পূর্ব বাংলাদেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় হামলা, ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ ও সহিংসতার ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে হেফাজতে ইসলামের কর্মী-সমর্থকসহ নতুন করে আরও ৬০ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
সোমবার (১২ এপ্রিল) জেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে তাদের গ্রেফতার করা হয়। এ নিয়ে ওই ঘটনায় এখন পর্যন্ত ১৬৮ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। গ্রেফতারদের মধ্যে বিএনপি, জামায়াত ও হেফাজতের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি আছেন।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ ও প্রশাসন) মো. রইছ উদ্দিন বলেন, ২৪ ঘণ্টায় পুলিশের বিশেষ অভিযানে ৬০ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাদের মধ্যে বিএনপি, জামায়াত ও হেফাজতের কর্মী-সমর্থকদের গুরুত্বপূর্ণ ১৬ জন আছেন।
ভিডিও ফুটেজ দেখে ও সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে তাদের গ্রেফতার করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার। তিনি বলেন, ভিডিও ফুটেজ দেখে সব আসামি গ্রেফতার করা হয়েছে। সহিংসতার সময়ে যে ভিডিও এবং স্থির চিত্র ধারণ করা হয়েছে, তা দেখে আসামিদের শনাক্ত করছি। প্রতিনিয়ত সেগুলো পর্যালোচনা করা হচ্ছে। অভিযান অব্যাহত থাকবে।
গ্রেফতারদের মধ্যে ১৬ জনের পরিচয় জানা গেছে, তারা হলেন— নবীনগর উপজেলা বিএনপির সদস্য সফিউল্লাহ মিয়া (৪০), ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলা ছাত্রদলের সাবেক আহ্বায়ক শিমরাইলকান্দির বাসিন্দা কামরুল হাসান (২৮), ছাত্রদলের সদস্য শহরের বণিকপাড়ার বাসিন্দা মো. পলাশ (২৬), হেফাজতের সমর্থক পৌর এলাকার ফুল মিয়া (৩৩), নয়নপুর এলাকার রফিকুল ইসলাম (৩০), পুনিয়াউট উত্তরপাড়া মো. মেরাজ (১৯) ও মো. আশিক (২০), পুনিয়াউটের জুনাইদ (২১), পশ্চিম মেড্ডার দুলাল মিয়া (৩৯), সদর উপজেলার বিহাইর এলাকার শাহজাহান মিয়া (৫১), সোহাতা গ্রামের রাকিবুল হাসান (২৩), বিরাসার দক্ষিণপাড়ার মো. শামীম (৩০), মো. সুজন (২২) ও রবিন মিয়া (১৮), নাসিরনগর উপজেলার ধরমণ্ডলের দুলাল মিয়া (২৯) ও শহরের মধ্যপাড়ার বাসিন্দা জামায়াতকর্মী লিয়াকত আলী (৩৫)। তাদের মধ্যে শাহজাহান জেলা পুলিশলাইনসে আক্রমণ করেছিল।
জেলা পুলিশের পাঠানো তথ্য অনুযায়ী, ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় গত ২৬ থেকে ২৮ মার্চ পর্যন্ত হামলা, ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ ও সহিংসতার ঘটনা ঘটে। হেফাজতে ইসলামের কর্মী-সমর্থকেরা ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞ চালায়। এসব ঘটনায় এখন পর্যন্ত ৪৯টি মামলা হয়েছে। মামলায় ৩৮ হাজারের বেশি আসামি করা হয়। তাদের মধ্যে ২৮৮ জনের নাম উল্লেখ করা হয়। বাকি সবাই অজ্ঞাতনামা।