মেহেরপুরের গাংনী উপজেলায় বিয়ের দাবি নিয়ে প্রেমিকাকে আসতে দেখেই বাড়ি ছেড়ে নিরুদ্দেশ হয়েছে প্রেমিক আকাশ। এদিকে প্রেমিকা ময়না খাতুন আত্মহত্যা করে পুরো পরিবারকে ফাঁসিয়ে দিতে পারে এই ভয়ে আকাশের বাবা জহুরুল ইসলাম রাত জেগে পাহারা দিয়েছেন ছেলের প্রেমিকাকে।
ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার ছাতিয়ান হাওড়াপাড়া এলাকায়।
গতকাল বুধবার (৩ মার্চ) দিবাগত রাত সাড়ে ১২টা থেকে রাতভর বাড়ির সামনে একটি গাছের নিচে ময়নাকে পাহারা দিয়েছেন জহুরুল ইসলাম।
বিয়ের দাবি নিয়ে বাওট গ্রামের দিনমজুর আব্দুল বারির মেয়ে স্থানীয় মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির ছাত্রী ময়না গত মঙ্গলবার সকালে তার প্রেমিক পার্শ্ববর্তী ছাতিয়ান গ্রামের হাওড়াপাড়া এলাকার আকাশের বাড়িতে এসে ওঠে।
ময়না খাতুন বলে, আমার সঙ্গে আকাশের প্রেমের সম্পর্ক এক বছর। সে মোবাইল ফোনে সব সময় আমার আপু, মা-বাবা সবার সঙ্গে কথা বলে। আজ থেকে ১০ দিন আগে আমাদের বাড়িতে গিয়ে আমার সঙ্গে শারীরিক সম্পর্কে লিপ্ত ছিল। এসময় পাড়ার লোকজন আমাদের ধরে ফেলে। গ্রামবাসী এবং আমাদের উভয়ের পরিবারকে বিয়ের সম্মতি দিয়ে আকাশ চলে আসে। এরপর থেকে আকাশ তার ফোন বন্ধ রেখেছে। তাই আমি চলে এসেছি তার বাড়িতে। আকাশের সঙ্গে আমার বিয়ে না হলে আত্মহত্যা ছাড়া আমার কোনো উপায় থাকবে না।
প্রেমিক আকাশের বাবা জহুরুল ইসলাম বলেন, মেয়েকে আমার বাড়িতে আসতে দেখেই সে (আকাশ) পালিয়ে গেছে। আজ দুই দিন তার কোনো খোঁজ নেই। ছেলেকে হাতের কাছে পেলে এই মেয়েকেই তার হাতে তুলে দিয়ে আমি বাঁচতাম। তার পলাতক ছেলেকে খুঁজতে মেয়ের বাবা এবং উপস্থিত সাংবাদিকদেরও অনুরোধ জানান তিনি।
স্থানীয় মাতব্বর শহিদুল ইসলাম বলেন, ময়না ও আকাশকে অনৈতিক কাজ করা অবস্থায় ধরে ফেলেছিল প্রতিবেশীরা। আমরা উভয়ের পরিবারের কর্তা ব্যক্তিদের নিয়ে এক জায়গায় বসে সমাধানের চেষ্টা করেছি। কিন্তু সেটাতে ব্যর্থ হয়েছি। আমরা দুজনের অভিভাবকদের কাছে তাদের তুলে দিই।
ছাতিয়ান গ্রামের আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মতিয়ার রহমান জানান, দুই দিন ধরে মেয়েটি ছেলের বাড়িতে অনশন করছে। এসব ঘটনার কারণে আজ সামাজিক অবক্ষয় চরম পর্যায়ে পৌঁছেছে। বিষয়টি নিয়ে রাত পোহালেই বসা হবে বলে জানান তিনি।
গাংনী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বজলুর রহমান জানান, বিষয়টি নিয়ে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিকে বলে সুরাহা করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তারপরও সমাধান না হলে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।