দুর্বৃত্তদের দেওয়া আগুনে দগ্ধ নুসরাত জাহান রাফির মৃত্যুশোকে কাতর ছোট ভাই রাশেদুল হাসান রায়হান অসুস্থ হয়ে পড়েছে। গতকাল শুক্রবার রাতে তাকে ফেনীর একটি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
পারিবারিক সূত্র জানায়, দুই ভাই-বোনের অতীত স্মৃতি কোনোভাবেই ভুলতে পারছে না রায়হান। শুধু কাঁদছে। খাওয়া-ধাওয়া করছে না। রাফির জানাজার নামাজের আগে থেকেই সে বার বার জ্ঞান হারিয়েছেন। জ্ঞান ফিরলে আবার রাফিকে খুঁজছে।
রাফির বাবা কে এম মুসা ইউএনবিকে বলেন, নুসরাতের মৃত্যুতে সবচেয়ে বেশি শোকাহত ছোট ভাই রায়হান। রায়হান নুসরাতের থেকে মাত্র দুই বছরের ছোট। দুই ভাই-বোন একসঙ্গে মাদ্রাসায় যাওয়া-আসা করত। সে ওই মাদ্রাসার দশম শ্রেণির ছাত্র। অনেকটা সমবয়সী বলে ভাইবোনের মধ্যে খুনসুঁটি লেগেই থাকত। নৃশংসতার শিকার হয়ে নুসরাতের অকালে চলে যাওয়ায় সেই স্মৃতিই হাতড়িয়ে বেড়াচ্ছেন ছোট ভাই রায়হান।
বুধবার রাত সাড়ে নয়টার দিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান অগ্নিদগ্ধ মাদরাসা ছাত্রী নুসরাত জাহান রাফি। এর আগে ৬ এপ্রিল সকাল ৯টার দিকে আলিম (এইচএসসি) পর্যায়ের আরবি প্রথমপত্র পরীক্ষা দিতে সোনাগাজী ইসলামিয়া ফাজিল মাদরাসা কেন্দ্রে যান ওই ছাত্রী। এরপর কৌশলে তাকে পাশের ভবনের ছাদে ডেকে নেওয়া হয়। ওই সময় বোরকা পরিহিত চার-পাঁচজন নুসরাতের শরীরে কেরোসিন ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেয়। এতে তার শরীরের ৮৫ শতাংশ পুড়ে যায়।
মাদরাসা অধ্যক্ষ সিরাজ উদ-দৌলা ওই ছাত্রীর শ্লীলতাহানি করেন বলে অভিযোগ ওঠে। এই অভিযোগে নুসরাতের মা অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন। সেই মামলা তুলে নিতে অস্বীকার করায় নুসরাতের শরীরে কেরোসিন ঢেলে আগুনে পুড়িয়ে তাকে হত্যা করা হয় বলে দাবি করা হয়।