পৃথিবীর দীর্ঘতম প্রাকৃতিক সমুদ্র সৈকত কক্সবাজার সমুদ্রসৈকতে অভুক্ত থেকে ঘোড়ার মৃত্যুসহ নানা কারণ জানতে চেয়ে সচিবসহ ১৩ সরকারি কর্মকর্তাকে আইনি নোটিশ পাঠিয়েছে বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতি (বেলা), ইয়ুথ এনভায়রনমেন্ট সোসাইটি (ইয়েস) ও পিপল ফর অ্যানিমেল ওয়েলফেয়ার ফাউন্ডেশন (পাউ)।
গতকাল রোববার (৩০ মে) বেলার আইনজীবী সাঈদ আহমেদ কবীর স্বাক্ষরিত ওই নোটিশ দেওয়া হয়েছে। সেখানে আগামী পাঁচ দিনের মধ্যে ওই নোটিশের জবাব দিতে বলা হয়েছে। তা নাহলে আইনগত পদক্ষেপ নেওয়ার হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়েছে সচিবসহ বিভিন্ন সরকারি দপ্তরের ১৩ কর্মকর্তা বরাবর পাঠানো নোটিশে।
এ তথ্য নিশ্চিত করে ইয়েসের প্রধান নির্বাহী ইব্রাহিম খলিল মামুন গণমাধ্যমকে জানান, গতকাল বিকেলে ডাকযোগে ওই নোটিশ পাঠানো হয়েছে এবং প্রাপ্তির পাঁচ দিনের মধ্যে জবাব দিতে বলা হয়েছে।
জানা গেছে, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব, পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তনবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব, পরিবেশ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক, প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক, বাংলাদেশ পর্যটন করপোরেশনের চেয়ারম্যান, বাংলাদেশ ভেটেরিনারি কাউন্সিলের সভাপতি, কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক, কক্সবাজারের পুলিশ সুপার, কক্সবাজার পৌরসভার মেয়র, জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা, উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা, পরিবেশ অধিদপ্তরের উপপরিচালক ও কক্সবাজার সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বরাবর ওই নোটিশ পাঠানো হয়েছে।
ডাকযোগে পাঠানো ওই নোটিশে বলা হয়েছে, ‘প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের লীলাভূমি কক্সবাজার সমুদ্রসৈকত ভ্রমণে আসেন বহু পর্যটক। বিনোদনের অংশ হিসেবে দেশি-বিদেশি অনেক পর্যটক ঘোড়ায় চড়েন। এই কাজে ব্যবহার করা হয় দুই শতাধিক ঘোড়া। করোনা মহামারিতে পর্যটকের সংখ্যা কমে যাওয়ায় কক্সবাজারে বছরব্যাপী আর্থিক জোগানের উৎস ঘোড়াগুলো খাদ্যের অভাবে মারা যাচ্ছে। ঘোড়ার মালিক ও তত্ত্বাবধায়করা ঘোড়ার খাদ্য জোগান না দিয়ে ঘোড়াগুলোকে রাস্তায় ছেড়ে দিচ্ছেন।’
দেশের প্রচলিত আইন অনুযায়ী, কোনও প্রাণীকে প্রয়োজনীয় খাদ্য না দেওয়া এবং অসুস্থ অবস্থায় লোকালয়ে মুক্ত করে দেওয়া প্রাণীর প্রতি নিষ্ঠুর আচরণ হিসেবে গণ্য হবে এবং তা দণ্ডনীয় অপরাধ।
তাই কক্সবাজারে থাকা ঘোড়া, ঘোড়ার মালিক ও তত্ত্বাবধায়কদের তালিকা বানিয়ে ঘোড়াগুলোর জন্য নিরাপদ আবাসন ও খাদ্য নিশ্চিতের দাবি জানানো হয় এবং বলা হয়, নিষ্ঠুর আচরণ করা ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে শাস্তির দাবির পাশাপাশি ঘোড়াগুলোর জন্য চারণভূমি সংরক্ষণের কথাও।
ঘোড়া মালিক সমিতির তথ্য অনুযায়ী, গত বছরের মার্চ থেকে দ্বিতীয় দফার লকডাউনে অন্তত ৩০টি ঘোড়ার মৃত্যু হয়েছে।
উল্লেখ্য, কক্সবাজারে ঘোড়া ছিল ৮০টি। দুই দফায় লকডাউনে ৩০টি ঘোড়া মারা যাওয়ায় এখন তা নেমে এসেছে পঞ্চাশে। তবে সৈকতে ঘোড়া নিয়ে জীবিকা নির্বাহের অনুমোদন রয়েছে মাত্র ২৭টির।