গোপালগঞ্জে নার্স-এর ভুল ইনজেকশন পুশ করায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজ বিজ্ঞান বিভাগের তৃতীয় বর্ষের ছাত্রী মরিয়ম সুলতানা মুন্নি (২৩) এখন মৃত্যুপথযাত্রী।
আজ সকালে গোপালগঞ্জ ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের সার্জারি ওয়ার্ডে এ ঘটনা ঘটে। পরে মারাত্মক সংকটাপন্ন অবস্থায় ওই ছাত্রীকে খুলনায় শেখ আবু নাসের হাসপাতালে পাঠানো হয়। মরিয়ম সুলতানা মুন্নি গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার চন্দ্রদিঘলিয়া গ্রামের মোশরাফ বিশ্বাসের মেয়ে।
হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, মরিয়ম সুলতানা মুন্নি পিত্তথলি জনিত সমস্যায় ভুগছিলেন। শেখ সায়েরা খাতুন মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সার্জারি বিভাগের প্রধান অধ্যাপক আব্দুল মতিনের তত্ত্বাবধানে একই বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা. তপন মন্ডলের কাছে চিকিৎসা নিচ্ছিলেন মুন্নি। সোমবার রাতে হঠাৎ হাসপাতালে মুন্নির পোস্ট এনেস্থেটিক একটিভিটি সম্পন্ন করা হয়। আজ সকালে তার অপারেশন করার কথা ছিলো। সে অনুযায়ী হাসপাতালের ফিমেল ওয়ার্ডের সিনিয়র স্টাফ নার্স শাহনাজ সকালে রোগীর ফাইল না দেখে গ্যাসট্রাইটিসের ইনজেকশন সারজেলের পরিবর্তে অ্যানেস্থেসিয়ার (অজ্ঞান করার) ইনজেকশন সারভেক ওই রোগীর শরীরে পুশ করেন। এই ইনজেকশন দেয়ার সঙ্গে সঙ্গে জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন মুন্নি। তার অবস্থা দ্রুত অবনতির দিকে চলে যাওয়ায় পরিস্থিতি সামাল দিতে সংশ্লিষ্ট ডাক্তার তাকে খুলনা আবু নাসের হাসপাতালে পাঠিয়ে দেন।
এ ব্যাপারে শেখ সায়েরা খাতুন মেডিকেল কলেজের সহকারী অধ্যাপক ও মুন্নির চিকিৎসক তপন মন্ডল বলেন, নার্স ভুল ইনজেকশন পুশ করার কারণে এ ঘটনা ঘটেছে। ইনজেকশন দেয়ার আগে রোগীর ফাইল দায়িত্বপ্রাপ্ত নার্সের ভালো করে দেখে নেয়ার কথা ছিলো। রোগীর ফাইল ভালো করে না দেখায় এমন ঘটনা ঘটেছে। নার্সের একটু অবহেলায় ঝুঁকিপূর্ণ হলো ওই ছাত্রীর জীবন।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে গোপালগঞ্জ ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের উপ-পরিচালক ডাঃ ফরিদুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, এ ঘটনায় ইতোমধ্যে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। ওই ছাত্রীকে চিকিৎসা দেয়ার ক্ষেত্রে নার্সের অবহেলা বা ত্রুটি পাওয়া গেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তবে নাম প্রকাশ না করার শর্তে শেখ সায়েরা খাতুন মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের এক বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক বলেন, এ ধরনের ভুল চিকিৎসায় মানুষের জীবন সংকটাপন্ন হয়। যদি এই রোগী বেঁচে যায় তবে তার মস্তিষ্ক স্বাভাবিকভাবে কাজ করবে এ কথা বলা যায় না। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত মুন্নিকে বাঁচাতে খুলনা থেকে ঢাকায় নেওয়ার ব্যবস্থা চলছিলো বলে নিশ্চিত করেন তার স্বজনেরা।