ভাড়া পুনর্নির্ধারণের পর সড়কে চলছে বাস

ডিজেলচালিত দূরপাল্লার বাস ও নগর পরিবহনের ভাড়া নতুন করে বাড়িয়ে পুনর্নির্ধারণের পর দেশের বিভিন্ন অংশে শুরু হয়েছে বাস চলাচল। বাংলাদেশ বাস-ট্রাক ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন ও পরিবহন মালিকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, তেলের দাম বাড়ার পরিপ্রেক্ষিতে রোববার রাজধানীর বিআরটিএ ভবনে অনুষ্ঠিত বৈঠকে বাসের ভাড়া পুনর্নির্ধারণের পর গতকাল সন্ধ্যা ৭টার দিকে সড়ক মহাসড়কে শুরু হয় বাস চলাচল।

বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির মহাসচিব এনায়েত উল্লাহ ওই বৈঠকের পর সারা দেশে পরিবহন মালিক-শ্রমিকদের ধর্মঘট তুলে নিয়ে বাস চালানোর আহ্বান জানান। তিনি বলেন, ‘আমার আহ্বান থাকবে এখন থেকে বাস ধর্মঘট প্রত্যাহার করা হোক। আমি বাসের মালিকদের অনুরোধ করব, ধর্মঘট প্রত্যাহার করে যেন দেশে স্বাভাবিক অবস্থা হয়। সব জেলা থেকে যেন বাস চলাচল স্বাভাবিক হয়।’

বৈঠকের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, প্রতি কিলোমিটারে এক টাকা ৪২ পয়সা থেকে বেড়ে এক টাকা ৮০ পয়সা হয়েছে দূরপাল্লার বা‌সের ভাড়া। আর মহানগরে বাসের ভাড়া প্রতি কিলোমিটারে এক টাকা ৭০ পয়সা থেকে বেড়ে দুই টাকা ১৫ পয়সা হয়েছে।

তবে নতুন এই সিদ্ধান্তে বাড়ানো হয়নি সিএনজি চালিত বাস ভাড়া। বিআরটিএ চেয়ারম্যান নুর মোহাম্মদ মজুমদার জানান, মহানগরে বাসের সর্বনিম্ন ভাড়া ১০ টাকা মিনিবাসে ৮ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।

এর আগে, রোববার রাজধানীর মহাখালীতে বিআরটিএ ভবনে সকাল সাড়ে ১১টার দিকে পরিবহন মালিক ও বিআরটিএ কর্মকর্তাদের মধ্যে বৈঠক শুরু হয়। বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন বিআরটিএ চেয়ারম্যান নূর মোহাম্মদ মজুমদার। পরিবহন মালিক সংগঠনের নেতাকর্মীরা বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন।

উল্লেখ্য, গত বুধবার রাতে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে ডিজেল ও কেরোসিনের দাম বাড়ানোর ঘোষণা দেয় জ্বালানি মন্ত্রণালয়। লিটারে দাম বাড়ে ১৫ টাকা। রাতেই তা কার্যকর হয়। এর ফলে ডিজেল ও কেরোসিন তেলের নতুন দর হয় প্রতি লিটার ৮০ টাকা, যা আগে ছিল ৬৫ টাকা। ডিজেল ও কেরোসিনের দাম বাড়ানোর পর বাসভাড়া বাড়ানোর দাবিতে শুক্রবার থেকে রাজধানীসহ সারা দেশে বাস চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। পণ্যবাহী যান বন্ধ রাখার ঘোষণা দেন মালিক ও শ্রমিকরা।

গত চার দিনের অঘোষিত এই পরিবহন ধর্মঘটে দেশ কার্যত অচল হয়ে পড়ে। যারা ঘর থেকে বের হয়েছেন, তারা সীমাহীন ভোগান্তিতে পড়েন। চরম দুর্ভোগ ছিল পথে পথে। শিশু ও বয়স্কদের পড়তে হয় সবচেয়ে খারাপ অবস্থায়। ভর্তি ও চাকরির নিয়োগ পরীক্ষায় অংশগ্রহণকারীরা পড়েন আরও বিপাকে। কয়েক গুণ ভাড়া দিয়ে বিকল্প উপায়ে তারা কেন্দ্রে পৌঁছেন।

যাত্রীবাহী যান চলাচল বন্ধ থাকায় অফিসগামী মানুষও পড়েন চরম ভোগান্তিতে। রাজধানীর বিভিন্ন সড়কে বাস না পেয়ে অফিসগামীদের দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায়। সিএনজিচালিত অটোরিকশা, রিকশা, লেগুনা চলাচল করলেও তা ছিল প্রয়োজনের তুলনায় অনেক কমল। এ সুযোগে এসব যানবাহনে নেওয়া হয় বেশি ভাড়া। বাধ্য হয়ে অতিরিক্ত ভাড়া দিয়ে গন্তব্যে পৌঁছেন যাত্রীরা।

Scroll to Top