শিশু গৃহকর্মীকে নির্যাতনের অভিযোগে শেরপুরের শ্রীবরদী উপজেলায় এক আওয়ামী লীগ নেতার স্ত্রীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। গতকাল শুক্রবার রাতে শহরের খামারিয়াপাড়া এলাকায় ভাড়া বাসা থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়।
আওয়ামী লীগ নেতার নাম আহসান হাবিব শাকিল। তিনি উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক। তার স্ত্রীর নাম রাবেয়া আক্রার ঝুমুর। শাকিল ও তার স্ত্রী শহরের খামারিয়াপাড়া এলাকায় সোনালী ব্যাংকের উপরে ছয় তলায় ভাড়া বাসায় থাকেন।
নির্যাতিত ওই গৃহকর্মীর নাম সাদিয়া উরফে ফেলি (১০)। সে শ্রীবরদী পৌর এলাকার মুন্সিপাড়া মহল্লার কৃষক সাইফুল ইসলামের মেয়ে।
জানা গেছে, ১১ মাস আগে ফেলিকে গৃহকর্মী হিসেবে আনা হয়। কিন্তু চুন থেকে পান খসলেই তাকে নির্যাতন করে শাকিলের স্ত্রী ঝুমুর। গত ১৫ দিন ধরে মেয়েটির উপর নির্যাতন চলে আসছিল। একপর্যায়ে বেশি অসুস্থ হয়ে পড়লে দুইদিন আগে মেয়েটিকে বাবার বাড়িতে পাঠিয়ে দেওয়া হয়।
গতকাল শুক্রবার রাতে ৯৯৯ নম্বরে কল করে অভিযোগ জানায় ভুক্তভোগীর পরিবার। পরে পুলিশ রাত ১২টায় অভিযুক্ত ঝুমুরকে বাড়ি থেকে গ্রেফতার করে। এ ঘটনায় ঝুমুরকে অভিযুক্ত করে শ্রীবরদী থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে।
এদিকে, ভিকটিমকে শুক্রবার রাতেই শেরপুর সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। কিন্তু অবস্থা ভালো না হওয়ায় শনিবার দুপুরে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে তাকে।
নির্যাতিত সাদিয়া জানায়, শুধু নির্যাতন নয়, তাকে খাবার পর্যন্ত দেওয়া হতো না। পশুর মতো নির্যাতন করলেও কেউ ফিরাতো না। বাড়ি যেতে চাইলেই বেদম প্রহার করা হতো। বাবা-মা কারও সাথে দেখা করতে দেওয়া হতো না।
সদর হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক খায়রুল কবির সুমন জানান, মেয়েটির উপর অমানবিক নির্যাতনের চিহ্ন রয়েছে, যা দীর্ঘদিন ধরে করা হচ্ছে। তার পুরো শরীরে নির্যাতনের চিহ্ন রয়েছে। শরীরের স্পর্শকাতর স্থানে অসংখ্য আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। পেটে পানি এসে গেছে।
শেরপুরের এএসপি (সার্কল) আমিনুল ইসলাম জানান, অভিযুক্তকে রিমান্ড চেয়ে আদালতে পাঠানো হয়েছে।মেয়েটিকে রক্ষা করতে পুলিশ সার্বিক প্রচেষ্ঠায় আছে।