শ্যালিকার সঙ্গে প্রেম করতে পার্কে গিয়েছিলেন কাঠ ব্যবসায়ী মোহাম্মদ শেখ (৩০)। এক পর্যায়ে নড়াইলের রামপুর-কচুবাড়িয়াস্থ স্বপ্নবিথী পার্কের শৌচাগারে গিয়ে আপত্তিকর কাজে লিপ্ত হন দুজন। বিষয়টি টের পেয়ে দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মীরা তাদের ধরতে গেলে দৌঁড় দেন মোহাম্মদ। পালিয়ে বাঁচতে গিয়েও পারলেন না, হঠ্যৎ মৃত্যু হয় তার।
গত শুক্রবার সন্ধ্যার কিছু সময় আগে ঘটনাটি ঘটে নড়াইলের লোহাগড়া উপজেলায়। এ ঘটনায় মোহাম্মদ শেখের শ্যালিকা শলোকাকে (২৫) আটক করেছে পুলিশ।
জানা গেছে, লোহাগড়া উপজেলার শালনগর ইউনিয়নের চরশালনগর গ্রামের বাসিন্দা মোহাম্মদ শেখ দুই সন্তানের বাবা। কয়েক বছর আগে তার বিয়ে হয় লাহুড়িয়া ইউনিয়নের ডহরপাড়া গ্রামের আলম ফকিরের বড় মেয়ে শারমিনের সঙ্গে। কিন্তু কয়েক মাস আগে থেকে শ্যালিকা শলোকার সঙ্গে মোহাম্মদের প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে।
গত শুক্রবার মোহাম্মদ তার প্রেমিকাকে নিয়ে রামপুর-কচুবাড়িয়াস্থ স্বপ্নবিথী পার্কে যান। কিছুক্ষণ পার্কে অবস্থান করার পর দুজনে সেখানকার শৌচাগারে গিয়ে যৌন সম্পর্ক স্থাপনের চেষ্টা করেন। কিন্তু পার্কের কর্মীরা তা দেখে ফেলে। পরে তাদের ধরতে আসলে মোহাম্মাদ দৌঁড়ে পালান।
পার্কের তারকাটা পেরিয়ে আরও তিন কিলোমিটার দূরে লোহাগড়া বাজারে ঢুকে পড়েন মোহাম্মদ। কিন্তু হঠাৎ মাটিতে পড়ে যান তিনি। স্থানীয় লোকজন তাকে দ্রুত হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। খবর পেয়ে পুলিশ লোহাগড়া হাসপাতালে এসে লাশ হেফাজতে নেয়।
পরে তার মোবাইল নম্বরের ডায়াললিস্টে থাকা নাম্বারে কল দিলে হাসপাতালে আসেন মোহাম্মদের শ্যালিকা বা প্রেমিকা শলোকা। পুলিশ তাকে জেরা করলে স্বপ্নবিথী পার্কে যাওয়া কথা স্বীকার করেন তিনি।
পরে মোহাম্মদের বাড়ি গিয়ে কথা হলে তার স্ত্রীর শারমিন জানান, বাড়ি তৈরির জন্য রড-সিমেন্ট কিনতে সকালে ৫ লাখ টাকা নিয়ে বের হয়েছিলেন মোহাম্মদ। অথচ তার মৃত্যুর পর পকেট থেকে পাওয়া গেছে তিন লাখ টাকা। তিনি দাবি করে বলেন, মোহাম্মদের পুরুষাঙ্গসহ প্যান্টে রক্তের দাগ রয়েছে। তাদের ধারণা মোহাম্মদের পুরুষাঙ্গে আঘাত করা হয়েছে। সে কারণে তার মৃত্যু হয়েছে।
স্বপ্নবিথী পার্কের মালিকের আত্মীয় সাখায়াত বিশ্বাস জানান, পার্কে আপত্তিকর অবস্থায় দেখতে পেয়ে গার্ডেরা তাদের ধরতে যায়। এ সময় এক ব্যক্তি দৌঁড়ে পালান। তাকে ধরা সম্ভব হয়নি।
লোহাগড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) প্রবীর কুমার বিশ্বাস জানান, বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট ছাড়া মৃত্যুর কারণ বলা যাচ্ছে না। ঘটনার সঙ্গে সম্পৃক্ততার অভিযোগে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য প্রেমিকা শলোকা ও পার্কের এক স্টাফকে থানায় রাখা হয়েছে।