পদ্মা সেতুর সুবাদে জাজিরার সবজি সুইজারল্যান্ডের পথে

শরীয়তপুর জেলার কৃষি রাজধানী খ্যাত জাজিরার সবজি পদ্মা সেতুর সফলতার হাত ধরে এখন ইউরোপের পথে। গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে জাজিরার মিরাশার চাষিবাজার থেকে সবজির প্রথম চালান রপ্তানি প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের সেন্ট্রাল প্যাকেজিং পরীক্ষাগারে পাঠানো হয়েছে। বিধি অনুযায়ী রপ্তানি প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে সব ঠিকঠাক থাকলে আজ বুধবার আকাশ পথে পাড়ি জমাবে সুইজারল্যান্ডের উদ্দেশ্যে। যে সকল কৃষি পণ্য রপ্তানি হবে তা বাংলাদেশের বাজার থেকে ২০ শতাংশ বেশি মুল্য পাবে বলে জানিয়েছে কৃষি বিভাগ। সফল ভাবে রপ্তানি শুরু হলে শরীয়তপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর ও জেলা প্রশাসনের উদ্যোগ জেলার কৃষি অর্থনীতিকে সমৃদ্ধ করে জাতীয় অর্থনীতিতেও ভূমিকা রাখবে বলে আশাবাদি কৃষকসহ সংশ্লিষ্টরা।

জাজিরা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মো: জামাল হোসেন বলেন, গত ২৭ ডিসেম্বর জাজিরার মিরাশার চাষিবাজারে নিরাপদ সবজি ও ফল রপ্তানিবিষয়ক একটি সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়। তারই ধারাবাহিকতায় রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠান বিএইচ ট্রেড ইন্টারন্যাশনাল লাউ, কাঁচা মরিচ ও কচুর একটি চালান সুইজারল্যান্ডে পাঠানোর আগ্রহ প্রকাশ করলে আমরা ৬৫ কেজি কাঁচা মরিচ, ৬৫টি কচু ও ২০টি লাউয়ের মান যাচাই করে বিএইচ ট্রেড ইন্টারন্যাশনালের মাধ্যমে সুইজারল্যান্ডে পাঠানোর প্রক্রিয়া শুরু করি। গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে কৃষি বিভাগের নিয়ামুযায়ী সবজি সমূহের মান যাচাই করে প্রথম চালান ঢাকার সেন্ট্রাল প্যাকেজিং পরীক্ষাগারে পাঠানো হয়। আমারা আশা করছি, কোন ব্যত্যয় না ঘটলে অদূর আগামীতে জাজিরার সবজি ইউরোপের বাজারে আস্থা অর্জন করবে।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর থেকে জানা গেছে, শরীয়তপুর জেলার ৬ উপজেলায় ৫ হাজার ৩৩০ হেক্টরে ফুলকপি, বাঁধাকপি, লাউ, করলা, শসা, কাঁচা মরিচ, আলু, ঢ্যাঁড়স, ঝিঙা, চিচিঙ্গা, কচু, শিম, টমেটোসহ বিভিন্ন সবজি ও আম, মাল্টা, ড্রাগন এবং পেয়ার সহ ১ হাজার ৮৬৩ হেক্টরে বিভিন্ন জাতের ফল আবাদ হয়েছে।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক ড. রবিআহ নুর আহমেদ বলেন, কৃষি অর্থনীতিকে এগিয়ে নিতে বর্তমান কৃষি বান্ধব সরকারের আন্তরিকাতায় আজ কৃষি বাণিজ্যিকীকরণ প্রক্রিয়া গতিশীল। তারই ধারাবাহিকতায় নতুন মাত্রা যোগ করল শরীয়তপুরের সবজি রপ্তানি প্রক্রিয়া শরীয়তপুরের সবজি ও ফল বিদেশের বাজারে অবাধ বিচরণের জন্য আমরা অত্যন্ত আন্তরিকতার সাথে কাজ করে যাচ্ছি। আমরা আশাবাদি জাজিরা সহ শরীয়তপুরের কৃষি পণ্য রপ্তানির মাধ্যমে দেশের জাতীয় অর্থনীতিতে ভূমিকা রাখবে।

জেলা প্রশাসক মো: পারভেজ হাসান বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থাকে বলেন, পদ্মা সেতু বাস্তবায়নের ফলে দেশের দক্ষিণ বঙ্গসহ জাতীয় অর্থনীতিতে যে নতুন ধারা শুরু হয়েছে আমরা আশাবােিদর আমাদের প্রচেষ্টা সফলতার দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। জাজিরার সবজি দিয়ে রপ্তানির এ পথ চলায় পর্যায়ক্রমে শামিল হবে শরীয়তপুরের আম, মাল্টা ও ড্রাগনসহ নানা ফল। যার মাধ্যমে শরীয়তপুরের কৃষি পাবে নতুন মাত্রা। এ অগ্রযাত্রাকে এগিয়ে নিতে জেলা প্রশাসন সকল ধরণের সহায়তার হাত বাড়িয়ে দেবে।

সংবাদ সূত্রঃ বাসস