খাবারের প্রলোভন দেখিয়ে গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জে এক মানসিক ভারসাম্যহীন নারীকে (২৭) ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে বিষ্ণু চন্দ্র মহন্ত (৩৫) নামে এক স্বর্ণ ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে।
গত ২৬ আগস্ট রাতে উপজেলার শ্রীপুর ইউনিয়নের ধর্মপুর বাজারে এ ঘটনা ঘটে। ঘটনার পর থেকেই আত্মগোপনে আছেন অভিযুক্ত বিষ্ণু চন্দ্র। ধর্ষণে অভিযুক্ত ব্যবসায়ী বিষ্ণু চন্দ্র ধর্মপুর গ্রামের সুধীর চন্দ্র মহন্তের ছেলে।
এদিকে ঘটনার পরদিন রাতেই ধর্ষণের বিচার চেয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছে ধর্মপুর বাজার পরিচালনা কমিটি। কমিটির সাধারণ সম্পাদক টি এম আজহারুল ইসলাম বাদী হয়ে জড়িত স্বর্ণ ব্যবসায়ীকে আসামি করে লিখিত অভিযোগ করেন। এ ঘটনায় নির্যাতিতা ওই নারীকে খুঁজে না পাওয়ায় কোনো ব্যবস্থা নিতে পারেনি পুলিশ।
স্থানীয়দের অভিযোগ, ঘটনার পর থেকেই ওই মানসিক ভারসাম্যহীন নারীকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। বিষয়টি ধামাচাপা দিতেই নির্যাতিতা ভারসাম্যহীন ওই নারীকে অটোভ্যানযোগে অন্যত্র সরিয়েছে অভিযুক্ত ধর্ষক।
অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, দীর্ঘদিন থেকে নাম-পরিচয়বিহীন মানসিক ভারসাম্যহীন ওই নারী ধর্মপুর বাজারের একটি গোডাউন ঘরের বারান্দায় রাত্রীযাপন করে আসছে। সেখানে থাকাকালীন স্বর্ণ ব্যবসায়ী বিষ্ণুর সঙ্গে সখ্য গড়ে ওঠে। এর সুযোগে গত ২৬ আগস্ট রাতে মানসিক ভারসাম্যহীন ওই নারীকে প্রলোভন দেখিয়ে বাজারের ভেতরের একটি নির্জন জায়গায় নিয়ে যায় সে। সুযোগ বুঝে ওই নারীকে পালাক্রমে ধর্ষণ করে। বিষয়টি বাজারের নিরাপত্তা প্রহরী আব্দুল ওয়াহাব সরদার দেখতে পেয়ে তাকে আটকানোর চেষ্টা করেন। পরে সেখান থেকে পালিয়ে যায় অভিযুক্ত ব্যবসায়ী।
স্থানীয়দের অভিযোগ, ঘটনার সঙ্গে জড়িত ওই ব্যবসায়ী আগেও এমন ঘটনা ঘটিয়েছে। বিভিন্ন মাধ্যমে মাতব্বরদের টাকা দিয়ে ঘটনা ধামাচাপা দেয়। আর নাম-পরিচয়হীন একটা অসহায় ভারসাম্যহীন নারীকে খাবারের প্রলোভন দিয়ে ধর্ষণ করেছে। আবার সেটা ধামাচাপা দিতে সেই নারীকে গোপন জায়গায় আটকে রেখেছে। তার এমন জঘন্য অপরাধের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি এলাকাবাসীর।
এ ব্যাপারে ভারসাম্যহীন নারীকে বহনকারী ভ্যানচালক নুরুজ্জামান বলেন, আমার ভ্যানে ওই নারীকে বিষ্ণু ও মঞ্জু ডাক্তার উঠিয়ে দিয়ে লক্ষ্মীপুর বাজারে নামিয়ে দিতে বলে। আমি এত কিছু না জানায় তাকে সেখানে রেখে এসেছি।
ধর্মপুর বাজারের নিরাপত্তা প্রহরী আব্দুল ওয়াহাব সরদার জানান, প্রতিদিনের ন্যায় ঘটনার দিন রাতেও আমি বাজারে ডিউটি করছিলাম। এ সময় রাত ১টার দিকে তারা মিয়ার দোকানের পেছনে টর্চের আলো দিয়ে দেখি বিষ্ণু চন্দ্র পাগলীকে মাটিতে ফেলে ধর্ষণ করছে। আমি ধরার চেষ্টা করলে সে পালিয়ে যায়। পরে বিষয়টি বাজার পরিচালনা কমিটিকে অবগত করি।
ধর্মপুর বাজার পরিচালনা কমিটির সাধারণ সম্পাদক টি এম আজহারুল ইসলাম বলেন, ভারসাম্যহীন ওই নারীকে ধর্ষণের ঘটনার বিচার ও তার সন্ধান চেয়ে আমরা ইউএনও ও থানায় অভিযোগ করেছি। বিষ্ণু চন্দ্র ইতিপূর্বে এ ধরনের ঘটনা ঘটিয়েছে। আমারা তার শাস্তি দাবি করছি।
থানার ওসি আব্দুল্লাহিল জামান বলেন, ভারসাম্যহীন নারীকে ধর্ষণের ঘটনায় একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। সত্যতা যাচাইয়ে ঘটনাস্থলে থানার পরিদর্শক তদন্তকে পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু সেখানে ভিকটিম না পাওয়ায় এখনো কোনো ব্যবস্থা নিতে পারছি না।