কুড়িগ্রাম সদর উপজেলায় পাঁচ বছরের এক শিশুকে ধর্ষণের অভিযোগে রাজু মিয়া (১৮) নামে একজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। শুক্রবার (১৬ অক্টোবর) অভিযান চালিয়ে অভিযুক্ত রাজু মিয়াকে গ্রেপ্তার করে দুপুরে আদালতে পাঠানো হয়। নির্যাতিত শিশুটি কুড়িগ্রাম জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে।
মামলার তদন্তকারী অফিসার এস আই কাইয়ুম ও এজাহার সূত্রে জানা যায়, গত ১২ অক্টোবর ঘোগাদহ ইউনিয়নের কাচিরচর গ্রামের আবুল হোসেনের ছেলে রাজু মিয়া প্রতিবেশী মুকুলের ৫ বছরের শিশু কন্যাকে ডাব খাওয়ানোর কথা বলে বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে মেয়েটিকে নিয়ে যায়। পরে শৌচাগারে নিয়ে গিয়ে ধর্ষণের চেষ্টা চালায়।
এসময় মেয়েটির আর্ত চিৎকারে প্রতিবেশী সহিদুলের স্ত্রী মলিনা, ছালামের স্ত্রী বেবীনা ও বারেকের স্ত্রী রাশেদা এগিয়ে আসলে রাজু মিয়া দৌঁড়ে পালিয়ে যায়। এ ঘটনার পর শিশুটিকে চিকিৎসার জন্য কুড়িগ্রাম জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। রাতেই শিশুটির বাবা মুকুল হোসেন বাদি হয়ে রাজু মিয়াকে অভিযুক্ত করে কুড়িগ্রাম সদর থানায় ২০০০ সালের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা দায়ের করেন।
শিশুটির বাবা মুকুল হোসেন জানান, এ ঘটনার পর ধর্ষক রাজু মিয়ার পক্ষে কুড়িগ্রাম জেনারেল হাসপাতাল চত্বরে মিমাংসার জন্য চাপ দেয় অভিযুক্ত রাজু মিয়ার পক্ষে একই এলাকার কুরিয়ার বাজারের গালামাল ব্যবসায়ী সিরাজুল ও তার পরিচিত আলু ব্যবসায়ী হাবিবুর। তারা প্রথমে ৮০ হাজার ও পরে ১ লাখ টাকা দিয়ে মামলা না করার পরামর্শ দেয়।
এদিকে মুকুলের পরিবার থেকে তার চাচা সাবেক মেম্বার তমাল হোসেন ও তার আপন ভাইয়েরা প্রথমে ৫ লাখ ও পরে ৩ লাখ টাকা চান। বিষয়টি সাংবাদিকদের নজরে আসলে পুলিশ তৎপর হয়ে দুদিন অভিযান চালিয়েও রাজু মিয়াকে ধরতে ব্যর্থ হয়।
পরে চারদিকে খোঁজ-খবর করে শুক্রবার কুড়িগ্রাম সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (তদন্ত) আনোয়ারুল ইসলাম ও মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই কাইয়ুম পুলিশ ফোর্স নিয়ে কাচিরচর কামারপাড়া গ্রামে তার মামার বাড়ি থেকে অভিযুক্ত রাজু মিয়াকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়।
শিশুটির স্বাস্থ্যগত ব্যাপারে কুড়িগ্রাম জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিক্যাল অফিসার ডা. রেদওয়ান ফেরদৌস সজীব জানান, শিশুটির মেডিক্যাল চেকআপ করা হয়েছে। পাশাপাশি তার চিকিৎসা চলছে। বর্তমানে তার অবস্থা স্থিতিশীল রয়েছে।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে কুড়িগ্রাম সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (তদন্ত) আনোয়ারুল ইসলাম জানান, ঘটনা জানান পর থেকেই পুলিশ তৎপর ভূমিকা পালন করে। বারবার অবস্থান পরিবর্তন করায় অভিযুক্ত আসামিকে ধরতে বিলম্ব হয়।
পরে শুক্রবার গোপন সংবাদের ভিত্তিতে আসামি রাজু মিয়াকে গ্রেপ্তার করে দুপুরে বিজ্ঞ চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে সোপর্দ করা হয়।