বিষয় নিয়ে এই ঘটনা ঘটেছে জেনেছি। অভিযান চালিয়ে দুইজনকে আটক করা হয়েছে।