দুই দফা জোয়ারের পানিতে বরিশাল বিভাগের ভোলায় বেড়িবাঁধ ভেঙে বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হয়েছে। ফলে জেলার সাত উপজেলায় পুকুর, দিঘি ও খামার চাষিদের ১৪ কোটি টাকার মাছ ভেসে গেছে।
এতে ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন চাষিরা। অনেকেই লাভের আশায় বিভিন্ন এনজিও ও ব্যাংক থেকে লোন নিয়ে মাছের চাষ করেছিলেন। কিন্তু জোয়ারে পানিতে চাষিদের সে স্বপ্ন ভেঙে গেছে। এখন কীভাবে ঋণ পরিশোধ করবেন আর ঘুরে দাঁড়াবেন সেই চিন্তায় দিন কাটছে তাদের।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, চারদিকে নদী বেষ্টিত দ্বীপজেলা ভোলার উপকূলীয় এলাকার একটা অংশ মাছচাষ করে জীবিকা নির্বাহ করেন। প্রতি বছরই মৎস্য আয়ের ওপর চলে তাদের ব্যবসা। যে কারণে দিন দিন অনেকটা জনপ্রিয় হয়ে উঠেছিল মাছচাষ। কিন্তু এবার মাছ চাষে চরম বিপর্যয় নেমে এসেছে। দুই দফায় জোয়ারের পানিতে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে জেলার তিন হাজার ৭৬৫ জন মৎস্য চাষি। পুকুর, দিঘি ও খামারের মাছ ভেসে যাওয়ায় আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে চরম দুর্দশার মধ্যে দিন কাটাচ্ছেন তারা।
মৎস্য বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, ভোলার সাত উপজেলায় ৬ হাজার ৯৫১টি পুকুর, দিঘি ও খামারের ক্ষতি হয়েছে। যা টাকার অংকে ১৪ কোটি ৩৮ লাখ ৪৪ হাজার টাকা।
সাত উপজেলায় ক্ষতিগ্রস্তদের মধ্যে ভোলা সদরে ৫৪১টি পুকুর, দিঘি ও খামারে ক্ষতি হয়েছে ১ কোটি ৩৪ লাখ টাকা; দৌলতখানে ৭০টি পুকুর ও খামারে ক্ষতি ১ কোটি ৭ লাখ টাকা; বোরহানউদ্দিনে ৩২০টি পুকুর, দিঘি ও খামারে ৫১ লাখ টাকা; তজুমদ্দিনে ৯৮০টি পুকুর, দিঘি ও খামারে ৯ কোটি ২৯ লাখ টাকা; লালমোহনে ১৫টি পুকুর, দিঘি ও খামারে ৫ কোটি ৫০ হাজার টাকা; চরফ্যাশনে ৩ হাজার ১২৫টি পুকুর, দিঘি ও খামারে ২ কোটি ২ লাখ ও মনপুরা উপজেলায় ১ হাজার ৯০০টি খামার, দিঘি ও পুকুরের ৯ লাখ ৪২ হাজার টাকার ক্ষয়-ক্ষতি হয়েছে।
মৎস্য চাষিরা জানান, এবার অনেকেই লাভের আশায় বিভিন্ন সমিতি ও ব্র্যাক থেকে ঋণ নিয়ে মাছচাষ করেছিলেন। কিন্তু চাষিদের সেই স্বপ্ন ভাসিয়ে নিয়ে গেছে জোয়ারের পানি। কীভাবে চাষিরা আবার ঘুরে দাঁড়াবেন সেই ভরসা নেই তাদের। এ অবস্থায় সরকারি সহযোগিতার দাবি চাষিদের।
এ ব্যাপারে ভোলা সদর সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা মো. আসাদুজ্জামান বলেন, আমরা ক্ষয়-ক্ষতির তালিকা তৈরি করে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে প্রস্তবনা পাঠানো হয়েছে। কোনো সহায়তা এলে ক্ষতিগ্রস্তদের দেওয়া হবে।