ঠাকুরগাঁওয়ে টিউমারের অপারেশনের মাধ্যমে ১২ বছরের এক শিশুর পেট থেকে তার মায়ের সন্তানের শরীরের অংশ বিশেষ অপসারণ করা হয়েছে।
স্থানীয়রা জানায়, জেলার সদর উপজেলা রহিমানপুর গোয়ালপাড়া গ্রামের বাবুল রায়ের ১২ বছরের মেয়ে বিথিকা রায় স্থানীয় মলানপুকুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের তৃতীয় শ্রেণিতে পড়ে। কয়েকদিন আগে হঠাৎ করেই বিথিকার শারীরিক পরিবর্তন ঘটতে শুরু করে। তার পেট হঠাৎ করেই ফুলতে থাকে। এতে চিন্তিত হয়ে পরে তার পরিবারের লোকজন। সবেই ধারণা করে, বিথিকা হয়তো কারো দ্বারা ধর্ষণের শিকার হয়ে অন্তঃসত্তা হয়ে পড়েছে। সেই ভয় থেকেই ছুটে যান রংপুরের এক চিকিৎসকের কাছে। চিকিৎসক প্রয়োজনীয় পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে জানান, বিথিকার পেটে বড় আকারের একটি টিউমার রয়েছে। সেটি জরুরি ভিত্তিতে অপসারণ করা প্রয়োজন।
তারা আরও জানায়, কিন্তু পেশায় দিনমজুর বাবা বাবুল রায়ের রংপুরে অপারেশন করার সামর্থ্য না থাকায় মেয়েকে নিয়ে ঠাকুরগাঁওয়ে বেসরকারি হাসান এক্স-রে ও ক্লিনিকে ভর্তি করে ডা. নুরুজ্জামান জুয়েলের শরণাপন্ন হন। ডা. জুয়েল ঝুঁকিপূর্ণ অপারেশন হওয়ায় প্রথমে রাজি না হলেও পরে বাবুলের আর্থিক অবস্থা বিবেচনা করে অপারেশনের সিদ্ধান্ত নেন। শুক্রবার রাতে অপারেশন করে বিথির পেট থেকে প্রায় চার কেজি ওজনের টিউমার অপসারণ করা হয়। পরে টিউমারটি কেটে দেখা যায়, সেটির ভেতরে আরেক শিশুর বসবাস। সেখানে শিশুটির শরীরের হাত, কলিজাসহ নানা অংশ বিদ্যমান।
এ ব্যাপারে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিশ্ববিদ্যালয়ের শিশু সার্জারি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা. নুরুজ্জামান জুয়েল জানান, মেডিক্যাল সায়েন্সে এটাকে বলে ‘ ফেটুস ইন ফেটো’ অর্থাৎ বাচ্চার পেটের ভিতরে বাচ্চা। জন্মগত ভাবে বিথিকা জমজ। কিন্তু কোন কারণবশত অন্য শিশুটি পৃথিবীর মুখ দেখতে পায়নি। তাই সেটা বিথিকার জন্মের সময় থেকে তার পেটে থেকে যায়।
তিনি আরও জানান, বর্তমানে বিথিকার শারীরিক অবস্থা ভালো। আশা করা যায় আর কোন ঝুঁকি নেই।