ঝিনাইদহে একটি খামারে ৪০ মন ওজনের গরুর দেখা মিলেছে। যার নাম দেওয়া হয়েছে যুবরাজ। প্রতিদিন গরুটি দেখতে সদর উপজেলার দুর্গাপুর গ্রামে ভিড় করছে উৎসুক জনতা। তার সঙ্গে সেলফি ওঠানোরও হিড়িক চলছে। অনেকে ছবি ফেসবুকে পোস্ট করছেন। দুর্গাপুরের এই যুবরাজ হচ্ছে শাহ আলম মিয়ার একটি ফ্রিজিয়ান জাতের ষাঁড়। এরইমধ্যে পাইকাররা যুবরাজের দাম হেঁকেছেন ১৮ লাখ টাকা। তবে শাহ আলম বলছেন, যুবরাজকে ২৫ লাখ টাকায় বিক্রির ইচ্ছে আছে তার।
ঝিনাইদহ সদর উপজেলার দুর্গাপুর গ্রামের বাসিন্দা মো. শাহ আলম মিয়ার পৈত্রিক বাড়ি মাদারীপুর জেলার শিবচর উপজেলায়। প্রায় সাত বছর আগে এক বন্ধুর হাত ধরে এই গ্রামে চলে আসেন। বর্তমানে এখানে স্থায়ীভাবে বসবাস করেন। স্কুল ও কলেজ জীবন শিবচরে কেটেছে তার। পরে জীবিকার সন্ধানে বিদেশে যান। পাঁচ বছর সিঙ্গাপুরে থাকার পর দেশে ফিরে আসেন। এরপর নিজের ব্যবসা শুরু করেন। ব্যবসার প্রয়োজনে বেশ কয়েকবার বিদেশেও যেতে হয় তাকে। পরে ঝিনাইদহে এসে তিনি গড়ে তোলেন আব্দুল্লাহ অ্যাগ্রো অ্যান্ড ডেইরি ফার্ম। প্রায় ৩৮ লাখ টাকা ব্যয় করে বাড়ি এবং বাড়ির সঙ্গে এই ফার্ম গড়েছেন তিনি। তিন বছর হলো এই খামারে গরু লালন-পালন করছেন। এই ফার্মের আয়ের এখন সংসার চলছে শাহ আলম মিয়ার।
তিনি আরও জানান, বর্তমানে তার খামারে ৭টি গরু আছে। সবগুলো গরুর আলাদা আলাদা নাম আছে। তিনি সবাইকে নাম ধরেই ডাকেন। আসন্ন ঈদুল আযহায় তিনি যে তিনটি গরু বিক্রি করতে চান সেগুলোর নাম যুবরাজ, রবি ও সাহেব। বাকি চারটা আগামী বছর বিক্রি করার পরিকল্পনা আছে
শাহ আলম জানান, তিন বছর আগে তিনি এই খামার করেছেন। যুবরাজকে তিনি খামার শুরুর সময় মাত্র ৬ মাস বয়সে নিয়েছিলেন। এখন তার বয়স ৩ বছর ৬ মাস। এই সময়ে পরিমিত খাবার আর যত্নে এই পর্যায়ে নিয়ে এসেছেন। তিনি বলেন, যুবরাজকে খরিদ করতে ইতিমধ্যে পাইকাররা আসছেন। তারা ১৮ লাখ টাকা পর্যন্ত মূল্য দিয়েছেন। তিনি আরেকটু অপেক্ষা করছেন। প্রয়োজনে হাটে উঠাবেন এবং ২৫ লাখ টাকা দাম চাইবেন। এ ক্ষেত্রে কিছু কম হলেও বিক্রি দেবেন। তিনি বলেন, যুবরাজের পেছনে এখন পর্যন্ত তার ৯ থেকে ১০ লাখ টাকা ব্যয় হয়েছে। প্রতিদিন যুবরাজের খাবারের জন্য খরচ হচ্ছে প্রায় ২ হাজার টাকা।
ওই গ্রামের বাসিন্দা হাফিজুর রহমান জানান, শাহ আলম মিয়া গরুর সঙ্গে কথা বলে। সে নাম ধরে ডাক দিলেই গরু বুঝতে পারে। মালিক যে নির্দেশ দেন সেটাই সে পালন করে। তিনি বলেন, এই যুবরাজ তাদের গ্রামটি অনেক এলাকার মানুষের কাছে পরিচয় করিয়ে দিচ্ছে। দূর-দূরান্ত থেকে লোকজন আসছেন যুবরাজকে দেখতে।
ঝিনাইদহ শহর থেকে আসা দর্শনার্থী শাহিনুর রহমান টিটো জানান, তাদের এলাকার অনেকে যুবরাজকে দেখে গিয়ে গল্প করছিলেন। এই গল্প শুনে তিনিও এসেছেন। তিনি বলেন, গরুটি দেখে গরু মনে হয়নি, মনে হয়েছে এটি একটি হাতি। তিনি তার জীবনে এমন গরু কখনও দেখেননি।
এ বিষয়ে জেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা ডাঃ হাফিজুর রহমান জানান, তারা গরুটির ওজন আনুমানিক ৪০ মন বলে ধারনা করছেন। ঈদ আসতে এখনও কিছুদিন বাকি আছে। এরই মধ্যে আরো কিছু ওজন বাড়বে বলে মনে করছেন।
লেটেস্টবিডিনিউজ/কেএস