বরিশালে গণধর্ষণের পর ২০ হাজার টাকায় সালিশ, নববধূর আত্মহত্যা চেষ্টা

এক নববধূকে (১৭) বরিশালের মেহেন্দিগঞ্জ উপজেলার কাজিরহাট থানার আন্দারমানিক এলাকায় তিন বন্ধু পালক্রমে ধর্ষণ করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে। গত রবিবার রাতে এ ঘটনায় স্থানীয় এক ইউপি সদস্য গণধর্ষণের শাস্তি স্বরূপ ২০ হাজার টাকা জরিমানা করে ঘটনাটি ধামাচাপা দেয়ার চেষ্টা করে। এতে লোক লজ্জায় আর ক্ষোভে-দুঃখে গতকাল সোমবার সকালে আত্মহত্যার চেষ্টা চালায় ওই নববধূ।

তাকে পার্শ্ববর্তী হিজলা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। স্থানীয়রা জানায়, তিন মাস আগে ওই কিশোরীর বিয়ে হয়। তবে সে আন্ধারমানিক গ্রামে তার বাবার বাসায় অবস্থান করছিলেন। কিশোরীর ভগ্নিপতি আবু বক্কর জানান, গত রবিবার রাত ১টার দিকে প্রতিবেশী দুলাল বেপারীর ছেলে বাবু বেপারী তার শ্যালিকাকে ডেকে নেয়। পরে একটি ঘরে আটকে বাবু এবং তার দুই বন্ধু রাজিব ও নাজমুল ওই নববধূকে পালাক্রমে ধর্ষণ করে।

ওই রাতেই স্থানীয় ২ নম্বর ওয়ার্ডের মেম্বার পরান ভূঁইয়া মীমাংসার নামে ২০ হাজার টাকায় ঘটনাটি ধামা চাপা দেয়ার চেষ্টা করেন। কিন্তু নববধূর পরিবার সমঝোতা নাকচ করে চলে যায়। তবে এ অভিযোগ অস্বীকার করেছেন ওই ইউপি সদস্য। গতকাল সোমবার সকালে বিষয়টি এলাকায় জানাজানি হলে ওই তরুণী নববধূ বিষপানে আত্মহত্যার চেষ্টা চালায়। স্বজনরা অসুস্থাবস্থায় তাকে উদ্ধার করে পার্শ্ববর্তী হিজলা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে। খবর পেয়ে কাজিরহাট থানা পুলিশের দুটি দল ঘটনাস্থল এবং হিজলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স পরিদর্শন করেন।

কাজিরহাট থানার ওসি সাজ্জাদ হোসেন জানান, স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন কিশোরী সজ্ঞাহীন। এ কারণে তার জবানবন্দি নেয়া যায়নি। তবে জ্ঞান ফিরলে তার কাছ থেকে তথ্য নিয়ে অভিযুক্তদের শনাক্ত করে গ্রেপ্তার করবে পুলিশ।

জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. নাঈমুল হক জানান, ওই নববধূর সাথে প্রতিবেশী এক যুবকের অবৈধ সম্পর্ক রয়েছে। রবিবার রাতে নববধূ তার কথিত প্রেমিকের সাথে দেখা করতে গেলে স্থানীয় লোকজন তাদের ধরে ফেলে। স্থানীয় ওয়ার্ড মেম্বার ওই ঘটনার শালিস বসিয়েছিলেন। তারপরও এ বিষয়ে অধিকতর তদন্ত করে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার কথা বলেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার।

Scroll to Top