কিশোরগঞ্জের ঐতিহাসিক পাগলা মসজিদের দানবাক্স থেকে এবার ১ কোটি ৮ লাখ ৯ হাজার ২০০ টাকা পাওয়া গেছে। একই সঙ্গে পাওয়া গেছে স্বর্ণ, রৌপ্য ও বৈদেশিক মুদ্রা।
শনিবার (১৩ এপ্রিল) গণনা শেষে এ টাকার হিসাব পাওয়া যায়। নিয়ম করে প্রতি তিন মাস অন্তর অন্তর পাগলা মসজিদের দানবাক্স খোলা হলেও এবার ৮৩ দিনের মাথায় দানবাক্স খোলা হলো।
শনিবার সকালে কিশোরগঞ্জের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মো. হাবিবুর রহমানের নেতৃত্বে সরকারি কর্মকর্তা, মসজিদ কর্তৃপক্ষ ও ব্যাংকের কর্মকর্তাদের উপস্থিতিতে পাগলা মসজিদের ছয়টি লোহার দানবাক্স খোলা হয়।
এরপর এসব বাক্স থেকে পাওয়া নগদ টাকা বস্তায় ভরে মসজিদের দোতলায় স্তূপ করে শুরু হয় গণনা। মসজিদ কমপ্লেক্সের শতাধিক শিক্ষার্থীসহ শহরের রূপালী ব্যাংকের কর্মকর্তারা গণনা শেষে বিকেল ৫টায় টাকার হিসাব পান।
এর আগে গত ১৯ জানুয়ারি মসজিদের পাঁচটি লোহার দানবাক্স থেকে ১ কোটি ১৩ লাখ ৩৩ হাজার ৩৭৩ টাকা পাওয়া যায়। গত বছর শুধুমাত্র দানবাক্সে পাওয়া টাকার পরিমাণ ছিল ৫ কোটি ৩৫ লাখ ৭৬ হাজার ১৭৭ টাকা।
পাগলা মসজিদ ও ইসলামী কমপ্লেক্সের খরচ চালিয়ে অবশিষ্ট টাকা জমা রাখা হয় শহরের একটি ব্যাংকে। আয় থেকে জেলার বিভিন্ন মসজিদ, মাদরাসা ও এতিমখানায় অনুদান দেওয়া হয়।
শহরের হারুয়া এলাকায় নরসুন্দা নদীর তীরে ঐতিহাসিক পাগলা মসজিদের অবস্থান। এখানে রোগ-শোক বা বিভিন্ন বিপদে মান্নত করলে মনের বাসনা পূর্ণ হয়, এমন বিশ্বাস থেকে এখানে প্রতিনিয়ত দান-খয়রাত করে মানুষ। তিন মাস পর পর খোলা হয় মসজিদের দানবাক্স। প্রতিবারই টাকার পরিমাণ ছাড়িয়ে যায় কোটি টাকা। নানা শ্রেণি-পেশা আর ধর্মের লোকজন এখানে আসেন মান্নত আদায় করতে।
নগদ টাকা ছাড়াও চাল-ডাল-গবাদি পশুসহ বিভিন্ন সামগ্রীও মানুষ দান করে পাগলা মসজিদে। দিন শেষে এসব নিলামে বিক্রি করে জমা করা হয় ব্যাংকে।
কিশোরগঞ্জের জেলা প্রশাসক পদাধিকার বলে পাগলা মসজিদের সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন। মসজিদের আয় থেকে জেলার বিভিন্ন ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে অনুদানসহ বিভিন্ন সেবামূলক খাতে সাহায্য দেওয়া হয়। বিভিন্ন জটিল রোগে আক্রান্ত মানুষকে চিকিৎসার জন্য মসজিদের তহবিল থেকে অর্থ সহায়তা দেওয়া হয়।