কাশিয়ানী উপজেলায় খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির ডাটাবেজে অন্তর্ভুক্তিতে অনিয়ম

ফরিদপুর গোপালগঞ্জের কাশিয়ানীতে হতদরিদ্রদের খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির ডিজিটাল ডাটাবেজে অন্তর্ভুক্তির জন্য টাকা আদায়, স্বজনপ্রীতিসহ নানা অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে।

কাশিয়ানী উপজেলা রাজপাট ইউনিয়নের খাদ্যবান্ধব কর্মসূচি চালের ডিলার এমএম নাসির ও ইব্রাহিম মোল্যা এবং নারী ইউপি সদস্য লিপি বেগমের বিরুদ্ধে এসব অভিযোগ উঠেছে। খাদ্যবান্ধব কর্মসূচি চালের ডিলার ইব্রাহিম মোল্যা রাজপাট ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সহসভাপতি।

খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির আওতায় কাশিয়ানী উপজেলার ১৪টি ইউনিয়নে ১১ হাজার ৬০০ উপকারভোগী স্বল্পমূল্যে সরকারি চাল পান, তথ্যটি খাদ্য নিয়ন্ত্রকের কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে । ২০২২ সালে খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির ডিজিটাল ডাটাবেজ প্রণয়নের সিদ্ধান্ত নেয় সরকার।

সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী কাশিয়ানী উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রকের কার্যালয় থেকে উপকারভোগীদের ডিজিটাল ডাটাবেজ তৈরি এবং কার্ডধারী মৃত ও সচ্ছল ব্যক্তিদের নাম পরিবর্তন করে প্রকৃত দরিদ্র, ভূমিহীন কৃষক, দিনমজুর, উপার্জনে অক্ষম ব্যক্তিদের নাম ডিজিটাল ডাটাবেজে অন্তর্ভুক্ত করার নির্দেশ দেওয়া হয়।

টাকা আদায়, স্বজনপ্রীতিসহ নানা অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে, কাশিয়ানী উপজেলা রাজপাট ইউনিয়নের খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির ডিলার এমএম নাসির ও ইব্রাহিম মোল্যা নতুন সংশোধিত উপকারভোগীদের ডিজিটাল ডাটাবেজে অন্তর্ভুক্তির নামে প্রত্যেকের কাছ থেকে ৩০০ টাকা করে আদায় করছেন। এছাড়া অর্থের বিনিময় ও স্বজনপ্রীতি করে ডিলাররা তাদের নিজস্ব লোকজনের নাম ডাটাবেজে অন্তর্ভুক্ত করেছেন বলে অভিযোগ ভুক্তভোগীদের। রাজপাট ইউনিয়নে ২০৪টি নতুন (সংশোধিত) কার্ড অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।

কাশিয়ানী উপজেলা রাজপাট ইউনিয়নের বোরহান খন্দকার নামে একজন উপকারভোগী অভিযোগ করে বলেন, নারী ইউপি সদস্য লিপি বেগম আমার নাম কেটে তার স্বামী সোহরাফ আলীর নাম অন্তর্ভুক্ত করেছেন। এছাড়া নারী ইউপি সদস্য লিপি বেগম স্বজনপ্রীতি করে তার কাছের লোকজনের নাম তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করেছেন।

এ ব্যাপারে রাজপাট ইউনিয়নের ৪, ৫ ও ৬ নং ওয়ার্ডের নারী ইউপি সদস্য লিপি বেগম তার স্বামী সোহরাব মোল্যার নাম অন্তর্ভুক্তির কথা স্বীকার করে বলেন, আমার স্বামীসহ নতুন ৭ জনের নাম তালিকায় দিয়েছি। আর এ জন্য ডিলার নাসিরকে ৩০০ করে টাকা দিতে হয়েছে।

খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির ডিলার এম এম নাসির টাকা নেওয়ার কথা স্বীকার করে খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির ডিলার এম এম নাসির বলেন, ‘৩শ টাকা নেওয়া হয়নি। তবে স্বীকার করেন প্রসেসিং ও অফিস খরচ বাবদ ২০০ করে টাকা নেওয়া হয়েছে। কাশিয়ানী উপজেলা খাদ্য অফিসে টাকা দেওয়া লাগে তো। অফিসে টাকা না দিলে কি তারা ফাইল নিয়ে দৌড়াদৌড়ি করে না।

টাকা নেওয়ার কথা সম্পূর্ণ মিথ্যা দাবি করেন কাশিয়ানী উপজেলা খাদ্য কর্মকর্তা মো. আমিনুল ইসলাম বলেন, এসবের দায়-দায়িত্ব ইউনিয়ন চেয়ারম্যান-মেম্বারদের। এখানে শুধু তদারকির দায়িত্ব আমাদের। ইউএনও বিষয়টি আমাকে জানিয়েছেন। আমি সরেজমিনে গিয়ে বিষয়টি তদন্ত করব।

কাশিয়ানী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. মেহেদী হাসান বলেন, এ বিষয় তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। অনিয়মের অভিযোগ সত্যতা পেলে ডিলারশিপ বাতিল করা হবে।