গাছের ডাল ভেঙ্গে পড়ে মারাত্মত আহত হন নীলফামারীর রিকশাচালক জামিলুর। কোমরে আঘাত পাওয়ায় প্যাডেল চেপে আর রিকশা চালাতে পারছেন না। রিকশার চাকা থেমে যাওয়ার পাশাপাশি বৃদ্ধ মা, স্ত্রী ও চার সন্তানের সংসারের চাকাও বন্ধ হয়ে যায় তার। কোনো কূলকিনারা পাচ্ছিলেন না জামিলুর।
শুক্রবার অসহায় জামিলুর ও তার পরিবারের পাশে দাঁড়িয়েছেন ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানী। তিনি জামিলুরকে একটি ব্যাটারিচালিত রিকশা উপহার দিলেন। এতে আর প্যাডেল চাপা লাগবে না তার।
ছাত্রলীগ সম্পাদকের এ সহযোগিতা পেয়ে খুশিতে আত্মহারা জামিলুর তাকে জড়িয়ে ধরে কেঁদে ফেলেন। এ সময় খুশিতে তাকে রিকশা করে কিছুক্ষণ ঘুরে বেড়ান। তিনি বলেন, ‘এই রিকশা আমার ও আমার পরিবারের অবলম্বন। রিকশা চালিয়ে সংসার চালাতাম। কিন্তু গাছ ভেঙ্গে পড়ায় কোমরে ব্যথা পেয়ে এখন আর প্যাডেল চাপতে পারি না। জীবনটা থেমে গিয়েছিল। এখন সে জীবন সচল করলেন ছাত্রলীগের গোলাম রাব্বানী।
সে সময় মানুষের মুখে হাসি ফুটাতে পেরে ছাত্রলীগ সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানীও আনন্দে রিকশা চালিয়ে দেখেন। তিনি বলেন, ‘মোহাম্মদ জামিলুর ভাই, উত্তরবঙ্গের নীলফামারী জেলার কিশোরগঞ্জ উপজেলার মাগুরা ইউনিয়নের বানিয়া পাড়া গ্রামের বাসিন্দা। হত-দরিদ্র মানুষটা রিকশা চালিয়ে টেনেছেন পুরো সংসার। বৃদ্ধা মা স্ত্রী আর চার ছেলেমেয়ের মাঝারি পরিবার। দুই ছেলে বড়, স্বচ্ছল হয়েও বাবার খোঁজ নেয় না। লাখ টাকার উপর ঋণ করে দুই মেয়ের বিয়ে দিয়েছেন। ভাড়ার রিকশা চালিয়ে কোনো রকমে চলে যাচ্ছিলো দিন। কিন্তু কিছুদিন পূর্বে গাছের ডাল ভেঙে কোমরে মারাত্মক আঘাত পান, এরপর থেকে আর প্যাডেল চালিত রিকশ চালানোতে জোর পান না, একদিন কষ্টে চালালে ৪-৫ দিন অসুস্থ শুয়ে-বসে থাকতে হয়।’
তিনি বলেন, ‘নিতান্ত অসহায় এই মানুষটির পাশে দাঁড়িয়েছে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ পরিবার। আজ ছাত্রলীগের পক্ষ থেকে একটি জামিলুর ভাইকে একটি ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা উপহার দেয়া হয়েছে। আশা করি, ছাত্রলীগের এই ক্ষুদ্র প্রচেষ্টায় তার অসহায়ত্ব ক্ষানিকটা হলেও লাঘব হবে। মানুষ মানুষের জন্য, জীবন জীবনের জন্য।’
এর আগে কৃষকের ধান কেটে দেয়াসহ নানা মানবিক কাজে সাড়া দেয়ায় ‘মানবিক ছাত্রনেতা’ হিসেবে বেশ সুনাম অর্জন করেছেন ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানী। মানবতার ডাকে তাৎক্ষণিক সাড়া দেয়ায় তাকে অনেকে ‘মানবতার ফেরিওয়ালা’ও বলেন।
লেটেস্টবিডিনিউজ/এনপিবি