পহেলা বৈশাখকে সামনে রেখে রমনা পার্ক এলাকায় জোরদার নিরাপত্তা ব্যবস্থা করা হয়েছে। রমজানের কারণে পহেলা বৈশাখের অনুষ্ঠান বেলা ২টা পর্যন্ত চলবে বলে জানিয়েছেন ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার মুহাম্মদ শফিকুল ইসলাম। আজ মঙ্গলবার দুপুরে রমনা পার্কে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান তিনি।
ডিএমপি কমিশনার বলেন, রমজানের কারণে আমরা এবারের অনুষ্ঠানটি দুপুর ২টা পর্যন্ত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। দুপুর ১টার দিকে রমনার সব প্রবেশ গেট বন্ধ করে দেয়া হবে। কেবল বের হওয়ার গেট দিয়ে মানুষ বের হতে পারবে। আমরা ২টার পর পার্ক এলাকায় কাউকে থাকতে দেবো না। তবে রমজানের পর যখন আবার পহেলা বৈশাখ শুরু হবে, তখন বিকাল ৫টা পর্যন্ত করা যাবে।
রমনা পার্ক ও বটমূল এলাকার নিরাপত্তার বিষয়ে তিনি বলেন,পুরো এলাকাটি সিসি ক্যামেরার আওতায় নেয়া হয়েছে। রমনা এলাকায় প্রবেশের বিভিন্ন সড়ক ও গেটে আমাদের তল্লাশি চৌকি, আর্চওয়ে থাকবে, পার্কে ওয়াচ টাওয়ার, বোম্ব ডিসপোজাল টিম, ডুবুরি দল ও ফায়ার সার্ভিস থাকবে। বড় ধরনের ভীড় হলে সেখানে ইভটিজিংয়ের ঘটনা ঘটে, এ জন্য আমাদের সাদা পোশাকের পুলিশ সদস্যরা সাধারণ মানুষের সঙ্গে মিশে থাকবে।
বাড়তি নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেয়ার কারণ জানতে চাইলে ডিএমপি কমিশনার বলেন,২০০১ সালকে মাথায় রেখে এ ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে। সম্প্রতি কিছু বন্ধু রাষ্ট্র জঙ্গিদের ব্যাপারে গুরুত্বপূর্ণ বার্তা দিচ্ছে। উপমহাদেশে ভারত, পাকিস্তান ও বাংলাদেশে জঙ্গি তৎপরতা বৃদ্ধি পাচ্ছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়েও কিছু রেডিক্যালাইজড সংগঠনের তৎপরতা লক্ষ্য করছি। সেকারণেই আমাদের এ বাড়তি নিরাপত্তা বলে জানান তিনি।
তবে কোনো হামলার আশঙ্কা নেই উল্লেখ করে মুহাম্মদ শফিকুল ইসলাম বলেন,হামলার আশঙ্কা আমরা করছি না। যেহেতু নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিচ্ছি, কোনো ঘটনাই উড়িয়ে দিচ্ছি না। প্ল্যান করে একটি ছুরি বা ব্লেড নিয়ে কেউ হামলা করতে পারে, বিষয়টি একেবারে উড়িয়ে দেয়া যায় না।
ভুভুজেলাসহ উচ্চশব্দের কোনও উপকরণ নিয়ে শোভাযাত্রায় অংশগ্রহণ না করার অনুরোধ জানিয়েছেন ডিএমপি কমিশনার। তিনি বলেন, মঙ্গল শোভাযাত্রাটি আমাদের সদস্যদের ব্যারিকেডের মধ্যে থাকবে। সবাইকে তল্লাশি করে মঙ্গল শোভাযাত্রায় ঢোকানো হবে। হঠাৎ করে কেউ বাইরে থেকে মঙ্গল শোভাযাত্রায় প্রবেশ করতে পারবে না। শোভাযাত্রায় মুখোশ পরে আসা যাবে না। উচ্চ শব্দ তৈরি করে এমন বাদ্যযন্ত্র আনা যাবে না। সবাইকে রমনা পার্কে নির্দিষ্ট গেট দিয়ে প্রবেশ ও বের হতে হবে বলেও তিনি উল্লেখ করেন।
তিনি বলেন,বর্ষ বরণে অন্যান্য বছর থেকে এবার একটু ভিন্নতা থাকবে। সেটি হলো- মেলায় পান্তা-ইলিশ ও খাবারের দোকান থাকবে না। অনুষ্ঠানটি সীমিত সময়ের মধ্যে শেষ করার জন্য অনুরোধ করা হয়েছে। দুপুর ২টার মধ্যে অনুষ্ঠান শেষ করতে হবে। যাতে মানুষ এখান থেকে বের হয়ে খুব সহজে বাড়ি ফিরে ইফতার করতে পারে। কারণ অনুষ্ঠানস্থলকে কেন্দ্র করে রাজধানীর বড় একটি অংশের যান চলাচল বন্ধ থাকবে, এতে সাধারণ যাত্রীরা যানজটে পড়ে হয়রানি হবেন। সে জন্য ২টার পর আমরা কোনোভাবেই অনুষ্ঠানের কর্মসূচি অ্যালাউ করবো না।