আল্লাহর দান, বাবার দোয়া, মায়ের দোয়া পরিবহন অথবা বাবা-মায়ের দোয়া; এমন নামের সঙ্গে আমরা সবাই পরিচিত। বাবা-মায়ের জায়গায় বউ যুক্ত হলে সেটা বিস্ময়করই বটে!
সচরাচর গাড়িতে বা যে কোনও যানবাহনে বাবা-মায়ের দোয়া পরিবহন লেখা চোখে পড়লেও এবার এর ব্যতিক্রম লেখা চোখে পড়েছে চুয়াডাঙ্গা শহরে। ইজিবাইকের (ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা) পেছনে লেখা `বউয়ের দোয়া পরিবহন\’। এ লেখাটা চুয়াডাঙ্গা শহরে বেশ সাড়া ফেলেছে এবং আলোচনারও জন্ম দিয়েছে।
মাসুম মিয়া (৩০) চুয়াডাঙ্গা পৌর শহরের ৭নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা। তার মালিকানাধীন ১১টি ইজিবাইক \’বউয়ের দোয়া পরিবহন\’ নামে চুয়াডাঙ্গা শহরে চলাচল করছে। তিনি নিজে একটি চালান এবং অন্য ১০টি ভাড়ায় দিয়েছেন।
মাসুম মিয়া জানান, তিনি ১২ বছর মালয়েশিয়ায় ছিলেন। গত বছরের (২০২০) ডিসেম্বর মাসে তিনি দেশে ফিরেছেন। মালয়েশিয়াতে ১২ বছর থাকা অবস্থায় তিনি যে টাকা আয় করেছেন, দেশে ফিরে সে টাকা দিয়ে তিনি ১১টি ইজিবাইক কিনেছেন।
বর্তমানে ১১টি ইজিবাইক থেকে যে টাকা আয়-রোজগার হয় সে টাকা দিয়ে বাবা-মাসহ তার তিন সদস্যের পরিবারের খুব ভালো মতো চলে যায় এবং বেশকিছু টাকা অবশিষ্ট থাকে।
অবাক করার বিষয় হলো ব্যক্তিগত জীবনে এখনও অবিবাহিত মাসুম মিয়া। অবিবাহিত হয়েও তিনি তার মালিকানাধীন ১১টি ইজিবাইকের পেছনে কেন \’বউয়ের দোয়া পরিবহন\’ লিখেছেন, এ ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ইজিবাইকগুলো কেনার পর যে নামই রাখতে গিয়েছি, পরে দেখছি ওই নামে কোনো না কোনো পরিবহন রয়েছে। পরে বন্ধু এবং স্বজনদের সাথে আলাপ করে \’বউয়ের দোয়া পরিবহন\’ নাম রেখেছি।
তিনি জানান, \’জন্মদাতা বাবা-মায়ের পরই সবচেয়ে আপন হলো বউ এবং ভালোবাসার মানুষ। বিয়ের পর সংসারের ভালো-মন্দ আমার পরই বউই দেখাশোনা করবে।\’
মাসুম মিয়া জানান, \’বিদেশে গিয়ে বিয়ের বয়স প্রায় ১০ বছর পেরিয়ে গেছে। বাবা-মায়ের পচ্ছন্দের পাত্রীকে খুব শীঘ্রই বিয়ে করে নতুন জীবন শুরু করবো। বিদেশ যাবার আর ইচ্ছা নেই। বিয়ে করে বাবা-মা ও স্ত্রীকে নিয়ে বাকি জীবন দেশে কাটিয়ে দিতে চাই।\’ মাসুম মিয়া বলেন, \”বউয়ের দোয়া পরিবহন\” চুয়াডাঙ্গা শহরে তার আলাদা একটা পরিচিতি এনে দিয়েছে।