গফরগাঁও উপজেলার কান্দিপাড়া গ্রামে কলেজছাত্রীকে অস্ত্রের মুখে ধর্ষণ করা হয়েছে। এ ঘটনায় অভিযুক্ত চানু শিংকে (৪৩) রোববার রাতে গ্রেপ্তার করেছে পাগলা থানা পুলিশ।
থানায় দায়ের করা মামলায় ও ধর্ষিতার পরিবার সূত্রে জানা যায়, উপজেলার কান্দিপাড়া আব্দুর রহমান ডিগ্রি কলেজের দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্রীকে গত ৮ ফেব্রুয়ারি রাত সাড়ে ৯টায় দিকে কান্দিপাড়া বাজারে একা পেয়ে প্রতিবেশী চানু শিং তার সহযোগী মোশারফের সহায়তায় পিস্তল দেখিয়ে জিম্মি করে ধর্ষণ করে। এ সময় মোশারফ ধর্ষণের ঘটনা ভিডিও করে।
এর কিছুদিন পর ইন্টারনেটে ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেইসবুকে ওই ভিডিও ছড়িয়ে দেয়ার ভয় দেখিয়ে কলেজছাত্রীকে ময়মনসিংহ শহরের চরপাড়া এলাকার বেসরকারি স্পন্দন হাসপাতালে নিয়ে ফের ধর্ষণ করে চানু শিং। এ ধর্ষণের ঘটনাও ভিডিও করে তার সহযোগী হাসপাতালে মালিক স্বপন ও মোশারফ।
ধর্ষিতা জানায়, স্বপন ও মোশারফ হাসপাতালের একটি রুমে ধর্ষিতাকে আটকে রেখে দরজা বাইরে থেকে লাগিয়ে দেয়। হাসপাতালের মালিক স্বপন ও মোশারফ তাকে ধর্ষণের পরিকল্পনা করে। হাসপাতালের এক নার্সের সহযোগিতায় কলেজছাত্রী হাসপাতাল থেকে পালিয়ে এসে গফরগাঁও শহরের এক আত্মীয়র বাসায় আশ্রয় নেয়। এরপর ধর্ষক চানু শিং বাড়িতে এসে ধর্ষিতার মাকে চাপ প্রয়োগ করে মেয়েকে তাদের হাতে তুলে দিতে। ধর্ষকের কথামতো ধর্ষিতার মা তার মেয়েকে চানু শিংয়ের হাতে তুলে না দেয়ার চানু ও তার লোকজন ধর্ষিতার মা ও ছোট বোনকে মারধোর করে বাসা থেকে বের করে তালা লাগিয়ে দেয়।
এরপর ধর্ষিতার পরিবার গফরগাঁও শহরে এক আত্মীয়র বাসায় আশ্রয় নেয়। অসহায় পরিবারটি এ ঘটনায় উপজেলা সদরের কয়েকজন মানবাধিকারকর্মী ও উপজেলা দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটির সদস্যদের জানালে তাদের পরামর্শে গত রোববার সন্ধ্যায় ধর্ষিতা পাগলা থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেন। মামলা করার পর রোববার রাত ৮টার দিকে পাগলা থানার পুলিশ কান্দিপাড়া বাজার থেকে চানু শিংকে গ্রেপ্তার করে।
ধর্ষিতার মা জানান, চানু শিং তার মেয়েকে একাধিকবার ধর্ষণ করেছে। এ ধর্ষণের ঘটনা প্রকাশ করলে ধর্ষণের ভিডিও ইন্টারনেটে ছেড়ে দেয়াসহ মেরে ফেলা হুমকি দেয়। এলাকাবাসী জানায়, চানু শিং এলাকার চিহ্নিত ইয়াবা ব্যবসায়ী। ইয়াবা কারবারীদের নিয়ে তার একটি বিশাল বাহিনী রয়েছে। সে নিজেকে সবসময় থানার পুলিশের প্রিয় লোক বলে পরিচয় দেয়।। তার ভয়ে এলাকাবাসী মুখ খুলতে সাহস পায় না।
এ ব্যাপারে পাগলা থানার ওসি ফায়েজুর রহমান বলেন, মূল আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ভিকটিমকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মেডিকেল চেকআপ ও ১৬৪ ধারা জবানবন্দী দেয়ার জন্য ময়মনসিংহ আদালতে পাঠানো হয়েছে।