চট্টগ্রামে তিন মাসের ঘর ভাড়া বকেয়া থাকায় এক ভাড়াটিয়াকে তাড়িয়ে দিয়েছেন জমিদার। ফলে বাধ্য হয়ে শিশুদের নিয়ে ওই পরিবারকে সারারাত কাটাতে হয়েছে ফুটপাতে।
কঠোর লকডাউন চলাকালে গতকাল বৃহস্পতিবার (১৫ এপ্রিল) সকাল ১০টার দিকে নগরের লালখান বাজার দুবাই কলোনিতে এ ঘটনা ঘটে।
ঘটনার শিকার শ্রীধাম দেবনাথ বলেন, কলোনির একটি বাসায় দীর্ঘদিন ধরে আমরা বসবাস করে আসছি। আমার বড় ভাই চট্টগ্রাম ওয়াসায় চুক্তিভিত্তিক চাকরি করতেন। এসময়ে পানির মোটর বসাতে অনুমতির জন্য বাসার মালিক মো. মোস্তফা তাকে ৩০ হাজার টাকা দেন। সে টাকা আমার ভাই ওয়াসার জনৈক কর্মচারীকে দিয়ে মোটর বসানোর অনুমতি নেওয়ার চেষ্টা করেন। এর মধ্যে তার চাকরির মেয়াদ শেষ হয়ে গেলেও সেই কাজ করা যায়নি। আমার ভাই কয়েকবার ধরনা দিয়েও টাকা ফেরত পাননি। এতে বাসার মালিক ক্ষুব্ধ ছিলেন।
তিনি বলেন, করোনার সংক্রমণ শুরু হলে আমার ভাই কর্মহীন হয়ে পড়েন। আমি টিউশনি করে সংসার চালাতাম। সেটাও এখন বন্ধ। এর মধ্যে তিন মাসের ভাড়া ২১ হাজার টাকা পরিশোধ করতে পারিনি। তাই মালিক ঘরে তালা দিয়েছেন। আমার ভাই কাজের সন্ধানে বাইরে আছেন। এ অবস্থায় বৃদ্ধা মা, বৌদি ও দুই ভাইপোকে নিয়ে সারাদিন ঘরের সামনে অবস্থান করেও মালিককে বুঝাতে পারিনি। ঘরে ঢুকতে না পেরে সারারাত ওয়াসার মোড়ে ফুটপাতে বসেছিলাম। শুক্রবার (১৬ এপ্রিল) সকালে পুলিশের এডিসি ফোনে বিষয়টি জেনে পুলিশ পাঠিয়ে দুপুর ১২টার দিকে আমাদেরকে বাসায় তুলে দেন।
তবে যোগাযোগের চেষ্টা করেও বাসার মালিক মো. মোস্তফার বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের এডিসি (উত্তর) আবু বক্কর সিদ্দিক বলেন, করোনাকালে এমন ঘটনা অমানবিক। আমি বিষয়টি জেনে দ্রুত তাদের ঘরে তুলে দেওয়ার ব্যবস্থা করেছি। ভাড়া বাকি থাকতেই পারে। তাই বলে এভাবে ঘর থেকে বের করে দেওয়া উচিত হয়নি। খুলশী থানা পুলিশ মধ্যস্ততা করছে। কিস্তিতে বকেয়া ভাড়ার টাকা পরিশোধ করার কথা বলা হয়েছে পরিবারটিকে। এমন ঘটনার পুনরাবৃত্তি যাতে না হয়, সে ব্যাপারে বাসার মালিককে সতর্ক করা হয়েছে।