স্ত্রী শাহানাজ বেগম এবং এক বছর বয়সী মেয়ে মোহনাকে হত্যার দায়ে ভোলার দৌলতখান উপজেলার পশ্চিম জয়গনর গ্রামে বেল্লাল হোসেন পাটওয়ারীকে মৃত্যুদণ্ডাদেশ দেয়া হয়েছে। আজ মঙ্গলবার (২৯ সেপ্টেম্বর) ভোলার জেলা ও দায়রা জজ এ বি এম মাহমুদুল হকের আদালতে এ আদেশ প্রদান করা হয়।
মামলার বিবরণ ও স্থানীয়রা জানায়, ২০১৭ সালের ২ জুন রাতে পারিপারিক কলহের জের ধরে স্ত্রী শাহানাজ বেগমকে প্রথমে গলা কেটে হত্যা করে স্বামী বেল্লাল। পরে কম্বল পেচিয়ে তাতে আগুন ধরিয়ে দিয়ে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা বলে চালিয়ে দেয়ার চেষ্টা করা হয়। আগুনে ঘরের আসবাবপত্র না পুড়লেও খাটের উপরের কম্বল কাঁথা পুড়ে ছাই হয়ে যায়।
এ সময় স্ত্রীর পাশে ঘুমিয়ে থাকা ১ বছর বয়সী শিশু সন্তান মোহনাও পুড়ে মারা যায়। এদিকে আগুন ধরিয়ে দিয়ে বেল্লাল হোসেন তার ৭ বছর বয়সী ঘুমন্ত ছেলেকে কোলে নিয়ে বাইরে এসে আগুন আগুন বলে ডাক চিৎকার দিতে থাকে। এক পর্যায়ে সে অজ্ঞান হওয়ার ভান করে। তাৎক্ষণিক স্থানীয়রা দ্রুত তাকে হাসপাতালে ভর্তি করে। আগুনে কেবল চৌকির উপরের কাপড়চোপর ছাড়া আর সব কিছু অক্ষত থাকায় সন্দেহের সৃষ্টি হয়। পরে পুলিশ স্ত্রীকে জবাই করে হত্যার প্রমাণ পায় এবং বেল্লাল হোসেন তা স্বীকার করেন।
স্থানীয়রা আরও জানায়, বেল্লাল হোসেন পাটওয়ারী ঢাকায় চাকরি করার সুবাধে একজনকে বিয়ে করে। তাকে তালাক দিয়ে শাহানাজ বেগমকে বিয়ে করে ভোলার দৌলতখান উপজেলার জয়নগর গ্রামের বাড়িতে রাখেন। এদিকে ঢাকাতে ড্রাইভিং করার সুবাদে আবারো প্রথম স্ত্রীর সাথে সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন বেল্লাল। এ নিয়ে দ্বিতীয় স্ত্রী শাহানাজের সাথে কলহের এক পর্যায়ে হত্যার ঘটনা ঘটে।
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী সৈয়দ আশরাফ হোসেন লাবু জানান, স্বাক্ষী প্রমাণের ভিত্তিতে আজ মঙ্গলবার ভোলা জেলা ও দায়রা জজ এ বি এম মাহমুদুল হক ৩০২ ধারায় বেল্লাল হোসেনকে মৃত্যুদণ্ড এবং ২০১ ধারায় দশ বছরের কারাদণ্ড প্রদান করেন।