ফেনীর মাদ্রাসাছাত্রী নুসরাত জাহান রাফি হত্যা মামলায় উম্মে সুলতানা পপি ওরফে শম্পাকে গ্রেফতার দেখানো হয়েছে। পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) এতথ্য নিশ্চিত করেছে। কয়েকদিন আগে তাকে আটক করা হলেও সোমবার তাকে গ্রেফতার দেখানো হয়।
ফেনীর পিবিআইর উপ পরিদর্শক ও এই মামলার তদন্ত কর্মকর্তা শাহ আলম এ তথ্য নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন, এই পপিই সেই শম্পা। ডাইং ডিক্লারেশনে নুসরাত যার নাম বলেন। এছাড়া এজাহারভুক্ত আরও এক মেয়েকে গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে বলে জানান তিনি।
নুসরাত মৃত্যুর আগে জবানবন্দিতে শম্পার নাম বলেন। যে চারজন বোরকা পরা নারী-পুরুষ তার শরীরে আগুন ধরিয়ে দেয়, শম্পা তাদের একজন বলে জানান নুসরাত।
ঘটনার পরপরই এজাহারভুক্ত সাতজনকে গ্রেফতার করা হয়। এছাড়া সন্দেহভাজন যে ছয়জনকে আটক করা হয় তার মধ্যে উম্মে সুলতানা পপি ছিল। তবে পপিই যে শম্পা তা নিয়ে ধোঁয়াশা ছিল।
ঘটনার দিন পরীক্ষা শুরুর কিছুক্ষণ আগে পরিকল্পনার অংশ হিসেবে একটি মেয়ে নুসরাতকে জানায়, ছাদে কারা যেন তার বান্ধবীকে মারধর করছে। তখন নুসরাত দৌড়ে ছাদে যান। যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে সেখানে লুকিয়ে থাকা শামীমসহ বোরকা পরা চারজন তাকে ঘিরে ফেলে এবং অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে মামলা তুলে নেবে কিনা জানতে চায়।
এ প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করলে নুসরাতের ওড়না দিয়ে তার হাত-বেঁধে ফেলে হয়। এ সময় বোরকা ও কেরোসিন সরবরাহ করা মেয়েটিও সেখানে ছিল। হাত বেঁধে নুসরাতে শরীরে আগুন লাগিয়ে তারা দ্রুত নিচে নেমে যায়। নামার সময় নুসরাতকে বিভ্রান্ত করতে একজন অপরজনকে শম্পা বলে ডাকে। পিবিআই কর্মকর্তারা তদন্তে জানতে পেরেছেন, এই পপিই সেই শম্পা।
নুসরাত জাহান রাফি সোনাগাজী ইসলামিয়া ফাজিল মাদ্রাসার আলিমের পরীক্ষার্থী ছিলেন। মাদ্রাসার অধ্যক্ষ সিরাজের বিরুদ্ধে যৌন নিপীড়নের অভিযোগ এনেছিলেন তিনি। নুসরাতের মা শিরিন আক্তার বাদী হয়ে ২৭ মার্চ সোনাগাজী থানায় এ ব্যাপারে একটি মামলা দায়ের করেন। এরপর অধ্যক্ষ গ্রেফতার হন। পরে মামলা তুলে নিতে নুসরাতের পরিবারকে হুমকি দেওয়া হচ্ছিল। মামলা না তুলতে চাওয়ায় ৬ এপ্রিল সকাল ৯টার দিকে নুসরাতের গায়ে আগুন দেওয়া হয়।