বাক প্রতিবন্ধী রেহানা বেগমের (৬০) দীর্ঘ প্রতিক্ষার পর প্রতিবন্ধী ভাতার ব্যবস্থা হলেও কোনো টাকা না পেয়ে শুধু বইটি এখন তার কাছে আছে। ৯ হাজার টাকার মধ্যে ছোট ছেলের স্ত্রী নিয়েছে ৪ হাজার ও বইয়ের ব্যবস্থা করে দেওয়ার অজুহাত ছাড়াও অফিস ও ব্যাংকে তার (প্রতিবন্ধী) হয়ে কথা বলার জন্য স্থানীয় এক নারী নেত্রী নিয়েছে ৫ হাজার। রইলো বাকি শুন্য। এই অবস্থায় ওই প্রতিবন্ধী নারী এখন দিশেহারা।
টাকা কেড়ে নেওয়া নারী মজিদা বলেন, ‘আমিই তো সব ব্যবস্থা করছি। তাছাড়া তাকে অফিসে লইয়্যা যাওয়া, খাওয়ানো এমনকি তার হয়ে কথা কইছি। এর লাইগ্যা আমার প্রাপ্য ৫ হাজার টেহা নিছিগা। আর তার ছেড়া নিছে ৪ হাজার টেহা।’
স্থানীয় সূত্র জানায়, ওই প্রতিবন্ধী নারী হচ্ছেন ময়মনসিংহের নান্দাইল উপজেলার সিংরুইল ইউনিয়নের পশ্চিম কচুরি গ্রামের মৃত সুবেদ আলীর স্ত্রী। খবর পেয়ে আজ সোমবার সকালে ওই গ্রামে গিয়ে দেখা যায় জরাজীর্ণ এক কুঁড়ে ঘরে বাস করেন রেহানা বেগম। দুই ছেলের মধ্যে এক ছেলে ঢাকায় গাড়ি চালান ও ছোট ছেলে পাশের আরেক গ্রামে শ্বশুর বাড়িতে থাকেন। চলতি অর্থ বছরে ওই নারীর নামে প্রতিবন্ধী ভাতার ব্যবস্থা হয়। এ অবস্থায় ঈদের আগে স্থানীয় তারের ঘাট সোনালী ব্যাংক শাখা থেকে তাকে ৯ হাজার টাকা দেওয়া হয়।
ঈদের বেড়াতে আসা বড় ছেলের স্ত্রী তাসলিমা জানান, তিনি জানতে পেরেছেন তার শাশুড়িকে ব্যাংকে নিয়ে যান পাশের গ্রামের আব্দুল লতিফের স্ত্রী মজিদা খাতুন। সাথে ছিলেন তার দেবর বোরহান উদ্দিন। ব্যাংক থেকে ৯ হাজার টাকা তার শাশুড়ির হাতে তুলে দিলেও মজিদা নেন ৫ হাজার ও ছেলে নেন ৪ হাজার টাকা। পরে বইটি হাতে ধরিয়ে দিয়ে একটি ইজিবাইক করে বাড়িতে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। এরপর থেকে হাউ-মাউ করে শুধু কাঁদতে থাকেন। কাউকে কিছু বুঝিয়ে না বলতে পেরে শুধু বুক থাপ্পরে কাঁদেন।
এর সত্যতা পাওয়া গেছে তার বাড়িতে গিয়ে। জানতে চাইলে এক ধরনের ক্ষিপ্ততায় ভাতা বঞ্চিত নারী রেহানা শুধু চেঁচামেচিই করেন। এ থেকে বোঝা যায় তার প্রাপ্য টাকা কেড়ে নেওয়া হয়েছে। এ ঘটনায় তিনি বিচার চান।
বিষয়টি জানতে মজিদার বাড়িতে গেলে তিনি টাকার নেওয়ার কথা স্বীকার করে বলেন, ‘অফিসের স্যাররারে দিয়া এই কার্ডের ব্যবস্থা করছি। তারার খরচ ছাড়াও আমার অনেক পরিশ্রম, সময় ব্যয় ও টাকা খরচ হইছে। এ বিষয়ে জানতে চাইলে অন্যান্য সময়ের মতো উপজেলা সমাজ সেবা কর্মকর্তা ইনসান আলী বলেন, ঘটনা তদন্ত করে দেখা হবে।