নেত্রকোনার মদন উপজেলার উচিতপুর হাওড়ে ট্রলার ডুবিতে যে ১৭ জন নিহত হয়েছেন তারা সবাই ময়মনসিংহ সদর ও গৌরীপুর উপজেলার। নিহতদের ১৫ জনই ময়মনসিংহ সদর উপজেলার চরসিরতা ইউনিয়নের ভবানীপুর কোনাপাড়া, খরিচা ও গোবিন্দপুর গ্রামের বাসিন্দা। রাকিব নামে নিখোঁজ একজনের বাড়িও কোনাপাড়া গ্রামে।
এ ঘটনায় ওই গ্রামে নিহতদের স্বজন ও গ্রামবাসীর মাঝে চলছে শোকের মাতম। স্বজনদের আহাজারিতে ভারী হয়ে উঠেছে ওইসব এলাকা। এখন শুধু অপেক্ষা মরদেহের।
এদিকে ট্রলার ডুবিতে ‘মাদরাসায়ে মারকাযুস সুন্নাহ’র মুহতামিম হাফেজ মাওলানা মাহফুজুর রহমান, তার দুই ছেলে, দুই ভাতিজা ও দুই ভাতিজিসহ একই পরিবারের সাত জনের প্রাণ গেছে। এছাড়া মুক্তিযোদ্ধা বাসির উদ্দিনের ছেলে ও নাতিও মারা গেছে।
নিহতরা হলেন, ‘মাদরাসায়ে মারকাজুস সুন্নাহ’র মুহতামিম মাওলানা মাহফুজুর রহমান (৪৫), তার ছেলে হাফেজ মাহবুবুর রহমান আসিফ (১৫) ও মাহমুদুর রহমান (১২), ভাতিজা কোনাপাড়া গ্রামের ফজর আলীর ছেলে জোবায়ের (২২) ও মুজাহিদ মিয়া (১৭), ভাগিনা একই গ্রামের হেলাল উদ্দিনের ছেলে রেজাউল করিম (১৬) ও মোবাইল ব্যবসায়ী জাহিদ (২০), চরখরিচা গ্রামের কৃষক ইসা মিয়া (৪০) ও তার ছেলে শামীম (১০), কোনাপাড়া গ্রামের বাছির উদ্দিনের ছেলে মাদরাসা শিক্ষক আজাহারুল ইসলাম (৩৮), ইদ্রিস আলীর ছেলে মাদরাসা শিক্ষক হামিদুল (৩৫), আব্দুর রশিদের ছেলে মাদরাসা শিক্ষক সাইফুল ইসলাম রতন (৩০), লক্ষীপুর গ্রামের মাদরাসা শিক্ষক জহিরুল ইসলাম (৩৫), কোনাপাড়া গ্রামের শফিকুল ইসলামের ছেলে মাদরাসা শিক্ষক রাকিব (২০) ও চরগোবিন্দপুরের তালেব মেম্বারের ছেলে শহিদুল (৪০) এবং গৌরীপুর উপজেলার ধোপাজাঙ্গালিয়া গ্রামের আবুল কালামের ছেলে শফিকুর রহমান (৪০) ও তার ছেলে সামাআন (১০) রয়েছে।
জানা যায়, কোনাপাড়া গ্রামের ‘মাদরাসায়ে মারকাযুস সুন্নাহ’র মুহতামিম হাফেজ মাওলানা মাহফুজুর রহমানের নেতৃত্বে মাদ্রাসা শিক্ষকদের একটি সমিতির মাধ্যমে ১৯ জন শিক্ষক ও দুই জন শিক্ষার্থীসহ তাদের পরিবারের ৪৮ জন ছিল।
চরসিরতা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আবু সাঈদ জানান, খবর পেয়ে ঘটনাস্থল পৌঁছে লাশগুলো গ্রহণ করেন এবং রাতেই মরদেহগুলো পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে বলে জানান।