‘আমার কেন জানি বাঁচার ইচ্ছাটা মরে গেছে। তাই আমি এই কাজটা করলাম। আমার মৃত্যুর জন্য কাউকে দাই না করা হয়। আম্মু তুমি আমার জন্য একটুও কাঁদবা না। কারণ তুমি তো ভাগ্যকে বিশ্বাস করো। বুঝে নিভে আমার কপালে যেটা ছিল সেটাই হয়েছে। আব্বুর দিকে খেয়াল রেখো। আর হ্যাঁ আমার মৃত্যুর পরে কোনো পুরুষ লোকজনকে দেখাবা না, শুধু আমার ভাই দুইটাকে ছাড়া। আর আমাকে গোসল করাবে তুমি আর আন্টি, এছাড়া অন্য কেউ না। ভালো থেকো সবাই, ইতি তোমাদের অভাগী মেয়ে তাসমিয়া’।
মায়ের কাছে আবেগঘন এক চিঠি লিখে এভাবেই পৃথিবীকে চিরবিদায় জানিয়েছেন ঝালকাঠির রাজাপুর উপজেলার তাসমিয়া নামে এক কলেজছাত্রী।
গেল বুধবার রাতের উপজেলার দক্ষিণ রাজাপুর গ্রামের নিজ বাড়িতে আত্মহত্যা করার পর বৃহস্পতিবার ভোরে তার ঝুলন্ড লাশ দেখতে পায় পরিবারের লোকজন। নিহত তাসমিয়ার বাবার নাম সুলতান তালুকদার, তিনি রাজাপুর সরকারি কলেজের মানবিক বিভাগের এইচএসসি পরীক্ষার্থী ছিলেন।
তাসমিয়া মৃত্যুর আগে লেখা চিরকুটটিতে আরও লিখেন- ‘আমার কাছে নেছারাবাদ মাদরাসায় ৫০০ টাকা পাবে ও এক মহিলা ৪২০টাকা পাবে। সেটা আম্মু জানে। পারলে তোমরা এই টাকাগুলো ওদের দিয়ে দিও। ফোনের কভারের মধ্যে টাকা আছে।’
আত্মহত্যার বিষয়টি টের পেয়ে রাতেই পুলিশে খবর দিলে পুলিশ বৃহস্পতিবার সকালে নিহতের লাশ উদ্ধার করে থানায় নেয়।
পারিবারিক সূত্র জানায়, ২০১৮ সালের ১৯ ডিসেম্বর শুক্তাগড় ইউনিয়নের মো. ফেরদাউসের সঙ্গে তার বিবাহ হয়। তাসমিয়া এ বছর রাজাপুর ডিগ্রি কলেজ থেকে এইচএসসি পরীক্ষা দিয়েছে।
এ ব্যাপারে রাজাপুর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. মাইনুদ্দিন জানান, লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য ঝালকাঠি সদর হাসপাতাল মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে। চিরকুটটিও জব্দ করা হয়েছে।